‘এসে মিলি প্রাণের টানে’ স্লোগান ধারণ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ’৭৩ ব্যাচের পরীক্ষার্থীদের ৫১ বছর পূর্তি উদযাপন করেছে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
কুশল বিনিময়, স্মৃতি চারণ, বৃক্ষ রোপন এবং প্রয়াত শিক্ষক ও প্রয়াত সহপাঠীদের জন্য দোয়া কামনাসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে শনিবার পৌরশহরের খালাজুড়াস্থ আলী বশির খানের বাড়িতে দিনব্যাপী আনন্দ উদযাপন করা হয়। দীর্ঘ দিন পর সহপাঠীদের কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন তারা। কিছু সময়ের জন্য হারিয়ে যান শৈশবের স্কুল জীবনের দিনগুলোতে। একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন। একে অপরের পরিবারের খোঁজ খবর নেন। অনুষ্ঠানস্থলটি হয়ে উঠে এক টুকরো প্রিয় শিক্ষাঙ্গণ। ভুলে যান তাদের বয়স হয়েছে। সবার চোখে মুখে ফুটে উঠে তারুণ্যের প্রতিচ্ছবি। ৩০ জন সাবেক শিক্ষার্থী অংশ নেয় অনুষ্ঠানে।
অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে আয়োজক বশির খান উপস্থিত সকলকে রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। কুশল বিনিময় শেষে নানা রকম শীতের পীঠা দিয়ে সবাইকে আপ্যায়ন করা হয়।
কোরআন তেলওয়াতের পর প্রয়াত শিক্ষকদের প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। তারপর প্রয়াত শিক্ষক ও প্রয়াত সহপাঠীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া পাঠ করা হয়।
দোয়া শেষে স্মৃতি চারণ পর্বে সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা ইকবাল আহাম্মদ খানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সাবেক উপ সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সিরাজুল হক, সাবেক শিক্ষক আশা রানী দেব, মোঃ শাহ্ আলম, আব্দুর রউফ, আব্দুল হান্নান, তুলশী কান্ত পাল, বশির খান, আতিকুজ্জামান লেলিম, হুমায়ুন কবির ভূইয়া, মোঃ রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা স্কুল জীবনের স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। অনেকে স্কুল জীবনের খেলাধুলা আর দুষ্টুমির কথা বলেন। ক্লাশে কত হৈ হুল্লুর করেছি। আবারও যদি ছেলে বেলায় ফিরে যেতে পারতাম কত মজা হতো। যতদিন বেঁচে থাকবেন একে অপরের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রম্নতি করেন তারা। প্রয়াত সহপাঠীদের কথা বলতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন বক্তারা। একে অপরের পাশে থাকার আশা ব্যক্ত করেন বক্তারা।
স্মৃতি চারণ শেষে প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়। সবশেষে বন্ধুত্বের নির্দশন স্বরুপ সড়কের পাশে তিনটি ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ রোপন করা হয়।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আশা রানী দেব বলেন, এসএসসি পাশের পর অনেকের সাথে আর দেখা হয়নি। আজকে ৫১ বছর পর আবার সহপাঠীদের সাথে দেখা হলো। খুব ভালো লাগছে। সেই স্কুল জীবনের কথা মনে পড়ে গেছে। সবাইরই চলে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে। আজকে অনেক আনন্দের স্মৃতি নিয়ে গেলাম।
দেব গ্রামের মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় ২০ বছর পর সহপাঠী বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হকের সাথে এই অনুষ্ঠানে দেখা হলো। আরও অনেকের সাথে দীর্ঘ দিন পর দেখা হয়েছে। তাদের সাথে দেখা হয়ে খুব ভালো লাগছে। পুরানো স্মৃতি মনে পড়ে গেছে। আমি আবেগ আপ্লুত হয়ে গেছি।