শুক্রবার ২৭ জুন ২০২৫ ১৩ আষাঢ় ১৪৩২
শুক্রবার ২৭ জুন ২০২৫
ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে লাখ টাকা আয় রাজমিস্ত্রী সাদ্দামের
নড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশ: সোমবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৩, ৭:০৯ PM
সাদ্দাম হোসেন (৩৫)। রাজমিস্ত্রী থেকে হয়েছেন সফল ইউটিউবার ও ফ্রিল্যান্সার। ২০১৩ সালে ওয়েব ডিজাইন দিয়ে অনলাইন জগতে কাজ শুরু করেন। উচ্চশিক্ষার সুযোগ না পেলেও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সফল মানুষ তিনি।

সংসারে সচ্ছলতা আনতে একসময় কাজের সন্ধানে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটেছেন। খুলনা গিয়ে শুরু করেন সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভের (বিক্রয় প্রতিনিধি) চাকরি। এরপর সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি। বেতন পেতেন প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা। এ টাকায় সংসার চালানোই দায় ছিল। 

জীবন-জীবিকার তাগিদে সামান্য বেতনের চাকরি ছেড়ে সাতক্ষীরা গিয়ে শুরু করেন রাজমিস্ত্রীর কাজ। রাজমিস্ত্রী সহকারী হিসেবে যে পারিশ্রমিক পেতেন, তা-ই দিয়ে সংসার চলত। প্রায় পাঁচ বছর করেন এ কাজ। রাজমিস্ত্রী কাজ করতে গিয়ে সাদ্দাম একটি মাধ্যমে জানতে পারেন-অনলাইনে কাজের খবর। কাজের ফাঁকে ধীরে ধীরে ঝুঁকে পড়েন অনলাইন প্লাটফর্মে। অল্পদিনের ব্যবধানে হয়ে ওঠেন সফল ফ্রিল্যান্সার ও ইউটিউবার। সেই থেকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি সাদ্দাম হোসেনের।

খুলনা থেকে প্রায় তিন বছর আগে নড়াইলে এসে উপশহর গারুচিরা বাজারের পাশে দলজিতপুর মৌজায় পাকা বাড়ি করে সপরিবার বসবাস করছেন সাদ্দাম হোসেন। তিনি খুলনার কয়রা উপজেলার দুই নম্বর কয়রা গ্রামের এম আব্দুস সাত্তার ও সায়রা বেগম দম্পতির ছোট ছেলে। বড় ভাই ও ছোট দুই বোন রয়েছে তার।

সাদ্দাম হোসেন বলেন, জীবনসংগ্রামে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করেছি। তবে হাল ছাড়িনি। অনেক কষ্টের মাঝেও সফলতার মুখ দেখেছি। এসআর থেকে শুরু করে সিকিউরিটি গার্ড এবং রাজমিস্ত্রী কাজ করেছি। তবে পরিশ্রম অনুযায়ী বেতন পাইনি। তাই অনলাইন মাধ্যম বেছে নিয়েছি। অবশেষে সফলও হয়েছি।

অনলাইনে কাজে অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে সাদ্দাম বলেন, ফ্রিল্যান্সার বা অনলাইন মার্কেট প্লেসের কাজটি শুরু করেছি ২০১৩ সাল থেকে। তবে প্রথমে কাজ শেখার জন্য ভালো কোনো শিক্ষক পাইনি। তবে হাল ছাড়িনি। ‘ওয়েব ডিজাইন’ দিয়ে অনলাইন জগতে প্রথমে কাজ শুরু করি। পরে ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজসহ ফ্রিল্যান্সিংয়ের বিভিন্ন ধরনের কাজ করছি। সব মিলিয়ে প্রতি মাসে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় হচ্ছে।

এছাড়া অনলাইনের আয়ের ওপর নির্ভর করেই নড়াইল উপশহর সংলগ্ন দলজিতপুর মৌজায় পাঁচ শতক জমির ওপর একতলা পাকা বাড়ি, সাড়ে তিন শতক জমিতে মার্কেটসহ ১২৬ শতক চাষাবাদের জমি কিনেছেন সাদ্দাম হোসেন। সব মিলিয়ে জিরো থেকে কোটিপতি হয়েছেন তিনি। ইউটিউব, ফ্রিল্যান্সার, ফেসবুক পেজসহ অনলাইন মার্কেটিংয়ের পাশাপাশি এসব বিষয়ে নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন সাদ্দাম হোসেন। সরাসরি ও অনলাইনে সাদ্দাম হোসেনের ক্লাস করে অনেকেই এখন প্রতিষ্ঠিত ফ্রিল্যান্সার ও ইউটিউবার।

সাদ্দামের এ সাফল্যে খুশি তার স্ত্রী সোনালী হোসেন। তিনি জানান, তার স্বামীর আয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করছেন তারা। সাদ্দাম হোসেনের এ কাজে খুশি পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজনও।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত