এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির প্রতিবাদ ও রাজশাহীতে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে বুধবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন।
‘অ্যান্টি শাহবাগ মুভমেন্ট’ নামে একটি সংগঠনের লোকজন এ হামলা করে বলে দাবি করেন গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের। তারা দাবি করেন, সংগঠনটির লোকজন ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মী।
সংঘর্ষের সময় এক নারীকে লাথি (লাঞ্ছিত) মারার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অভিযুক্ত যুবকের পরিচয় জানা গেছে। তার নাম আকাশ চৌধুরী। তার গ্রামের বাড়ি জেলার সাতকানিয়া উপজেলায়। সে ছাত্র শিবিরের কর্মী বলে দাবি করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা।
ছাত্র শিবিরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উক্ত ব্যক্তি ইতোপূর্বে ছাত্র শিবিরের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র শিবিরের কোনও কার্যক্রমের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নেই। এদিকে, মহানগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরীর সঙ্গে ওই যুবকের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সহ-সভাপতি পুষ্পিতা নাথ বৃহস্পতিবার বলেন, ‘প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত কর্মসূচিতে পরিকল্পিতভাবে শিবিরের নেতাকর্মীরা হামলা করেছে। এতে আমাদের ১৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিন জন গুরুতর আহত হন। আহতদের চিকিৎসা শেষে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে।’
নারীকে লাথি মারার ভিডিও সম্পর্কে পুষ্পিতা নাথ বলেন, ‘যে নারীকে লাথি মারা হয়েছে তিনি গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এ্যানি চৌধুরী। যিনি মেরেছেন তিনি ছাত্র শিবিরের কর্মী।’
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখার পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে। ছাত্র শিবির চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখার প্রচার সম্পাদক সিরাজী মানিক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংঘটিত গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট ও শাহবাগ বিরোধী মঞ্চের মধ্যে সংঘর্ষে এক নারী কর্মীর ওপর আক্রমণের ঘটনায় নিন্দা ও ছাত্র শিবিরকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর।
বিবৃতিতে চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি তানজীর হোসেন জুয়েল ও সেক্রেটারি মুমিনুল হক বলেন, ‘চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব এলাকায় গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট এবং শাহবাগবিরোধী মঞ্চের মধ্যে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষের বিষয়ে আমরা গণমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে অবগত হয়েছি। জানা গেছে, সংঘর্ষে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের নারী কর্মীসহ উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সংঘর্ষের ঘটনা গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের জন্য অনভিপ্রেত। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, সংঘটিত ঘটনাটির সঙ্গে ছাত্র শিবিরকে জড়িয়ে একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও দুঃখজনক। একটি ভিডিও ফুটেজে এক নারীর ওপর হামলাকারী ব্যক্তিকে ছাত্রশিবিরকর্মী বলে দাবি করা হচ্ছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিতে চাই, উক্ত হামলার ঘটনায় দৃশ্যমান ব্যক্তি ইতোপূর্বে ছাত্রশিবিরের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র শিবিরের কোনও কার্যক্রমের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নেই। বর্তমানে তিনি ছাত্রশিবিরের কোনও পর্যায়ের নেতা বা কর্মী নন। সুতরাং এমন ব্যক্তির একান্ত নিজস্ব হীন কর্মকাণ্ডের দায় ছাত্র শিবিরের ওপর চাপানো যুক্তিসঙ্গত নয়।’