চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর কর্মীদেরকে মারধর করার অভিযোগ এনে দৈনিক সংবাদ সারাবেলা পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কাজী জাফরসহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
তবে ঘটনার দিনে ও সময়ে কাজী জাফর ঢাকায় ছিলেন। পুলিশ বলছে, এই ঘটনায় সম্পাদক জড়িত না থাকলে তদন্ত করে আইনী প্রক্রিয়ায় তার নাম বাদ দেয়া হবে।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে 'অনুপস্থিত ব্যাক্তির নামে কিভাবে মামলা হয়েছে' এই বিষয়ে কথা হয় চাঁদপুরের (মতলব সার্কেল) মো. খায়রুল কবির এর সাথে। তিনি এই বিষয়ে বক্তব্য না দিয়ে থানায় ওসির সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২৫ ডিসেম্বর আনুমানিক দুপুর সাড়ে ১২টায় মতলব উত্তর ছেংগারচর পৌরসভার সুগন্ধী এলাকায় নৌকার কর্মীরা পোস্টার লাগাতে আসে। সেখানে মামলার আসামী মো. আনিছুর রহমান ওরফে কানা আনিছ নামে ব্যক্তির নির্দেশে সংঘবদ্ধ আসামীরা নৌকার কর্মীদেরকে মারধর করে এবং তাদের সাথে থাকা নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। একই সময় তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে স্থানীয়ভাবে আতংক সৃষ্টি করে। তারা নৌকার সমর্থকদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তবে ঘটনায় পত্রিকার সম্পাদক কাজী জাফর আসামী থাকলেও তার বিরুদ্ধে মামলায় 'সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ' আনা হয়নি।
এই ঘটনায় আহত দেখানো হয়- নৌকার কর্মী মতলব উত্তর উপজেলার মুদাফর এলাকার মজনু দেওয়ানের ছেলে মো. রুবেল (৩৫) ও একই এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে মো. শাকিল দেওয়ান (৩৬)। আহতদের পক্ষে থানায় মামলাটি দায়ের করেন মতলব উত্তর ষাটনল বাড়ীভাঙা প্রধানিয়া বাড়ীর নিজাম উদ্দিনের ছেলে ও আহত শাকিলের ছোট ভাই মো. জহিরুল ইসলাম (৩৪)। মামলায় ২৭ জনের নাম ও ১২ জন অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, মারামারি ও ককটেল বিস্ফোরনের ঘটনা জানতে পেরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে এবং ককটেলের অংশবিশেষ পেয়েছে। তবে পত্রিকার সম্পাদকের নামে মামলা হওয়ার বিষয়টি আমরা জানিনা। কারণ মামলায় আসামীদের মধ্যে নামা ও পিতার নাম ব্যবহার হয়। তবে আমরা যেহেতু বিষয়টি জানতে পেরেছি, তদন্ত শেষে আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাংবাদিকের নাম বাদ দেয়া হবে। এই বিষয়ে আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হবে।
এদিকে, দৈনিক সংবাদ সারাবেলা পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক কাজী জাফরের বাড়ী চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর হলেও তিনি অবস্থান করেন ঢাকায়। সেখানে তিনি নিজ কার্যালয়ে পত্রিকা সম্পাদনাসহ নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। এমন মিথ্যা তথ্য দিয়ে সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা করায় পত্রিকায় কর্মরত সাংবাদিকসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেন ও মামলাটি প্রত্যাহারের দাবী জানান।