<
শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪
ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন, দুই দেশের উন্নয়নের মাইলফলক অর্জন: প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: শনিবার, ১৮ মার্চ, ২০২৩, ৮:৩৬ PM
ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন আমাদের দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে সহযোগিতা উন্নয়নের একটি মাইলফলক অর্জন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তার পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে। 

শনিবার (১৮ মার্চ) বিকেলে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে যৌথভাবে এ পাইপলাইনের উদ্বোধন শেষে তিনি এ কথা বলেন। 

তিনি বলেন, ভারত থেকে জ্বালানি আনতে ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনকে দুই দেশের জন্য একটি মাইলফলক অর্জন। পাইপলাইনটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ভারত থেকে পাইপলাইনে বাংলাদেশে তেল আসা শুরু হলো। আগে রেলে ওয়াগনে ভারত থেকে তেল আসতো বাংলাদেশে।

শেখ হাসিনা বলেন, ভারত-বাংলাদেশ পাইপলাইনের মতো আগামী দিনেও দুই দেশ আরও সফলতা উদযাপন করবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আমরা একই সঙ্গে কাজ করবো।

এই পাইপলাইনের সুফলের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন চালুর ফলে দুই দেশের জনগণ বিভিন্নভাবে উপকৃত হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে যখন বিশ্বের অনেক দেশ জ্বালানি সংকটের মুখোমুখি, এই পাইপলাইনটি আমাদের জনগণের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, এই পাইপলাইনে ভারত থেকে ডিজেল আমদানিতে ব্যয় ও সময় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় ডিজেলের স্থিতিশীল সরবরাহ নিশ্চিত করবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং আমি, আমরা ভার্চুয়ালি এই প্রকল্পের কাজ শুরু করি। ১৩১ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের অংশে পড়েছে ১২৬ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার, ভারতের অংশে ৫ কিলোমিটার।

ভারত বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু, প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু, ভাতৃপ্রতিম প্রতিবেশী রাষ্ট্র। আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অবাধ প্রবাহ। ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক সেতুবন্ধন দুই দেশের সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ট থেকে ঘনিষ্টতর করেছে।

ক্রমাগত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সহযোগিতা আরও গভীর হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক সম্ভাবনাকে আমরা বাস্তবে রূপ দিয়েছি। আমাদের দুই দেশের মধ্যে সমস্যাগুলো একে একে আমরা সমাধান করেছি। যোগাযোগ স্থাপন করেছি, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার আমরা ঘটিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি এবং ভারতের কাছ থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা পাচ্ছি। সেই সঙ্গে সাংস্কৃতিক সহযোগিতা ও উভয় দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুই দেশের জনগণের কল্যাণে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে পারস্পরিক সহযোগিতাও বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের দুই দেশের বন্ধুত্ব অটুট থাকুক সেটাই আমরা চাই। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে সেটাকে আমরা কার্যকর করতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ঠিক রেখে দুই দেশের জনগণের সার্বিক উন্নয়নে আমরা কাজ করে যেতে চাই। আমরা চাই আমাদের উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হোক।

ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বাংলাদেশে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। আমি চাই ভারতের বিনিয়োগকারীরাও এখানে বিনিয়োগ করুক। আমরা দুই দেশই তাতে লাভবান হবো।

ভারত থেকে বাংলাদেশের ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে উপ-আঞ্চলিক পর্যায়সহ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার আরও কয়েকটি উদ্যোগ বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কৃতজ্ঞ, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সরকার এবং জনগণ অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছিল। শুধু তাই না, এক কোটি বাঙালি শরণার্থীকে স্থান দেওয়া, খাবারের ব্যবস্থা, চিকিৎসার ব্যবস্থা, আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দেওয়া এবং অস্ত্র দেওয়া এসব সহযোগিতা ভারতের কাছ থেকে আমরা পেয়েছি। ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী বাহিনীর অভিযানে আমরা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি।

১৯৭৫ সালের পর ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে ভারতের সরকার ও জনগণের কাছে ঋণী। আমরা দুই বোন তখন ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। আমাদের আরও আত্মীয়-স্বজন যারা বেঁচে গিয়েছিল তারাও ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। কাজেই আমি ভারতের কাছে, ভারতের জনগণের কাছে, সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ।

যৌথ এ পাইপলাইন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভারত প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে মোদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, বিগত বছরগুলোতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। বাংলাদেশের এই উন্নতিতে পাশে থাকতে পেরে আমরা খুশি। এই পাইপলাইন (ডিজেলের) বাংলাদেশের উন্নতিতে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

দুই দেশের মধ্যে কানেকটিভিটি যত বাড়বে তত দুই দেশের লোকজনের মধ্যে সম্পর্ক জোরালো হবে বলেও উল্লেখ করেন মোদি। 

বাবু/এনএইচ
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


Also News   Subject:  ফ্রেন্ডশিপ   পাইপলাইন   বন্ধুপ্রতিম দেশ   উন্নয়ন   প্রধানমন্ত্রী  







সোস্যাল নেটওয়ার্ক

  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সাউথ বেঙ্গল গ্রুপ কর্তৃক প্রকাশিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. আশরাফ আলী
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : রফিকুল ইসলাম রতন
আউয়াল সেন্টার (লেভেল ১২), ৩৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত