থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে কেউ যদি ফানুস, আতশবাজি, পটকা বা গুলি ছোড়ে তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, কেউ যদি ডিএমপির এ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেন তবে তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা করা হবে।
থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে আতশবাজি-পটকা ফোটালে বিস্ফোরক আইনে মামলা হবে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে ১২ দফা নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ঢাকা মহানগরীতে নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
ডিবির হারুন বলেন, ডিএমপির দেয়া এই নির্দেশনা নগরবাসীকে মানতে হবে। যদি কেউ এসব নির্দেশনা না মানেন তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিষেধাজ্ঞা স্বত্বেও যদি কেউ ফানুস ওড়ায়, আতশবাজি ফাটায় বা অস্ত্র দিয়ে গুলি ছোড়ে তাহলে নির্দেশনা অনুযায়ী অ্যাকশন নেয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করা হবে।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পুলিশের সদস্য ৩৩ হাজার। অন্যদিকে ঢাকায় বসবাসকারী নাগরিকের সংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি। আমরা মনে করি, পুলিশের পক্ষ থেকে ডিএমপি কমিশনারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে নগরবাসীকে সতর্ক করা হয়। কিন্তু কিছু মানুষ যদি না মানে, আইন তোয়াক্কা না করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে তো অ্যাকশন নেয়া ছাড়া কোনো উপায় দেখি না। থানায় থানায় এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এদিকে থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে ১২ দফা নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। নির্দেশনাগুলো হলো:
১। ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তায় এবং প্রকাশ্য স্থানে কোনো ধরনের সভা, জমায়েত বা উৎসব করা যাবে না।
২। উন্মুক্ত স্থানে নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কোন ধরনের অনুষ্ঠান, সমাবেশ, নাচ, গান ও কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না।
৩। কোথাও কোনো ধরনের আতশবাজি, পটকা ফোটানো ও ফানুস উড়ানো বা ক্রয়বিক্রয় করা যাবে না।
৪। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পরে বহিরাগত কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। শুধুমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত যানবাহন পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে প্রবেশ করতে পারবে।
৫। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার মধ্যে স্ব-স্ব এলাকায় প্রত্যাবর্তন করবেন এবং রাত ৮টার পরে প্রবেশের ক্ষেত্রে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদেরকে পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে।
৬। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় রাত ৮টার পর বহিরাগতরা প্রবেশ করতে পারবে না। তবে উক্ত এলাকায় বসবাসরত নাগরিকরা নির্ধারিত সময়ের পর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং দিয়ে পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে প্রবেশ করতে পারবে।
৭। একইভাবে ওই সময়ে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় যে সব নাগরিক বসবাস করেন না তাদেরকে বর্ণিত এলাকায় গমনের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হলো।
৮। হাতিরঝিল এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে কোনো সমাবেশ বা অনুষ্ঠান করা যাবে না এবং কোনো যানবাহন থামিয়ে অথবা পার্কিং করে কেউ অবস্থান করতে পারবে না।
৯। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বসবাসরত নাগরিকরা ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার মধ্যে স্ব-স্ব এলাকায় প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুরোধ করা হলো।
১০। ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার পর ঢাকা মহানগরীর কোনো বার খোলা রাখা যাবে না।
১১। আবাসিক হোটেলগুলো সীমিত আকারে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান করতে পারবে।
১২। ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে সব ধরনের লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র বহন করা যাবে না।