পতিত আওয়ামী লীগ সরকার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করলেও অন্তর্বর্তী সরকার সেই পথে হাঁটেনি বলে দাবি করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, “আগে পিএম অফিসের একজন ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি মনস্টার ছিলেন। ওনার জন্য এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে না। আমরা তো সে জায়গায় যেতে চাই না।
“আমরা চাই বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাক। অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ, লিগ্যাল এবং গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে চাপ দেওয়া- এই তিনটি জায়গায় এই সরকার ন্যূনতম কোনো হস্তক্ষেপ করেনি।”
আজ শনিবার ঢাকার কারওয়ান বাজারে ‘গণমাধ্যম সংস্কার প্রতিবেদন পর্যালোচনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন শফিকুল।
অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রশ্নে বড় পরিবর্তন হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টটা আমাদের মাথার ওপর একদম একটা খড়্গ হিসেবে ছিল; যেটা ব্যবহার করে একটা হিসাবে এসেছে- সাত হাজারের বেশি কেইস করা হয়েছে। মেইন টার্গেট ছিল বাকস্বাধীনতাকে ব্যহত করা।
“বাংলাদেশে শেখ হাসিনার আমলে মানুষ মেইনস্ট্রিম মিডিয়ায় কথা বলতে পারত না অনেক ক্ষেত্রেই; ফেইসবুক বা ইউটিউব বা সোশাল মিডিয়াকে সবার কণ্ঠস্বরকে নিয়ন্ত্রণ করার একটা যন্ত্র বা মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছে। সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বা সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট নিয়ে আসে। আমরা প্রথম যে কাজটা করেছি, এই পুরো আইনটাকে বাদ দিয়েছি।”
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বদলে যে অধ্যাদেশ এসেছে তা সবার সঙ্গেই আলোচনা করে করা হয়েছে বলে দাবি করেন শফিকুল।
“নতুন আইন এসেছে। এবং নতুন আইন করার ক্ষেত্রে আমরা প্রত্যেকটা গ্রুপের সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই মতামত দিয়েছেন। আমরা মনে করি না, কেউ বলতে পারবে এটার মাধ্যমে কারও বাক স্বাধীনতায় আমরা আক্রমণ করেছি। শুধু এই আইন না, আরও অনেকভাবেই বাংলাদেশে মানুষের মুখ বন্ধ করা হয়েছে।”
আওয়ামী লীগ সরকার ডিজিএফআইসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থার মাধ্যমে ‘ভয়ের সংস্কৃতি’ তৈরি করেছিল মন্তব্য করে প্রেস সচিব বলেন, “আগে যেটা ছিল গোপন কোনো সংস্থাকে দিয়ে একটা ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করে আপনার মুখটাকে বন্ধ করা। আমরা এটা বন্ধ করতে পেরেছি। আমাদের তরফ থেকে বারবার বলা হয়েছে, কোনো ধরনের কোনো সিক্রেট এজেন্সি, কোনো ইন্টিলিজেন্স এজেন্সি যেন কোনো সংবাদমাধ্যম বা সাংবাদিককে একটা যেন ফোন না করে।”