বুধবার ২ জুলাই ২০২৫ ১৮ আষাঢ় ১৪৩২
বুধবার ২ জুলাই ২০২৫
কেন্দুয়ায় ৩৬ মণ্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে
কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: সোমবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৪, ৪:২৮ PM
আর একদিন পর অনুষ্ঠিত হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। এর আয়োজনের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ। 

এউপলক্ষে ৩৬টি মণ্ডপে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে তবে, গত বছর ৫১টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হলে এবছর পূজা মণ্ডপের সংখ্যা ১৫টি কমেছে। 

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বন্যা, পারিবারিক কারণে এবছর পূজা উদযাপন করতে পারছে না বলে জানান মন্দির কর্তৃপক্ষরা। 

কেন্দুয়া পূজা উদযাপন পরিষদের সূত্রে জানা যায়, এবছর যে পূজামন্ডপ পূজা উদযাপন হচ্ছে না তারমধ্যে, কেন্দুয়া পৌরসভার
১.সাউদপাড়া রাধাগোবিন্দ মন্দির 
২.আইথর মেস্তরিবাড়ী দূর্গামন্দির, 
আশুজিয়া ইউনিয়নে
৩.গোবিন্দপুর দূর্গা মন্দির ৪.সিংহেরগাও করবাড়ি দূর্গা মন্দির
দলপা ইউনিয়নে 
৫ বুধপাশা দূর্গা মন্দির গড়াডোবা গড়াডোবা ইউনিয়নে 
৬.বাঁশাটি দূর্গা মন্দির
৭.বান্দনাল দক্ষিণ পাড়া দূর্গা মন্দির
গন্ডা ইউনিয়নে 
৮.ভাটলারা পূর্জা মন্দির 
৯.গাড়াদিয়া মজুমদারবাড়ী দূর্গা মন্দির
সান্দিকোনা ইউনিয়নে 
১০.সাহিতপুর বাজার রবিদাস দূর্গা মন্দির
বলাইশিমুল ইউনিয়নে 
১১.রাজীবপুর সরকারবাড়ী দূর্গা মন্দির
রোয়াইলবাড়ী ইউনিয়নে
১২.ফতেপুর কর্মকারবাড়ী মন্দির
পাইকুড়া ইউনিয়নে 
১৩.পেমই মেস্তরিবাড়ী পূজা মন্দির
১৪.পেমই ভোমিকবাড়ী পূজা মন্দির এবং 
মোজাফরপুর ইউনিয়নে 
১৫.মোজাফরপুর পূর্বপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির। 
এখানে উল্লেখ্য উপজেলা কান্দিউড়া ও মোজাফরপুর  ইউনিয়নে এবছর দুর্গাপূজা পালন করছে না বলে জানান কেন্দুয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ।  

এবছর দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত করতে না পারা পৌরসভার সাউদপাড়া রাধাগোবিন্দ মন্দিরের সভাপতি নয়ন গুণ ও কান্দিউড়া ইউনিয়নের তাম্বুলিপাড়া দূর্গা মন্দিরের সভাপতি শ্রীবাস বর্মণকে প্রশ্ন করা হলে তারা  জানান, আমাদের লোকবলসহ আর্থিক সমস্যার কারণে এবছর আমরা পূজা উদযাপন করতে পারছি না। 

উপজেলায় পৌরসভা, আশুজিয়া, দলপা, গড়াডোবা, গন্ডা, সান্দিকোনা, মাসকা, বলাইশিমুল, নওপাড়া, চিরাং, রোয়াইলবাড়ী ও পাইকুড়া ইউনিয়নে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। ইউনিয়ন ও পৌরসভায় দূর্গাপূজার প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। এর মধ্যে উপজেলায় গতবারের চেয়ে পৌরসভাসহ প্রতিটি ইউনিয়নে পূজা মণ্ডপের সংখ্যা কমেছে। 

উপজেলা প্রশাসক কার্যালয়ের তথ্যমতে, উপজেলায় ৩৬টি মণ্ডপের মধ্যে, ১৩টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। 

কেন্দুয়ায় প্রতিমা তৈরির ভাস্কররা এখন ব্যস্ত সময় পার করে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রতিমা নির্মাণের বিভিন্ন ধাপে খড় এবং মাটির কাজ শেষ হওয়ার পর এখন শেষে রঙতুলির আঁচড়। দুর্গা প্রতিমা ছাড়াও লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুরসহ ১২টি প্রতিমা তৈরি করা হচ্ছে।

পূজায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো প্রকার গুজব ছড়ালে আইন শৃংখলা বাহিনীকে তদন্তের মাধ্যমে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য অনুরোধ জানান সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দ পাশাপাশি শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে কেন্দুয়া উপজেলা  প্রশাসন এবং পুলিশের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন তারা। 

পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি সম্পর্কে কেন্দুয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অনিল চন্দ্র ভদ্র বলেন, গত বছর ৫১টি পূজা মন্ডপে পুজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল,  এবছর ১৫ পূজা মন্ডপ কমে ৩৬ মন্ডপে পূজা হবে। কারণ পারিবারিক সমস্যা,বন্যা এবং দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্ব গতির জন্য কমেছে বলে আমি মনে করি।

কেন্দুয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সজল কুমার সরকার বলেন, গতবার ৫১ টি  মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল,তবে এবার ৩৬ পূজা মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।যা গতবারের চেয়ে ১৫টি কম।কারণ হিসেবে তিনি বলেন মা বাবা মারা যাওয়া, মন্দির পূণ: নির্মাণ, হাওর এলাকায় বন্যা, পারিবারিক ভাবে যারা আগে পুজা করতেন এবার তাদের অনাগ্রহ সহ নানা কারণে পূজা মন্ডপের সংখ্যা কমেছে।

তিনি আরো বলেন,  কেন্দুয়া পূজা উদযাপন পরিষদ স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে প্রতিটি পূজা মন্ডপের খোঁজ খবর নিচ্ছি। আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দল সেবা দেয়ার জন্য তৈরি আছে।তাছাড়া প্রতিটি পূজা মন্ডপেই শান্তি -শৃঙ্খলা বজায় রেখে পূজা উদযাপিত হবে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার অংশগ্রহণে বাঙালি সম্প্রীতি আরো সুদৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ হবে প্রত্যাশা করি।আশা করছি আগামী বছর গত বছরের তুলনায় আরো বেশি পুজা মন্ডপেই পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

কেন্দুয়া উপজেলা প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুরক্ষিত রাখতে দুর্গাপূজা সুষ্ঠুভাবে পালনের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার পূজার সময় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপের ঘোষণা দেন।

প্রতিটি পূজামণ্ডপে থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা, পাশাপাশি আনসার বাহিনীর সদস্যরাও নিয়োজিত থাকবে। এছাড়াও সেনাবাহিনীসহ যৌথবাহিনী পূজা চলাকালীন সময় টহল দেবে। প্রতিটি মণ্ডপে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা বসানো হবে এবং আযান ও নামাজের সময় বাদ্যযন্ত্র বন্ধ রাখা হবে।

কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমান জানান, আসন্ন দুর্গাপূজার সর্বাত্মক প্রস্তুতি  সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি সুষ্ঠু ও শান্তি পূর্ণ ভাবে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত