স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও সবচেয়ে অবহেলিত রাস্তাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর থেকে মলাইশ পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়কটি। নির্মাণ ও পাকাকরণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে যুগ যুগ ধরে কেবল আশ্বাসই পেয়েছে গ্রামবাসী।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সরেজমিনে ৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য রাস্তাটি সিএনজি চলাচলের কারণে ধুলাবালিতে অন্ধকার, বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দে ভরা, কাঁচা অংশে বৃষ্টির পানিতে জমা গর্তে কাঁদা। আটকে যাচ্ছে সিএনজি, যাত্রীদের ঠেলতে হচ্ছে গাড়ি এমন চিত্র চোখে পড়ে।
এই গ্রামের মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, শাহজাদাপুর থেকে মলাইশ পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার রাস্তাটি বৃষ্টি-বাদলে কর্দমাক্ত হয়ে পুরো রাস্তা ও যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। অথচ এই রাস্তা দিয়েই প্রতিনিয়ত যাতায়াত করেন ইউনিয়নের শিশু, বৃদ্ধা, প্রসুতি নারী, অসুস্থ রোগী ও মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজগামী হাজার হাজার মানুষ। বর্ষাকালে রাস্তাটি রূপ নেয় চাষের জমিতে! তখন ওই এলাকার শাহজাদাপুর, নিয়ামতপুর ও ধাউড়িয়া এই তিন গ্রামের ২০ হাজার মানুষের ভোগান্তির সীমা থাকে না।
সড়কে চলাচল আঁটোরিকশা ও সিএনজি চালকেরা জানায়, গাড়িতে যাত্রী নিয়ে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করা খুবই দুর্ভোগের। কাদা মাড়িয়ে চলতে হয়। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে এবং গাড়ির যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যায়। কবে যে এ দুর্ভোগ শেষ হবে।
সড়কটি নির্মাণ ও পাকাকরণের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসন থেকে নির্বাচিত পাঁচবারের এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া, একই আসন থেকে নির্বাচিত দু’বারের সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, সরাইল উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মেম্বাররাসহ বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতারা আশ্বাসই দিয়েছেন এবং ভুক্তভোগী এলাকার সর্বস্তরের জনগণ নিজ নিজ অবস্থান থেকে রাস্তাটি নির্মাণ ও পাকাকরণে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। এছাড়াও জেলার সকল কলমসৈনিকরা স্থানীয় ও জাতীয় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদের মাধ্যমে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সড়কের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় এলজিইডি প্রকৌশলী মোঃ আনিছুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, রাস্তাটি পাকা করনের জন্য এস্টিমেট পাঠানো হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষেকিছু দিনের মধ্যে আশা করছি এ রাস্তার কাজ ধরতে পারবে।
এ ব্যাপারে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) মো. মেজবা উল আলম ভূইঁয়া বলেন, উপজেলার এলজিইডি পিচের ঢালাই সড়কে রূপান্তরিত করতে এ অর্থবছরের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে আমরা আশা করছি ইনশাআল্লাহ এবার রাস্তাটি কাজ হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ( সরাইল- আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মো. মঈন উদ্দিন মঈন বলেন, শাহজাদাপুর রাস্তার সকল কার্যক্রম শেষ হয়েছে। খুব শীঘ্রই এ রাস্তার কাজ হবে। তখন আর মানুষের দুর্ভোগ থাকবে না। ঈদের পর শাহজাদাপুর রাস্তার টেন্ডার হবে।