<
শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪
দুর্যোগ মোকাবিলায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার সময়ের দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০২৩, ৯:৫১ PM
দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের জন্য সমন্বিত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ভিত্তিক অগ্নি শনাক্তকরণ এবং সতর্কতা ব্যবস্থা হতে পারে কার্যকরী উদ্যোগ। এই ব্যবস্থায় স্থাপিত ক্যামেরায় মাত্র ১০ সেকেন্ডের মধ্যে আগুন, ধোঁয়া শনাক্ত করতে সক্ষম। যা ধারণ করে ম্যাপ ও ছবিসহ পাঠানো সম্ভব ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারে। সেখান থেকে কল যাবে ফায়ার সার্ভিস, ভলান্টিয়ারসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানে।

দুর্যোগের ক্ষেত্রে অগ্নিকাণ্ড ও জলাবদ্ধতা দুটি প্রধান তবে সাধারণ ঘটনা, যা ঢাকাসহ সারাদেশে ছোট থেকে বড় দুর্যোগ সৃষ্টি করে। স্মার্ট প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সঙ্গে সঙ্গে পাল্টেছে দুর্যোগ মোকাবিলার কৌশলও। এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জাতীয় কৌশল বিবেচনা করা এখন সময়ের দাবি।

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দুপুরে স্ট্রেংদেনিং আরবান পাবলিক-প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকুয়েক রেজিলিয়েন্স’ সুপার (সুপার) কনসোর্টিয়াম প্রকল্প আয়োজিত দুর্যোগ ঝুঁকি নিরসনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বিষয়ক আয়োজিত এক কর্মশালা শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড পারপাস বাংলাদেশের দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও জরুরি সাড়া দান ইউনিটের প্রধান মাসুদ রানা, সুপার কনসোর্টিয়াম প্রকল্পের ব্যবস্থাপক আ ম নাসির উদ্দিন ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও প্রকৌশল বিভাগের প্রফেসর খলিলুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সাথে সুপার কনসোর্টিয়াম প্রকল্পে কার্যক্রম চলছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা একটা সিস্টেম। প্রাথমিকভাবে আগুন শনাক্ত করতে এবং জলাবদ্ধতার পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) এমন একটি সমাধান যা দুর্যোগের ক্ষতি কমানো কিংবা প্রাথমিক পর্যায়েই ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

সংবাদ সম্মেলনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর কার্যক্রম তুলে ধরে প্রফেসর খলিলুর রহমান বলেন, আমাদের গবেষণা সমীক্ষা দেখা গেছে, এআই মডেল প্রায় ৮০ শতাংশ নির্ভুলভাবে স্বয়ংক্রিয় পূর্বাভাস দেয়। দ্য ইন্টারনেট অব থিংস বা আইওটি-ভিত্তিক সেন্সর মডিউল নির্দেশ করে, এটি সিসি ক্যামেরার সহায়তায় আগুন কিংবা ধোঁয়া দেখেই সিগনাল দেবে।

এর কার্যক্রম সম্পর্কে খলিলুর রহমান বলেন, এআই-ভিত্তিক ফায়ার ডিটেকশন মডেল সপ্তাহের সাত দিন ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভির মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে আগুন বা ধোঁয়া শনাক্ত করা সম্ভব।

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, একটি বাসায় যদি চারটি সিসিটির একসেস আমাদের দেওয়া হয়, তবে আমরা আমাদের সার্ভার বা প্রাইভেট সেক্টর ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (পিইওসি) থেকে নজরদারি করব। ক্যামেরা ১৫০ গজ পর্যন্ত যদি সক্ষমতা থাকে তবে সামনে পেছনে কাভার করা সম্ভব ৩০০ গজ। মাত্র ১০ সেকেন্ডের মধ্যে ধারণ করা আগুন বা ধোঁয়া দেখেই পূর্ভাবাস দেবে। এরপর তা আরও নিশ্চিত হয়ে ফায়ার সার্ভিসকে দ্রুত জানানো সম্ভব। এতে করে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে দুর্যোগ মোকাবিলা কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সিস্টেমে শনাক্ত করা ছবি ছাড়া কোনো ভিডিও বা ছবি সংরক্ষণ করে না। ডেটা আইন মানার কারণেই আমরা ভিডিও বা কোনো ছবি সংরক্ষণ করি না। শুধু আগুন বা ধোঁয়ার ছবিই সংরক্ষণ করা হয় তাৎক্ষণিকভাবে।

তিনি বলেন, বিদ্যমান বা সস্তা ঐতিহ্যবাহী সিসিটিভি অবকাঠামো সিস্টেমের সঙ্গেও আমাদের এই পদ্ধতি মানিয়ে নেওয়া যায়। বিশেষ ক্যামেরা বা ডিভাইস প্রয়োজন হবে না। শুধু দরকার একটি সিসিটিভি যেখানে সার্বক্ষণিক ইন্টারনেট ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে লাইনের ইন্টারনেটের চেয়ে বিভিন্ন মোবাইল ইন্টারনেট বেশি কার্যকরী হতে পারে।

আমাদের এআই আগুনের ছবি নিয়ে লোকেশনসহ কন্ট্রোল স্টেশনে পাঠাবে। যদি পারিপার্শ্বিক পরিবেশ তাপমাত্রা, গ্যাস এবং ধোঁয়ার থ্রেশহোল্ড মান অতিক্রম করে। মানচিত্রে সমস্ত তালিকাভুক্ত অবস্থানে সমস্ত সম্ভাব্য সব আগুনও এক সঙ্গে দেখানো সম্ভব।

সুপার কনসোর্টিয়াম প্রকল্পের ব্যবস্থাপক আ ম নাসির উদ্দিন বলেন, স্ট্রেংদেনিং আরবান পাবলিক-প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়েক রেজিলিয়েন্স' সুপার কনসোর্টিয়াম প্রকল্প, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি কৃত্তিক বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক সমাধান কল্ল্যাণপুর বস্তিতে পরীক্ষামূলকভাবে স্থাপন করেছে। যা আগুন এবং জলাবদ্ধতা সংক্রান্ত দুর্যোগ ঝুঁকির আগাম পূর্বাভাস দিতে সক্ষম। ফলে  দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি রোধ অনেকাংশে সম্ভব হবে।

নাসির উদ্দিন আরও বলেন, আগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিস আসতে আসতে ১৫-২০ মিনিট লেগে যাচ্ছে। আমাদের এই প্রযুক্তির মাধ্যমে দুর্যোগের ১০ সেকেন্ডের মধ্যে খবর পেয়ে যাব। এতে দুর্যোগ ঝুঁকির প্রথমেই যেনে গেলে খুব সহজেই আমরা মোকাবিলা করতে পারব।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সিভিল প্রটেকশন অ্যান্ড হিউমেনিটেরিয়ান এইড (একো) এর অর্থায়নে, জনসাধারণ এবং ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মাঝে দুর্যোগে সহনশীলতা গড়ে তোলার জন্য ‘স্ট্রেংদেনিং আরবান পাবলিক-প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়েক রেজিলিয়েন্স’ (সুপার) কনসোর্টিয়াম প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে অ্যাকশনএইড, ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), ইউনাইটেড পারপাস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন। এই প্রকল্পে কৌশলগত সহায়তাকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করছে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দপ্তর (ইউএনআরসিও)।

বাবু/মম
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







সোস্যাল নেটওয়ার্ক

  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সাউথ বেঙ্গল গ্রুপ কর্তৃক প্রকাশিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. আশরাফ আলী
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : রফিকুল ইসলাম রতন
আউয়াল সেন্টার (লেভেল ১২), ৩৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত