রূপগঞ্জে গাজী টায়ার কারখানায় আগুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন। কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, নিখোঁজদের কেউ তাদের কারখানার শ্রমিক নন। কারখানায় হামলা চালিয়ে লুটপাট কিংবা অন্য কোনো কাজে তারা এসেছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজ সকাল থেকেই আগুনে পুড়ে যাওয়া কারখানার সামনে নিখোঁজদের স্বজনেরা ভিড় জমাতে থাকেন। গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে লাগা আগুনে এখনও দাউদাউ করে পুড়ছে কারখানাটি। গত রাত থেকেই আগুন নেভাতে ঢাকার ফুলবাড়িয়া ফায়ার স্টেশন, ডেমরা, কাঁচপুর, আদমজী ইপিজেড ও কাঞ্চন ফায়ার স্টেশন থেকে যোগ দেয় ১২টি ইউনিট।
ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেন, কারখানাটির ছয়তলার একটি ভবনে আজ দুপুরের দিকেও আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ভবনগুলোর ভেতর যাওয়া যাচ্ছে না। আগুন নিভে গেলে তাঁরা ভবনের ভেতরে যাবেন। তখন বোঝা যাবে, কেউ পুড়ে মারা গেছেন কি না। এ পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
নিখোঁজদের খোঁজে কারখানার সামনে আসা স্বজনেরা জানান, গতকাল বিকাল থেকে বিভিন্ন সময়ে তাদের স্বজনেরা কারখানায় এসেছিলেন। তারা কেউই কারখানার শ্রমিক নন। পরে আর তাদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। রাত থেকে তাদের মুঠোফোনও বন্ধ।
কোলের শিশু নিয়ে কারখানার সামনে আসা গৃহবধূ রুবি বিলাপ করতে করতে বলেন, কারখানায় লুটপাট হইতাছে শুনে তার স্বামী সজিব কারখানায় আসে। রাত ৯টায় তার সাথে শেষবার কথা হয়, তখন সে কারখানায়ই ছিল। পরে আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজের তালিকায় আছেন- সিমেন্ট কারখানার শ্রমিক আবদুর রহমান (৩০), অ্যাগ্রো ফার্মের রাখাল মো. শাওন (১২), ভাঙারি ব্যবসায়ী মো. সুজন (২৮), তার বোন মাফিয়া বেগম (৩০), বোনের স্বামী মো. রতন (৩৫), বড়ালু এলাকার রাজমিস্ত্রি হাসান আলী (৩২), তার দুই বন্ধু অহিদ (৩২), রুবেল (৩০), তার ভাই সাব্বির সিকদারসহ (২৫), মুদিদোকানি শাহাদাত সিকদার (২৯) সহ আরও অনেকে।
স্থানীয়দের দাবি, গতকাল বিকেল ৩টার দিকে প্রায় ১ হাজার থেকে ১২শ’র মতো লোক লুটপাটের জন্য গাজী টায়ারে ঢুকে ভাঙচুর করতে থাকেন। একপর্যায়ে রাত ১০টার দিকে লুটপাট চলাকালীন আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন লাগা ভবনটিতে প্রচুর পরিমাণে কেমিক্যাল মজুদ ছিল।