প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪, ১২:৩০ AM আপডেট: ২৩.০৫.২০২৪ ১:১৩ AM
ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম হত্যায় প্রধান সন্দেহভাজন ঝিনাইদহের কোটচাদপুর পৌর মেয়র শহিদুজ্জামান সেলিমের ছোট ভাই আমেরিকা প্রবাসি আক্তারুজ্জামান শাহিন।
পুলিশ জানায়, আখতারুজ্জামান শাহীন (খুনের মাস্টারমাইন্ড) এমপি আনারেরই ছোটবেলার বন্ধু। ৫ কোটি টাকার কন্টাক্টে খুনের দায়িত্ব দেয়া হয় ভাড়াটে খুনি আমানুল্লাহ পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা। এ ঘটনায় আমানুল্লাহ, সহযোগী তানভীর ও আমানুল্লাহর স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কলকাতার নিউটাউনে যে ফ্ল্যাটে এমপি আনোয়ারুলকে হত্যা করা হয় বলে খবর পাওয়া গেছে সেটির ভাড়াটিয়াও তিনি।
মাস্টারমাইন্ড আখতারুজ্জামান শাহীন
কলকাতা পুলিশের সিআইডি সূত্র জানায়, আখতারুজ্জামান শাহিনের বিরুদ্ধে চোরাকারবারি, হুন্ডি ব্যবসাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এমপি আজিমের সঙ্গে তার ব্যবসায়িক লেনদেন ছিলো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আখতারুজ্জামান শাহিন পালিয়ে গেছেন, না পুলিশের হাতে আটক তা আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
" align=
হত্যায় সরাসরি যুক্ত এক আসামি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, এই খুনে সুপারি (খুনের চুক্তি) ছিল ৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ধরা পড়া খুনির ভাগে মিলেছে কোটিখানেক। তবে পুলিশ এখনো এসব টাকার কোনো হদিস পায়নি।
পুলিশ জানায়, খুনের পরিকল্পনাকারী এমপি আনোয়ারুল আজীমের বন্ধু আক্তারুজ্জামান শাহীন। তাঁর সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। এমপি আনোয়ারুল আজীমকে খুন করার জন্য ভাড়াটে খুনি আমানউল্লাহর সঙ্গে চুক্তি করেন তিনি।
" align=
অবৈধভাবে সীমান্ত পার করে ভারতে নেওয়া হয় তাঁকে। তার নেতৃত্বে ৬ সদস্যের দল এই ‘কিলিং মিশনে’ অংশ নেয়। খুন করে লাশ টুকরো টুকরো করে গুম করে। পরে ১৫ মে দেশে ফিরে আসে।
বুধবার (২২ মে) মোহাম্মাদপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল।
" align=
তদন্ত সংশ্লিষ্টে জানা যায়, গ্রেপ্তার আমাউল্লাহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ছিলেন। পরে রাজশাহীতেই একটি হত্যা মামলায় ১৯৯১ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত জেল খাটেন। পরে ২০২০ সালে যশোরে অভয়নগর এলাকায় গণেশ হত্যা মামলায় ২০০০ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জেল খাটেন।
আনারকে হত্যা করতে তাঁর সঙ্গেই চুক্তি করেন আক্তারুজ্জামান। পাসপোর্ট না থাকায় বেনাপোল দিয়ে গত ৩০ এপ্রিল অবৈধভাবে সীমান্ত পার হয়ে কলকাতা নেওয়া হয় তাঁকে।
" align=
কলকাতা সিআইডির প্রধান অখিলেশ চতুর্বেদী সাংবাদিকদের জানান, পূর্ব কলকাতার নিউ টাউন অঞ্চলে যে ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজীম উঠেছিলেন, সেটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবগারি দপ্তরের কর্মকর্তা সন্দীপ কুমার রায়ের। সন্দীপের কাছ থেকে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন আখতারুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি। আখতারুজ্জামানই ওই ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজীমের থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
" align=
আনোয়ারুল আজীম আনার ঝিনাইদহ–৪ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত ১২ মে তিনি দর্শনা–গেদে সীমান্ত দিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। বরাহনগরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু ১৬ মে থেকে তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে না পারায় নিখোঁজ জানিয়ে ১৮ মে বরাহনগর থানায় জিডি করেন গোপাল বিশ্বাস।
বাবার হত্যার বিচার চাইছেন এমপি আনারের মেয়ে ডরিন
বুধবার সকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে আনোয়ারুল আজীম খুন হওয়ার খবর আসে। পরে দুপুরে ঢাকার ধানমন্ডিতে নিজের বাসায় পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল।
ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যতটুকু তথ্য তাঁরা পেয়েছেন, তাতে বাংলাদেশের লোকজনই পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে মনে হচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।