শুক্রবার ১১ জুলাই ২০২৫ ২৭ আষাঢ় ১৪৩২
শুক্রবার ১১ জুলাই ২০২৫
ছবিটা নিয়ে আমি এক্সসাইটেড
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০২২, ৬:২২ PM আপডেট: ২৯.০৭.২০২২ ৮:২৯ PM
নাজিফা তুষি বর্তমান ব্যস্ততা, মুক্তির প্রতীক্ষায় থাকা চলচ্চিত্র, ওয়েব ফিল্মে অভিনয় ও অন্যান্য প্রসঙ্গে বাংলাদেশ বুলেটিনের সঙ্গে কথা বলেছেন। 
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তৌফিকুল ইসলাম

বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে বলুন...
আমি আসলে কোনো কাজ শেষ হওয়ার আগে সেটি নিয়ে আলোচনা করতে চাই না। কোনো কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর বলতে আমার আরাম লাগে। এতে টিমও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে, আমিও করি। সামনে আমার বেশ কিছু কাজ আছে। এখন আমি সেগুলোর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। সেটা ওয়েব কনটেন্ট এবং সিনেমাই হবে। নেক্সটে আমার দুটো কাজ রিলিজ হবে, একটা হচ্ছে সিনেমা ‘হাওয়া’ , আর ঈদে চরকির ওয়েব সিরিজ ‘সিন্ডিকেট’ রিলিজ হবে। এটা শিহাব শাহীন বানিয়েছে। এ দুটো আপকামিং প্রজেক্ট দর্শক দেখতে পাবে। তারপর অন্য কাজগুলো শেষ হবে, রিলিজ হবে। সেগুলো নিয়ে পরে কথা বলতে চাই।

‘হাওয়া’ নিয়ে কি বলবেন? এটা নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে...
এখন পুরোদমে ‘হাওয়া’ ছবির প্রমোশনে যুক্ত আছি, থাকব। ছবিটা নিয়ে আমি এক্সসাইটেড, কারণ এ ছবিটা অনেক আগে রিলিজ পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোভিডের কারণে আমরা অনেক পিছিয়ে গেলাম। তারপরও সবাই যে এত আগ্রহ নিয়ে এ ছবিটা দেখার জন্য অপেক্ষা করছে, এটা আমাকে খুব আনন্দ দিচ্ছে। 

এ ছবিটা কি নতুন হাওয়া যোগ করবে?
নতুন হাওয়া যোগ করবে কী না সেটি তো বলতে পারছি না। সবাই তার কাজকে পছন্দ করে এবং কাজ প্রকাশ হওয়ার আগে অডিয়েন্সের সঙ্গে কমিউনিকেট করে। যেটা বলব যে এটা আমার কাজ বলে না, আমার কাছে মনে হয় এ সিনেমাটা একটা ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী নির্মাণ করা হয়েছে। শুধু গল্প বলার ধরন ও অ্যাকটিং নয়, এ সিনেমার প্রত্যেকটা জিনিস, ভিজ্যুয়াল, সাউন্ড ডিজাইনিং, এডিটিং, কালার গ্রেড, সিনেমা ফটোগ্রাফিসহ সবকিছুতেই আন্তর্জাতিক একটা ছাপ আছে। মানে আন্তর্জাতিক যেসব ফিল্ম আমরা দেখে থাকি, সে স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন করা হয়েছে।

‘নেটওয়ার্কেও বাইরে’ মুক্তি পাওয়ার পর আপনার দর্শক চাহিদা তৈরি হয়েছে, পরবর্তী কাজগুলোতে দর্শক আপনাকে কিভাবে পাবে?
আমি রেগুলারই কাজ করছি, যেহেতু আমি টেলিভিশন প্রোডাকশন করি না। আমার সব কাজই ওয়েব কনটেন্ট আর সিনেমা রিলেটেড, রেগুলার কাজ করি, অনেক কাজ করি না। বাট একটা কাজের ধারার মধ্যে থাকি। দর্শক আমাকে দেখতে পাবে, রেগুলারই আমার কাজ দেখতে পাবে। আপনি বলতে পারেন ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ এর পর আমার এখনও কোনো কাজ রিলিজ পায়নি কারণ আমার অ্যাকসিডেন্ট হয়েছিল। অ্যাকসিডেন্টের কারণে আমি তিন মাস বেড রেস্টে থেকেছি। তখন আমি কাজ করতে পারিনি, কিন্তু আমি এ বছর থেকে পুরোদমে কাজ করছি। সুস্থ হওয়ার পর থেকে কাজ করছি। সো, এখন আর মনে হয় না অডিয়েন্স আমার কাজ নেই দেখে হতাশ হবে। তারা রেগুলার দেখতে পাবে।

‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ এখনও মানুষ দেখছে, গানের মাধ্যমে হলেও আপনাকে দর্শক ইউটিউবে দেখছে, এটার রেশ কি কাজ করে আপনার মধ্যে?
আসলে প্রত্যেকটা কাজই যখন করি, আমি দেখেছি আমার কলিগ, ডিরেক্টর বা টিম তাদের শতভাগ চেষ্টাটা দিয়েই কাজটা করে। এখন কোন কাজটা অডিয়েন্স পছন্দ করবে সেটা তো আমরা বলতে পারি না। কোনো কাজ পছন্দ করলে, অ্যাপ্রিশিয়েট করলে অবশ্যই সেটা খুব ভালো লাগে, আনন্দ লাগে। ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ও তেমন, আমি ব্যক্তিগতভাবে আশা করিনি কাজটা তেমন আলোচিত হবে। মানুষ এত পছন্দ করবে, কিন্তু যখন এটা রিলিজ হলো এবং আমরা আশেপাশে ব্যাপক সাড়া পেলাম, এবং এটার গান থেকে শুরু করে কাস্টিং, গল্প সবকিছুই মানুষ পছন্দ করলো। ইনফ্যাক্ট চরকির প্রথম আলোচিত কনটেন্ট ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ যেটা আমরা চরকির কাছ থেকে রিপোর্ট পেয়েছিলাম। সবচেয়ে বেশি মানুষ পছন্দ করেছে এবং দেখেছে, সবচেয়ে বেশি ভিউজ ছিল ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’। এটা ভালো লাগে এবং পরবর্তী কাজে উদ্দীপনা তৈরি করে। যখন অডিয়েন্স পছন্দ করে তখন একটা স্ট্যান্ডার্ড কাজ অডিয়েন্সকে দিতে ইচ্ছে করে। পরবর্তী কাজগুলোতেও সেরকম চেষ্টা থাকবে, তবে এটা বলতে পারি না কোন কাজটা দর্শকের খুব পছন্দ হবে। দেখা গেল যে, আমার খুব একটা পছন্দের কাজ, কিন্তু অডিয়েন্স সেটা দেখল না। আবার আমি খুব একটা এক্সপেক্ট করিনি কাজটাতে, কিন্তু দেখা গেল সেটা দর্শক খুব পছন্দ করলো। সো, আসলে আমি চাইব প্রত্যেকটা কাজ অডিয়েন্স কানেক্ট করুক এবং পছন্দ করুক। এবং  প্রতিটা কাজেই সেম ডেডিকেশন ও সেম ভালোবাসা দিয়েই যত্ন করে কাজটা করব।

অ্যাকসিডেন্টের ফলে সত্যি সত্যি নেটওয়ার্কের বাইরে অর্থাৎ মৃত্যুর কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন, সুস্থতার জন্য দর্শকের অনেক ভালোবাসা পেয়েছিলেন, বেড রেস্টের সে সময়টাতে কেমন অনুভব হয়েছে?
আমি চাই না কারও জীবনে এ ধরনের অ্যাকসিডেন্ট বা শারীরিক বিপর্যয় হয়ে পড়ে থাকুক। এটা অনেক বাজে একটা সময়। আমি খুব খারাপ একটা সময় কাটিয়েছি, কিন্তু আশেপাশের মানুষদের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। তারা অনেক টেক কেয়ার করেছে, সাপোর্ট করেছে, কিন্তু দিন শেষে তো নিজের সঙ্গে নিজেই ফাইট করতে হয়। সে সময়ে আমার জীবন ও কাজ সম্পর্কে একটা ধারণা হয়েছে। আমার মনে হয়েছে সে অ্যাকসিডেন্টটা না হলে আমার হয়তো জীবন সম্পর্কে এ ধারণা বা বোধটা জাগ্রত হতো না। যা-ই হয় মঙ্গলের জন্যই হয়, একটা অ্যাকসিডেন্ট আমার জীবন থেকে কিছুটা সময় নিয়ে গেলেও বোধের মাধ্যমে অনুভবের মাধ্যমে আমাকে অনেক কিছু ফিরিয়েও দিয়েছে। আমার কাছে মনে হয় যে এটাও এক ধরনের প্রাপ্তি।

বাংলাদেশের ওয়েব ফিল্ম নিয়ে আশাবাদ...
ওটিটি আসার কারণে আমাদের অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনেক কনটেন্ট হচ্ছে। অনেক পারফর্মাররা কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে। অনেক নতুন ডিরেক্টররা তাদের কাজকে একটা স্ট্যান্ডার্ড বাজেটের মধ্যে তৈরি করতে পাচ্ছে। এটা আমি এক ধরনের রেভুলিউশন বলব। এবং এটা আমার কাছে মনে হয় যে, আমাদের ভিজ্যুয়াল মিডিয়ায় এটা একটা খুৃব ভালো সময়। দেখেন এখন নাটকে সময় ও বাজেট স্বল্পতার কারণে একটা মিনিমাম স্ট্যান্ডার্ডের কাজ হয়, কিন্তু ওটিটিতে টিম, এমনকি ডিরেক্টরররা একটা হ্যান্ডসাম অ্যামাউন্ট পায়। এবং কাজটাতে কোয়ালিটি এনশিউর করতে পারে। লাস্ট দু বছর আমাদের ওটিটিতে অনেক ভালো ভালো কনটেন্ট হয়েছে। নতুন অনেক পারফর্মাররা যাদের আমরা রেগুলার টেলিভিশনে দেখি না, কিন্তু অনেক নতুন পারফর্মার তৈরি হয়েছে। তাদের মধ্যে সম্ভাবনাটা আছে। এটা অবশ্যই ভালো একটা দিক, ওটিটির সুবাদে আমাদের অভিনয় ও কনটেন্ট আরও কোয়ালিটিফুল হচ্ছে এবং একটা রেগুলার কাজের প্রক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। 

দর্শকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন?
আপনারা এখন চাইলেই নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইমে ওয়ার্ল্ডের বেস্ট বেস্ট কনটেন্ট দেখতে পাচ্ছেন। নাটক তো টেলিভিশন ইউটিউবে আপনারা অনেক কিছু ফ্রি দেখেন, কিন্তু আমাদের দেশীয় প্ল্যাটফর্মে এখন অনেক ভালো কাজ হচ্ছে। এখন হয়তো মানুষ অনেক সময় সিনেমা হলে যেতে চায় না। আপনারা যদি আমাদের কাজকে অ্যাপ্রিশিয়েট না করেন, তাহলে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়াবে না। আপনাদের জন্যই তো আমরা কাজ করি, আমরা যারাই অভিনয় করি, সিনেমা বানাচ্ছে বা গান করছে। অডিয়েন্স যদি পাশে থাকে তাহলে আমাদের কাজের ফ্লো আরও বেড়ে যাবে, আশেপাশের ইন্ডাস্ট্রিগুলোর মতো নিজস্ব একটা স্ট্রং ইন্ড্রাস্ট্রি ডেভেলপড হবে।  দর্শকদের উদ্দেশ্যে এটাই বলব আপনারা আরাম করেও বাসায় বসে ভালো কনটেন্ট দেখতে পারেন। আপনারা যদি রেগুলার সাবস্ক্রাইব করেন এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো ভিজিট করেন, আপনাদের পছন্দের কনটেন্টই দেখুন, যার অভিনয় ভালো লাগে তার অভিনয়ই দেখুন, এতে করে আমাদের কালচারটা ডেভেলপড হবে। নিজস্বভাবে ইন্ডাস্ট্রির গ্রোথ হবে। আপনারা ভালো কনটেন্ট দেখুন, সেটা টেলিভিশনে হতে পারে, ওটিটিতে হতে পারে, সিনেমা হলে হতে পারে। দেখুন এবং আলোচনা করুন। তাহলে আমাদের নিজস্বতা তৈরি হবে।

সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ।

-বাবু/ফাতেমা

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত