বৃহস্পতিবার ১৯ জুন ২০২৫ ৫ আষাঢ় ১৪৩২
বৃহস্পতিবার ১৯ জুন ২০২৫
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের তথ্য জাতিসংঘের রিপোর্টে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: শনিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৪, ১০:৪৫ AM
সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সহিংসতার ওপর শুক্রবার (১৬ আগস্ট) জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর) ১০ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। 

এতে অভিযোগ করা হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিক্ষোভ ও বিক্ষোভের পর সংঘাত দমনের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘অপ্রয়োজনীয়’ ও ‘মাত্রাতিরিক্ত’ বলপ্রয়োগ করেছে। 

পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ এবং সহিংসতার ঘটনার ক্ষেত্রে নির্বিচার বল প্রয়োগ করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডের পাশাপাশি পাখি শিকারে ব্যবহৃত অস্ত্র, বুলেটসহ নানা রকম প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেনন।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে তার ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। তিনি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে ৬ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত চলমান আন্দোলনে প্রায় ৪০০ জনের মৃত্যুর খবর এবং ৫ থেকে ৬ আগস্টের মধ্যে প্রায় ২৫০ জনের মৃত্যুর কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বিক্ষোভকারী, পথচারী, রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য রয়েছেন। হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ও পথচারী আহত হয়েছেন। রোগীদের ভিড়ে হাসপাতালগুলো উপচে পড়েছে। 

নিহত ব্যক্তিদের সংখ্যার বিষয়ে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা সম্ভবত প্রকৃত সংখ্যার চেয়ে কম। কারণ, কারফিউ, ইন্টারনেট বন্ধ এবং চলাচলে বিধিনিষেধের কারণে তথ্য সংগ্রহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তা ছাড়া হাসপাতালগুলোকে নিহত ও আহতদের বিশদ বিবরণ কাউকে না দিতে সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ইন্টারনেট বন্ধ করার কারণে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও তথ্য পাওয়ার অধিকার ক্ষুণ্ন হয়। স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের প্ল্যাটফর্ম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ।

সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র (অনুচ্ছেদ ১৩) এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তিতে (অনুচ্ছেদ ১২) স্বাধীনভাবে চলাচলের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে; যা নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার এবং সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত। কিন্তু দেশজুড়ে কারফিউ জারি করার মানুষের স্বাধীনভাবে চলাচলের অধিকার ক্ষুণ্ন হয়। যোগাযোগ সীমিত হয়ে যায়; যা অন্যান্য মৌলিক অধিকারের ওপরও প্রভাব ফেলে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও প্রয়োজনীয় সেবা পাওয়া ব্যাহত হয়।

শেষে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের প্রাথমিক বিশ্লেষণে। এতে রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।

ফলকার টুর্ক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার পেতে জাতীয় ঐকমত্য জরুরি। সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অপব্যবহারের একটি ব্যাপকতর, নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ তদন্ত হবে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত