রোববার (১২ নভেম্বর) সকালে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর মা লোহাগড়া থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। পরে একইদিন সকাল ৯টার দিকে অভিযুক্ত আশিককে লোহাগড়া থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।

লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মামলা বিবরণ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, দশ বছর বয়সী ওই শিশু লোহাগড়া উপজেলার এক আবাসিক মহিলা মাদ্রাসায় দ্বিতীয় শ্রেণীতে অধ্যয়নরত। শুক্রবার (১০ নভেম্বর) মাদ্রাসা ছুটির দিন সকালে শিশুটি নিজ বাড়িতে ফিরে আসে। ওই শিশুর গৃহপরিচারিকা মা তাকে বাড়িতে রেখে ডাক্তার দেখাতে যান। এ দিন দুপুরের দিকে অভিযুক্ত কিশোর সাগর শিশুটিকে ডাব খাওয়ানোর কথা বলে বাড়ি থেকে কিছু দূরের মাছের ঘেরে নিয়ে যায়। ঘের পাড়ের নির্জনতাকে কাজে লাগিয়ে আশিক তাকে ধর্ষণ করে। পরে শিশুটি কান্না করতে করতে বাড়িতে ফেরে। সন্ধ্যার পর তার মা বাড়ি ফিরে দেখে শিশুটি কান্না করছে। কান্নার কারণ জানতে চাইলে তার মায়ের কাছে বিস্তারিত জানায় শিশুটি।

পরবর্তীতে শিশুটি মা অভিযুক্ত ধর্ষণকারী আশিক এর মা এবং দাদিকে জানালে বিষয়টি তারা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। এবং তাদের কাছে হাতে পায়ে ধরে মাফ চায়। পরদিন শনিবার লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অসুস্থ শিশুকে নিয়ে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা-নিরীক্ষা জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করে।

ভুক্তভোগীর মা বলেন, ‘আমি প্রতিবন্ধী ও শারীরিকভাবে অসুস্থ, মানুষের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাই। আমার বাবাহারা মেয়েটার যে ক্ষতি আশিক করেছে, তার যথাযথ শাস্তি চাই।’

নড়াইল সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আনিসুর রহমান সোহাগ জানান, প্রাথমিকভাবে এটা স্পষ্ট শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তাকে গাইনিওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দিতে পারবেন।

নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোসা. সাদিরা খাতুন বলেন, ‘হাসপাতালের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেলে তদন্ত করে আদালতের মাধ্যমে অতি দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিতে জেলা পুলিশ সচেষ্ট আছে। ভুক্তভোগী পরিবারকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। ভুক্তভোগী শিশুর মায়ের দায়ের করা ধর্ষণ মামলার প্রেক্ষিতে দ্রুততার সঙ্গে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার আশিককে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’#