বুধবার ২ জুলাই ২০২৫ ১৮ আষাঢ় ১৪৩২
বুধবার ২ জুলাই ২০২৫
‘গণপিটুনিতে’ লাশ হওয়া ব্যক্তিকে নিয়ে যা হল
ঢাকা প্রতিনিধি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১১:৫৭ AM
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মোড় এলাকার ব্যস্ত সড়কে মারধর করে ফেলে রাখা হয়েছিল এক ব্যক্তিকে। 

বুধবার সকালের এ ঘটনায় খবর পেয়ে সেখানে ট্রাফিকের সহায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালনরত তিন শিক্ষার্থী ছুটে গিয়ে দেখেন প্রায় মরমর অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছেন এক ব্যক্তি। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তার।

এরপর আরেক জায়গা ঘুরে সন্ধ্যায় ওই ব্যক্তির লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে পুলিশ লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

নিহত ব্যক্তির পরিচয় সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশও তার পরিচয় জানতে পারেনি।

নিহত ব্যক্তিকে হাসপাতালের পথে নিয়ে যাওয়া তিন শিক্ষার্থীর একজন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া মো. জিহাদ বলেন, “আমরা সকাল বেলা ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে ব্যাটারিরিকশা অভিযানে ছিলাম। এর ভেতরে একটা লোক এসে বলে সালাউদ্দীন পাম্পের সামনে একটা লোক পড়ে আছে। 

তখন আমি, আমার বন্ধু রাজু ও সাথী আক্তার মিলে সেখানে গিয়ে দেখি লোকটি প্রায় মরমর। আমাদের কাছে তখন তাকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার গাড়ি ভাড়াও ছিল না। আমরা কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা তুলে লোকটাকে সিএনজিতে তুলে ঢাকা মেডিকেলের উদ্দেশ্যে রওনা দিই।”

হাসপাতালে নিয়ে সময় যানজটের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “রাস্তায় সাংঘাতিক জ্যাম দেখে আমরা মিটফোর্ড হাসপাতালের পথে যাচ্ছিলাম। লোকটার অবস্থা খুব খারাপ, মুখ দিয়ে সমানে থুথুর মতো বের হচ্ছে। মিটফোর্ডে যাওয়ার পথে দয়াগঞ্জে ইবনে সিনার ওখানে তিনি মারা যান বুঝতে পেরে আমরা তাকে সিএনজি থেকে নামিয়ে পাশের একটা মসজিদ থেকে খাটিয়া নিয়ে তার ওপরে রাখি।”

পরের ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সিএনজিতে বসিয়ে রাখলে লাশ শক্ত হয়ে পরে আর সোজা হবে না ভেবে আমরা খাটিয়ায় শুইয়ে দিয়ে আনজুমান মফিদুল ইসলামে যাই তার দাফনের জন্য। সেখান থেকে বলা হয় এখন থানার অনুমতি লাগবে, তারা থানায় যেতে বলে। পরে আমরা গেণ্ডারিয়া থানায় গেলাম। খবর শুনে থানার ওসি, কয়েকজন এসআই আসেন। তারা এসে লাশ ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়ে দেয় আর শ্যামপুর থানায় খবর দেয়।

“পরে শ্যামপুর থানার পুলিশ এসে জানায় ঘটনাস্থলটা যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় পড়েছে। পরে ওখানকার পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে।”

কীভাবে এই ঘটনা ঘটল জানতে চাইলে মো. জিহাদ বলেন, তাকে যাত্রাবাড়ীর এক ব্যক্তি বলেছেন মারা যাওয়া লোকটিকে যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় চোর সন্দেহে হাত-পা বেঁধে পেটাতে দেখেছেন তিনি। এরপর তাকে রাস্তার ওপর ফেলে রাখা হয়।

যাত্রাবাড়ীর স্থানীয়রা বলেন, যাত্রাবাড়ী পাবলিক টয়লেটের সামনে মোবাইল ছিনতাইকারী সন্দেহে ওই ব্যক্তিকে পিটিয়ে রাস্তায় ফেলে রাখে স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মাইনুল ইসলাম বলেন, “প্রাথমিকভাবে জানা গেছে পূর্ব শত্রুতার জের হিসেবে এই ঘটনা ঘটেছে। আমাদের পুলিশ সদস্যরা এটি নিয়ে কাজ করছে।”
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত