চিকিৎসকের অবহেলায় এক প্রসূতি ও তার নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে প্রসূতি নারীর স্বজনরা বিক্ষোভ করেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে।পরে আখাউড়া থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

শুক্রবার (৫ মে) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই ঘটনা ঘটে। নিহত প্রসূতি  উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া এলাকার মৃত আনোয়ার হোসেনের কন্যা ও জেলার কসবা উপজেলার ধর্জয়নগর এলাকার  কুয়েত প্রবাসী শাহীন মিয়ার স্ত্রী শাহিদা আক্তার খুকি( ২৩)ও তার নবজাতক শিশু। তিনি আখাউড়া পৌরশহরে মসজিদ পাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। 

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সকালে প্রসূতির প্রসব ব্যথা হলে নরমাল ডেলিভারির জন্য আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মিডওয়াইফ আমেনা আক্তার সুমনার মাধ্যমে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। নবজাতক জন্মের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় এবং ব্লেডিং বন্ধ না হওয়ায় ও নবজাতকের শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট হওয়ায় কর্তব্যরত মেডিক্যাল অফিসার গোলাম মোস্তাফা উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে রেফার করেন। পরে আত্মীয়-স্বজন প্রসূতি ও নবজাতক শিশুটিকে সদর হাসপাতাল না নিয়ে  জেলার শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। ওই হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসপাতালে ভর্তির পূর্বেই প্রসূতিকে দেখে মৃত্যুবরণ করেছে বলে জানান। পরবর্তীতে নবজাতকসহ প্রসূতিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।

সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান দুপুর একটার দিকে নবজাতক ও প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এদিকে ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিহয়ের আত্মীয়-স্বজন লাশসহ  আখাউড়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মা ও নবজাতকের মৃত্যুর জন্য আখাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে উত্তেজিত হয়। পরে  সংবাদ পেয়ে  আখাউড়া থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. হিমেল খান জানান, প্রসূতি শাহিদা আক্তার খুকির নরমাল ডেলিভারি করেছেন ডা. ফারিয়া সুলতানা ও নার্স হিসেবে ছিলেন সুমনা। তাদের সাথে কথা বলে তিনি জানতে পেরেছেন রোগীর অবস্থা ভালোই ছিলো এবং আমরা স্বাভাবিক ভাবেই নরমাল ডেলিভারি করা হয়। তবে এক পর্যায়ে প্রসূতির রক্তক্ষরণ শুরু হয়। সেটি বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনো অবস্থায় রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে প্রসূতিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।চিকিৎসকের অবহেলায় মারা যায়নি বলে দাবি করে তিনি বলেন তারপরও চিকিৎসকের যদি কোন ভুল থাকে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যপারে কথা হলে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে ওই ঘটনায় এখনো থানায় কোন অভিযোগ করেননি নিহতের স্বজনরা। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাবু/জেএম