ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের সাতপাড়া এলাকায় আধা কিলোমিটার খাল খননের অভাবে ১০০ বিঘা জমির চাষাবাদ আটকে গেছে। পানি সেচের অভাবে অর্ধশত চাষির জমিতে বোরো চাষ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।জমিতে পানি দিতে না পারার কারণে এক সময়ের সবুজ ফসলের মাঠ এখন এখন বিরান ভূমিতে পরিণত হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
অথচ গত মৌসুমেও এসব জমিতে ২ ফসল আবাদ করে ফসল ফলিয়ে ছিলেন কৃষকরা। পানির অভাবে জমিতে আবাদ করতে না পেরে হতাশায় ভুগছেন কৃষকেরা। খালটি খনন করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের কাছে হস্তক্ষেপ চান এলাকাবাসী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতের ত্রিপুরা থেকে দক্ষিণ ইউনিয়নের কেন্দুয়াই হয়ে সাতপাড়া দিয়ে বয়ে যাওয়া জাজি নদীর পুরাতন সুইস গেইট থেকে ৩০/৩৫ বছর আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বের একটি খাল খনন করে কৃষকেরা। ওই খাল থেকে ডিজেল পাওয়ার পাম্ব মেশিন দিয়ে দিয়ে প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে পানি নেওয়া হতো।
এভাবেই পানি নিয়ে বছরের পর বছর চাষাবাদ করে আসছেন তারা। জমিতে দুই ফসল হতো। কিন্তু গত ২/৩ বছর থেকে পলি মাটি জমে খালটি অনেকটা ভরাট হয়ে পানি চলাচলের অনুপযোগি হয়ে গেছে। পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া চাষাবাদও বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিগত বছর বহু কষ্টে পানি নিয়ে কিছু জমি চাষাবাদ করা হলেও এবছর একে বারেই চাষ করার উপায় নাই। এবার অনাবাদি থাকার আশঙ্কা করছেন চাষিরা। চাষাবাদের সুবিধার্থে খালটি খনন করার দাবী জানান কৃষকেরা। এজন্য তারা আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা, কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগমসহ দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ জালাল উদ্দিনের কাছে মৌখিক এবং লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। সাতপাড়া গ্রামের কৃষক ও সাবেক ইউপি মেম্বার মোঃ ফালু মিয়া বলেন, বিগত ৪০ বছর যাবত আমি জমিতে চাষাবাদ করছি। চৈত্র মাসের দিকে পানি পাই না। এবছর এখন থেকেই পানি পাচ্ছি না। খালটি খনন করে দেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কৃষি অফিসার ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের দ্বারস্থ হয়েছি তবে এখনো কোন আশার আলো দেখতে পাচ্ছি না।
কৃষক হামদু মিয়া বলেন, খালটা ভরাট হয়ে কৃষকদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। দ্রত খালটি খনন করে দিলে কৃষকদের অনেক উপকার হবে। এ ব্যপারে কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, আমি আপনার মাধ্যমে বিষয়টি অবগত হয়েছি। বোরো চাষের মৌসুম চলে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে আমি বিএডিসি (সেচ) সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা মুঠো ফোনে বাংলাদেশ বুলেটিনকে বলেন, বোরো মৌসুমে আমাদের সব জায়গায় যেন সেচের পানির ব্যবস্থা থাকে সে জন্য আমরা বিএডিসি (সেচ) এবং কৃষি কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি। পূর্ববর্তী যত সেচের ব্যবস্থা আছে সেগুলি যেন কার্যকর থাকে সে নির্দেশনাও দেওয়া আছে। এই বিষয়টিও আমরা বিএডিসি’র নজরে নিয়ে আসব এবং খুব দ্রতই যেন সেচের আওতায় নিয়ে আসতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বাবু/জেএম