মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ ৩ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫
নীলফামারীতে শিক্ষিকাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ
নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৪, ৬:০৫ PM
শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কুন্দপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলা শিক্ষিকা মৌসুমী আক্তারকে মারপিট করে শরীরের কাপড়চোপড় ছিড়ে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে একই স্কুলের সহকারী শিক্ষক জিকরুল হক, আরিফুজ্জামান শাহ, সাইফুল ইসলাম ও বিকাশ চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে। 

এ বিষয়ে নীলফামারী সদর থানায় বাদি হয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে মৌসুমী আক্তার। ঘটনাটি ঘটেছে ১২ নভেম্বর সকাল ১১টায় কুন্দপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এর কক্ষে। 

বিদ্যালয়টির শিক্ষক ও কর্মচারীরা জানান, বিগত সরকারের আমলে নীলফামারী সদর আসন-২ এর সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, তৎকালীন প্রধান শিক্ষক খোকারাম রায় ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাতীয় পাটি নেতা আলহাজ্ব শাহজাহান আলী চৌধুরী মিলে মোটা অর্থের বিনিময়ে ১টি শিক্ষকের শূন্য (সমাজ বিজ্ঞান) পদে জিকরুল  হক ও আরিফুজ্জামান শাহকে শিক্ষক নিয়োগ করে ১ যুগ আগে। 

সমাজবিজ্ঞান শিক্ষক হিসেবে আরিফুজ্জামান এমপিওভুক্ত শিক্ষক হতে পারলেও অতিরিক্ত শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থে বেতন পেয়ে আসছে জিকরুল হক। বর্তমান প্রধান শিক্ষক দ্বিজেন্দ্র নাথ রায় যোগদানের পরে বাংলা ও গণিত শিক্ষক এর চাহিদা পাঠায় এনটিআরসিতে। সরকারি বিধি ও নীতিমালা মেনে এনটিআরসি থেকে (বাংলা) বিষয়ে নিয়োগ পেয়ে কুন্দপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় যোগদান করেন মৌসুমী আক্তার।

মৌসুমী আক্তারের বেতন বিল এমপিও ভুক্তির জন্য সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে পাঠালে ফাইলটি নির্দিষ্ট সময়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে না পাঠিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে ভুল বুঝিয়ে বিভ্রান্ত করে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস।

বাংলা সহকারী শিক্ষিকা মৌসুমী আক্তার এর স্থানে সমাজ বিজ্ঞান শিক্ষক জিকরুল হক এর এমপিওভুক্তির বিষয়ে রফাদফার অভিযোগ উঠেছে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ আছে, সহকারী শিক্ষক বিকাশ রায়, আরিফুজ্জামান, জিকরুল হক, সাইফুল ইসলাম মিলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের যোগসাজশে একটি ভুয়া রেজুলেশন তৈরি করে ১২ নভেম্বর সকালে প্রধান শিক্ষক দ্বিজেন্দ্রনাথ রায়কে রেজুলেশনে স্বাক্ষর দিতে চাপ প্রয়োগ করে।  

প্রধান শিক্ষক ভুয়া রেজুলেশনের স্বাক্ষর না করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক দ্বিজেন্দ্রনাথ রায়কে লাঞ্চিত করে গলা চেপে ধরে। এসময় এনটিআরসির নিয়োগ পাওয়া সহকারী শিক্ষিকা মৌসুমী আক্তার, রাধা সরকার ছুটে আসে প্রধান শিক্ষককে বাঁচাতে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে মৌসুমী আক্তারের কাপড় ছিড়ে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষিকা মৌসুমী আক্তার বলেন প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করে জোরপূর্ব  রেজুলেশনে স্বাক্ষর  নিতে বাধ্য করছিল আমরা হইচই চিল্লাচিল্লি শুনে প্রধান শিক্ষককে বাঁচাতে গেলে আমার শরীরের কাপড় ছিড়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে সহকারি শিক্ষক জিকরুল হক, আরিফুজ্জামান শাহ, সাইফুল ইসলাম, বিকাশ রায়। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে নীলফামারী সদর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। 

সহকারী শিক্ষক রাধা সরকার জানান, এদের ধস্তাধস্তি মারামারি থামাতে গিয়ে আমার হাতের শাখা ভেঙে গেছে, পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে বিষয়টি দেখিয়েছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মো:জিকরুল হক ও আরিফুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে বলেন, বিষয়টি আমরা মীমাংসা করে ফেলেছি আপনারা জেনে আর কি করবেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম আর সাঈদ জানিয়েছেন, অভিযোগটি আমরা প্রাথমিকভাবে জিডি হিসেবে নিয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিদ্যালয়টির বর্তমান সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আশরাফুল হক জানিয়েছেন, অভিযোগ শুনেছি শিক্ষিকাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। দুপক্ষের সাথে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করব। সমাধান না হলে আইনের রাস্তা তো খোলাই আছে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, থানায় অভিযোগ দিয়েছে শিক্ষিকা, পুলিশ প্রশাসন তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত