কৃষকরা সঠিক মাত্রায় সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করায় দেশের কৃষিজমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে। বাড়ছে উৎপাদন ব্যয়, কমছে ফসলের পরিমাণ। পরিবেশেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
রাজধানীর ফার্মগেটে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের (এসআরডিআই) বার্ষিক কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মাটি পরীক্ষার ফলাফল বর্ণনায় বিজ্ঞানীরা এসব তথ্য তুলে ধরেন। সেমিনারে বিজ্ঞানীরা মৃত্তিকার বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত, গবেষণা, কৃষি সেবা, গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
দু'দিনব্যাপী সেমিনারটি আজ (সোমবার) শেষ হয়। এর আগে গতকাল উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, অনেক জায়গায় ডিলাররা ভেজাল সার সরবরাহ করছে। এতে জমির স্বাস্থ্য নষ্ট হচ্ছে, উৎপাদন কমে যাচ্ছে।
সচিব বলেন, মানুষের শরীরের মতোই মাটিরও স্বাস্থ্য থাকতে হবে। তা না হলে উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটবে। কৃষির বাজেটের ৭০ শতাংশই সারে ভর্তুকি। সেখানে সার প্রয়োগ কমাতে পারলে রাষ্ট্রের বিপুল অর্থ বাঁচবে।
তিনি আরও বলেন, চাষিরা অনেক সময় লিজ নেওয়া জমিতে অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক ব্যবহার করেন মূলধন ফেরত পেতে গিয়ে। এতে জমির স্থায়ী ক্ষতি হচ্ছে। এই প্রবণতা রোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, কৃষকরা কৃষিবিদদের পরামর্শ না নিয়ে প্রায় ৩-৪ গুণ বেশি সার প্রয়োগ করছেন। রোগবালাই ঠেকাতে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের ফলে উপকারী পোকামাকড়ও মারা যাচ্ছে, যা মাটির স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এমনকি ব্যবসায়ীরা গুড়াচুনকে সালফার হিসেবে কৃষকদের কাছে বিক্রি করে প্রতারণাও করেছে, ফলে গাছের পাতা পুড়ে যাচ্ছে।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন এসআরডিআই-এর মহাপরিচালক ড. বেগম সামিয়া সুলতানা। বিশেষ অতিথি ছিলেন সম্প্রসারণ উইং এর যুগ্ম সচিব দীপঙ্কর বিশ্বাস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) ড. নাজমুন নাহার করিম। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের গবেষণা উইং এর অতিরিক্ত সচিব মোঃ আবু জুবাইর।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর সাবেক মহাপরিচালক ডঃ মোঃ শহিদুল ইসলাম, এসআরডিআই-এর সাবেক পরিচালক মোঃ মাইনুল আহছান। সেমিনারে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকগণ, সাবেক মহাপরিচালকবৃন্দ, মৃত্তিকা বিজ্ঞানীরাসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে মো: মামুনুর রহমান, ড. নুরুল হুদা আল মামুন, ড. মো: ফারুক হোসেনসহ মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।