নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের ওয়াপদা মোড় থেকে জেলা শহরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচলকে কেন্দ্র করে সড়ক অবরোধ করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (১৬ মে) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে সড়ক অবরোধ করলে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে আন্তঃজেলাসহ দূরপাল্লার সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। ফলে উত্তরের জেলা দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও নীলফামারীর সঙ্গে সড়কপথে দেশের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েন সৈয়দপুর বিমানবন্দরের ফ্লাইটের প্রায় পাঁচ শতাধিক যাত্রী।
পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হলে তিন ঘণ্টা পর রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের যান চলাচল শুরু হয়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (আরটিএ) সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নীলফামারীর সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে সিএনজি চলাচল করবে এমন আশ্বাসের ভিত্তিতে অবরোধ তুলে নেয় জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন।
জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১৫ মে) দুপুরে নীলফামারীর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আরটিএর সভা হয়। জেলা প্রশাসক ও আরটিএ সভাপতি পঙ্কজ ঘোষ এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় মঙ্গলবার (১৬ মে) সৈয়দপুর থানার সামনে থেকে নীলফামারী শহরে চলাচলকারী সিএনজিগুলো কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে চলাচল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে আপত্তি জানান সিএনজি মালিক ও শ্রমিকরা।
আরটিএর সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিএনজিগুলো কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের পরিবর্তে সৈয়দপুর বাইপাস মহাসড়কের ওয়াপদা মোড় থেকে নীলফামারী জেলা শহরে চলাচল শুরু করে। এ নিয়ে জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ সিএনজি-অটোরিকশা শ্রমিক লীগ সৈয়দপুর শাখার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) সারোয়ার আলমের মৌখিক নির্দেশে ওয়াপদা মোড় থেকে চলাচল করার কথা জানান।
পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সিএনজি চালকরা আরটিএর সিদ্ধান্ত অমান্য করায় ও পুলিশ কর্মকর্তার একক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধ করে জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন। এ সময় তারা সৈয়দপুর বাস টার্মিনাল, ওয়াপদা মোড়, রাবেয়া মোড়, ডোমার ও ডিমলায় সড়কের ওপর এলোপাতাড়ি গাড়ি রেখে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। অবরোধে বন্ধ হয়ে যায় উত্তরের চার জেলার সঙ্গে দেশের সড়কপথের যোগাযোগ ব্যবস্থা। এতে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে আটকা পড়েন ফ্লাইটের পাঁচ শতাধিক যাত্রী।
বাংলাদেশ সিএনজি-অটোরিকশা শ্রমিক লীগের সৈয়দপুর শাখার সভাপতি শাহিন হোসেন বলেন, সৈয়দপুর টার্মিনাল থেকে সৈয়দপুর-নীলফামারী রুটে সিএনজি চলাচল করলে বাস-মিনিবাস শ্রমিকদের সঙ্গে যাত্রী ওঠানামা নিয়ে দ্বন্দ্ব আরও বাড়বে। তাই শহরের বাইরে ওয়াপদা মোড় থেকে প্রশাসনের কাছে চলাচলের অনুমতি চাই। মৌখিক নির্দেশ পেয়ে ওয়াপদা মোড় থেকে চলাচল শুরু করি। তাছাড়া আরটিএ সভায় আমাদের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিল না।
জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ বলেন, আরটিএর সিদ্ধান্ত অমান্য করে একজন পুলিশ কর্মকর্তা স্ট্যান্ডবাজি করেছেন। তিনি একক সিদ্ধান্তে ওই সভার গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন না করে সিএনজি চালকদের পক্ষ অবলম্বন করেছেন। জনগণের স্বার্থে সৈয়দপুর শহর থেকে সৈয়দপুর-চিলাহাটি রুটের বাস স্টপেজ সরিয়ে টার্মিনালে নেওয়া হয়েছে। তেমনি শহরের ভেতর থেকে সিএনজি স্ট্যান্ড সরিয়ে বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে ওই রুটে চলাচল করবে বলে আরটিএ সিদ্ধান্ত হয়।
এ বিষয়ে নীলফামারীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) সারোয়ার আলম বলেন, সিএনজি চালক এবং সংগঠনের নেতৃবৃন্দের দাবির মুখে শহরের বাইরে থেকে তাদের চলাচল করতে বলা হয়েছে। তবে সিএনজি চালকদের সংগঠনের পক্ষ অবলম্বন করার অভিযোগটি সত্য নয়।
বাবু/মম