নারায়নগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মাহমুদুল হকের বিরুদ্ধে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও কোটি টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রলীগের সাংগঠনিক পদ থেকে ডিসি হওয়া মাহমুদুল ছিলেন নারায়নগঞ্জের ত্রাস শামীম ওসমানের বাহুবলে। এর প্রভাব খাটিয়ে গণঅভ্যুত্থানের আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে নাশকতা বলে বক্তব্য দেন তিনি।
গত ৩১ জুলাই নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শোক দিবসের প্রস্তুতিমূলক একসভায় ডিসি মাহমুদুল হক বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে দেশব্যাপী নাশকতা চালিয়েছে।
নারাযণগঞ্জের সাইনবোর্ড শিমরাইল মোড়ে হঠাৎ করে এত লোক কোথা থেকে আসলো। দেখা গেছে পুলিশ হাসপাতাল থেকে গুলিবিদ্ধ আহত যাদেরকে আটক করেছে তাদের কারো বাড়ি হবিগঞ্জ আবার কারো বাড়ি কিশোরগঞ্জ আবার কারো বাড়ি কুষ্টিয়া। এতে বোঝাই যায় তারা বিভিন্ন এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জে এসেছিল সহিংসতা করতে।
এ জেলা প্রশাসক আরও বলেন, দুর্বৃত্তরা পদ্মা সেতু নির্মাণ উপলক্ষ্যে নির্মিত সেতু ভবন পুড়িয়ে দিয়েছে। গর্বের মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও দুর্যোগ অধিদপ্তরে অগুন দিয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে কোটা আন্দোলনের ইস্যু না থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মসূচীর নামে অশান্তি ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এজন্য আমাদের সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
ডিসি মো. মাহমুদুল হক ২০২৩ সালের ২৭ জুলাই নারায়নগঞ্জ জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ২৭তম বিসিএস কর্মকর্তা। তিনি ছাত্রজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও তিনি স্বৈরাচার সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের উপ-পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। যার ফলে তার অপকর্মে প্রকাশ্যে আসেনি। এখন আসতে আসতে মূখ খুলতে শুরু করেছে তার কাছে হয়রানির স্বীকার মানুষ।
তিনি বিভিন্ন হাট-ঘাট ইজারা, বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন পরিবহন সংগঠন, ইটভাটা, জলমহালসহ বিভিন্ন ক্রয় কমিটি থেকে শামীম ওসমানের সাথে লিয়াজো করে কমিশন বাণিজ্য করেছেন এই প্রভাবশালী ডিসি। এছাড়া সর্বশেষ চাকরি নিয়োগে মোটা অংকের টাকা বাণিজ্য করেছেন। গত কুরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে অস্থায়ী পশুহাট ইজারা দিয়ে এলআর ফান্ডের নামে ইজারাদারদের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা বাণিজ্য করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একাধিক কর্মচারী জানান, এই ডিসি আমাদের মানুষই মনে করে না। তার অত্যাচারে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অতিষ্ঠ। ডিসি মাহমুদুল হকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকার পরও এখনো বহাল তবিয়তে থাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
অনিয়মের মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। নামে বেনামে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ফ্লাট ক্রয় করেছেন। এরমধ্যে আলোচিত ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিজাত এইচ আই রিদনির পেলেইস ১/১৪ ভবনে তার স্ত্রীর ভাইয়ের নামে ফ্ল্যাট বাগিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে আমি মিটিংএ বলে প্রতিবেদকের কল কেটে দেন।