শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তায় প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা।
ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস একটি জনপরিসর। এর ভেতর দিয়ে সিটি কর্পোরেশনের রাস্তা আছে।
প্রশাসন কেন বার বার ক্যাম্পাসকে আটকে ফেলার চেষ্টায় আছেন, আমি জানি না। এই ক্যাম্পাসের দুই পাশে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটা সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসতে হয় হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে। তাদের যে দুর্ভোগ আপনারা গত দুই দিনে দিয়েছেন, তার বিনিময় মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন??? এই রাস্তা গুলো হচ্ছে পুরোনো আর নতুন ঢাকার যোগাযোগের মাধ্যম, আরো বেশ কতগুলি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় আছে আশেপাশে। সকলের যাতায়াতের অধিকার আপনারা হরণ করেন কোন যুক্তিতে?? পাবলিক বাস বন্ধ করেন, টিএসসি স্টেশনের সামনে উলটো পথে যাওয়া রিক্সা বন্ধ করেন, তাদের শৃংখলায় আনেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিরব থাকার সমালোচনা করে তিনি ওই পোস্টে লেখেন, ‘ও হ্যাঁ, আরেকটা কথা: আজকে যারা এসব তাফালিং এ নেতৃত্ব দিচ্ছেন, বা চুপ করে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিচ্ছেন এমন ভাব ধরে আছেন, সেই বর্তমান প্রশাসনের কাউকে মেট্রো রেল ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে যাবার সময় বা টিএসসিতে স্টেশন করার সময় এসবের বিরুদ্ধে টু শব্দ করতে শুনেছি এমন মনে পড়ছে না।
খুজলে অনেকের ছবি পাওয়া যাবে মেট্রো করে হাসিনার অগ্রযাত্রা সেলিব্রেশনের সেই ৫০০ জনের মধ্যেও! নো মেট্রো আন্দোলনের সময় আমরা যে দুই তিনজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাথে রাস্তায় ছিলাম তাদেরকে যখন হাসিনা সংসদে দাঁড়িয়ে বকা দিলো তখন আমাদের কে সতর্ক করেছিলেন কত জন মনে আছে আমাদের! আপনারাই তখন নিজেদের সুবিধার কথা ভেবেছেন কেবল। এখনো তাই ভাবছেন। নাগরিকদের ক্যাম্পাসে ডেকে আনার ব্যাবস্থা করে তাদের বের হতে না দেয়ার মতো লজিকাল হচ্ছে আয়োজনটা।’
ওই পোস্টে সামিনা লুৎফা আরও লেখেন, ‘আর ২টা কথা: যারা এইসব কর্মকাণ্ডে আছেন, মানে এই ক্যাম্পাসে আজকে যারা তাফালিং করে বেড়াচ্ছেন তারা দুইদিন পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের বেঁধে পিটাতে বা ধরেন, রগ কাটতে শুরু করলে আর কেউ তো আসবে না রাজুতে, বাবারা! এই ক্যাম্পাসকে আলাদা করলে কার লাভ হয় এসব ভাবনা না ভেবে খালি স্বার্থপরের মতো দরজা বন্ধ কইরেন না। অন্য দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তুলনা দিয়েন না।