নড়াইলে এক গৃহবধূ তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সদর উপজেলার বাঁশগ্রামে রুমা আক্তার নামে ঐ গৃহবধুর প্রবাসী স্বামীর পাঠানো টাকা শ্বশুর-দেবরকে দিতে না চাওয়ায় তারা ক্ষুদ্ধ হয়ে রুমাকে আমানুষিক নির্যাতন করে ঘরে আটকে রাখে বলে নির্যাতিতা ও তার স্বজনদের অভিযোগ। 

পরে আশপাশের লোকজনের সহায়তায় গুরুত্বর রুমাকে উদ্ধার করে তার স্বজনরা বৃহস্পতিবার (৪ মে) দুপুরে তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। ভুক্তভোগীও তার স্বজনরা এর বিচার চেয়েছেন। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

নির্যাতনের ফলে সারা শরীরে দুঃসহ যন্ত্রনায় প্রায় অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে শয্যাশায়ী গৃহবধূ রুমা। রুমা ও তার স্বজনরা জানায়, এক সন্তানের জননী রুমার প্রবাসী স্বামী সবুজ শেখ প্রবাস থেকে তার স্ত্রী রুমার নিকট টাকা পাঠালে সবুজের বাবা কুদ্দুস শেখ, ভাই রোমান, বোন ববিতা রুমার নিকট প্রায়ই টাকা দাবি করে। তাদের দাবির মুখে প্রাবসী স্বামীর নিষেধ সত্বেও রুমা শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে বিভিন্ন সময় টাকা দিতে বাধ্য হয়, কিন্তু রুমার শ্বশুর দেবরের লোভের সীমা ছিল না।

বুধবার (৩ মে) তারা আবারও রুমার নিকট টাকা চাইলে নিজের কাছে টাকা না থাকায় রুমা টাকা দিতে অস্বীকার করে। এতেই রুমার উপর শুরু হয় মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন। দেবর, শ্বশুর, ননদ, জাল সবাই একযোগে রুমার উপর চড়াও হয়ে মাটিতে আছড়ে ফেলে তাকে নির্মমভাবে পায়ে পিশতে থাকে। এতে রুমা জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে চিকিৎসা না করিয়ে তাকে ঘরে আটকে রাখা হয়। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার (৪ মে) সকালে আশপাশের মানুষ গিয়ে রুমাকে উদ্ধার করে স্বজনদের কাছে পৌছে দিলে স্বজনরা রুমাকে অর্ধঅচেতন অবস্থায় দুপুরে নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। নির্যাতিতা ও তার স্বজনরা এ নির্মমতার বিচার দাবি করেছেন। 

নড়াইল সদর হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. আনিসুর রহমান সোহাগ বাংলাদেশ বুলেটিনকে জানান, নির্যাতিতাকে অর্ধ অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। রোগীর বিপর্যস্থ শারীরিক ও মানষিক অবস্থার প্রেক্ষিতে তার শরীরে আভ্যন্তরীন যখমের আশঙ্কায় কয়েকটি পরিক্ষার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এ দিকে মৌখিক ভাবে বিষয়টি অবগত হলেও কেউ লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসেনি জানিয়ে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বাংলাদেশ বুলেটিনকে বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাবু/জেএম