এক.
ঈশ্বর নিয়ে ভাবনা
শাহ্ আলী মাজারের পাশে ক্ষুদ্র ব্যবসা করেন মিনার বাবা। নিজেসহ কয়জন শ্রমিক দিয়ে কাঠের কিছু তৈরি সেগুলো বিক্রি করতেন তিনি। দেখতে খুবই দুর্বল ও কৃশকায় চেহারা কিন্তু স্বভাবে ও মানসিকতায় খুবই উদার এবং অনেকটাই শান্ত প্রকৃতির। লেখাপড়া তেমন একটা জানেন না; নামাজ-রোজাও তেমন একটা করেন বলে মনে হয় না। এক ছেলে ও এক মেয়ের বাবা তিনি। ছেলে-মেয়েকে খুবই ভালোবাসতেন। এখন তিনি বেঁচে নেই; চলে গেছেন প্রচলিত বিশ্বাসের পরপারে। তার আস্তিকতার ভাবনা কোনো এক শুক্রবারের তার বউয়ের সঙ্গে কথোপকথনে ফুটে উঠেছে।
মিনার মা : তুমি যে শুক্রবারেও মসজিদে গিয়ে জুমার নামাজ পড়ো না, মরলে তোমার ঠাঁই হবে কোথায়?
মিনার বাবা : আল্লাহ কি মসজিদে থাকে?
মিনার মা : তাহলে কই থাকে, জঙ্গলে?
মিনার বাবা : না, আল্লাহ জঙ্গলে থাকে না। তুমি যখন মসজিদে যাও আল্লাহ তোমার সঙ্গে মসজিদে যায়। তুমি যখন মসজিদ থেকে বের হও, আল্লাহ তখন মসজিদ থেকে তোমার সঙ্গে বের হয়। (আল্লাহ-ঈশ্বর-গড মসজিদ-মন্দির-গির্জায় থাকে না, কত বড় প্রথাবিরোধী কথা!)
দুই.
বউয়ের যাতনা
বউ : কোথায় (মোবাইলে)?
স্বামী : এই তো লাঞ্চ করে আসলাম। এখন একটু কাজ করমু (অফিসের কাজ)।
বউ : হয় বলো ‘কাম করমু’, না হয় বলো ‘কাজ করবো’।
অন্য আরেক দিন
স্বামী জেলা শহরে, স্ত্রী রাজধানী ঢাকায়। মোবাইলে স্ত্রীর সঙ্গে কম কথা হয়। স্বামী স্ত্রীর মোবাইলে কল দিলো।
স্বামী : কী করো?
স্ত্রী : নেড়ে দেখতাছ মরছি, না বাঁইচ্চা আছি?
তিন.
ছাদবাগান
বন্ধু : কোথায় (কোনো এক বিকেলে)?
বান্ধবী : বান্ধবীর ছাদবাগানে।
বন্ধু : তোমার ছাদবাগানে কখন যাবে?
বান্ধবী : সন্ধ্যায়।
বন্ধু : ছাদবাগানে কি কপোত-কপোতী আসে?
বান্ধবী : আরও কত কিছু আছে।
বন্ধু : যেমন?
বান্ধবী : কীটপতঙ্গ, পোকামাকড়।
বন্ধু : পোকামাকড় কিন্তু বাগানে পরাগায়ন ঘটায়।
চার.
বাব-দাদার গল্প
বাবা প্রয়াত হয়েছেন বছর দু’য়েক হল। তিনি একদিন একটা গল্প বলেছেন তা আজও মনে পড়ে। বানারীপাড়ায় বেতাল মাদরাসা, চারপাশে ধানী জমি। আষাঢ় মাসে দুপুরের দিকে এক হিন্দু কৃষক তার জমিতে কাজ করছেন। এমন সময় কোপা বৃষ্টি (প্রবল বৃষ্টি) শুরু হলে কৃষক লোকটি মাদরাসায় আশ্রয় নেন। ঠাণ্ঠায় শরীরে তার কাঁপুনি শুরু হয়। একটু উষ্ণতার খোঁজে মাদরাসার এক শিক্ষকের সঙ্গে তার কথোপকথন
কৃষক : হুজুর, একটা হুক্কা হবে?
হুজুর : মাদরাসায় হুক্কা আসবে কোথা থেকে?
কৃষক : (ক্ষোভের সুরে) হুজুর, কী যে কন? এত বড় একটা মাদরাসা কিন্তু একটা হক্কা নেই!
দাদা সদ্যপ্রয়াত; হাইস্কুলে শিক্ষকতা করতেন। তিনি একদিন একটা প্রবচন বলেছেন
‘মদে মদুয়া (মদখোর) তুষ্ট
মূর্খ তুষ্ট কিলে।
অক্ষরে পণ্ডিত তুষ্ট,
দেবতা তুষ্ট ফুলে।।’
-বাবু/এ.এস