যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের একদিন পরেই ক্ষিপ্ত চীন দ্বীপটির উপকূল-জুড়ে যে নজিরবিহীন সামরিক মহড়া শুরু করেছে তাতে রকেট এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ তাজা গোলাবারুদ ব্যবহার করা হচ্ছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় মাধ্যমে যেসব ফুটেজ প্রচার করা হচ্ছে তাতে মহড়ায় যুদ্ধবিমান, রণতরী এবং ভূমি থেকে নিক্ষেপ করা হয় এরকম সমরাস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে।
তাইওয়ান বলছে, তাদের উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের আশেপাশে চীন বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছে। এর জবাবে তাইওয়ান তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করে রেখেছে। তাইপে বলছে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, তাদের এতো কাছে সমুদ্রে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে চীন "উত্তর কোরিয়াকে অনুকরণ" করছে।
এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, চীনের এই মহড়া তাইওয়ানের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে এবং এই দ্বীপের "স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে" রক্ষায় এগিয়ে আসার জন্য তারা অন্যান্য দেশগুলোর প্রতি আহবান জানিয়েছে। স্বশাসিত এই দ্বীপটিকে ঘিরে চীন ওই অঞ্চলে এর আগে কখনো এতো বড় সামরিক মহড়া চালায় নি।
তাইওয়ানের সবচেয়ে কাছে সমুদ্রের যে এলাকায় রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে তা এই দ্বীপটি থেকে মাত্র ১২ মাইল দূরে।
তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চীনের এই সামরিক মহড়ার তীব্র নিন্দা করে বলেছে, এটি "অযৌক্তিক তৎপরতা এবং এর ফলে আঞ্চলিক শান্তি ঝুঁকির মুখে পড়েছে।"
তাইওয়ানের অভিযোগ, এই সামরিক মহড়ার মাধ্যমে চীন দ্বীপটিকে অবরোধ করে ফেলার চেষ্টা করছে। এর ফলে কোনো জাহাজ ও বিমান তাইওয়ানে ঢুকতে এবং বের হতে পারছে না।
তাইপে থেকে বিবিসির সংবাদদাতা রুপার্ট উইংফিল্ড-হেইস বলছেন তাইওয়ানকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তোলাই এই মহড়ার লক্ষ্য।
তাইওয়ান প্রণালীর এমন সব জায়গায় চীনা এই মহড়া চলছে যা বিশ্বের ব্যস্ততম সমুদ্রপথ যেখানে দিয়ে প্রতিদিন বহু জাহাজ চলাচল করে।
ব্লুমবার্গের এক পরিসংখ্যানে বলা হচ্ছে, সারা বিশ্বে কন্টেইনারবাহী যতো জাহাজ চলাচল করে তার প্রায় অর্ধেক এবং বড় বড় জাহাজগুলোর ৮৮ শতাংশই তাইওয়ান প্রণালী দিয়ে যাওয়া-আসা করে।
সংবাদদাতারা বলছেন এই মহড়ার ফলে তাইওয়ান থেকে এবং তাইওয়ানের দিকে বিমান ও জাহাজ চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এর ফলে বিমান ও জাহাজ চলাচলের পথ পরিবর্তন করতে হচ্ছে। তাইওয়ান বলছে এই অবরোধ তাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন।
বাবু/প্রিন্স