সোমবার ৭ জুলাই ২০২৫ ২৩ আষাঢ় ১৪৩২
সোমবার ৭ জুলাই ২০২৫
পুলিশের শীর্ষ তিন পদে কারা
তৌফিকুল ইসলাম
প্রকাশ: বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১০:০৬ PM আপডেট: ০৭.০৯.২০২২ ১০:১২ PM
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) সহ গুরুত্বপূর্ণ তিনটি শীর্ষ পদ আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যে শূন্য হচ্ছে। কারা এসব পদে আসছেন, তা নিয়ে এখনই সব মহলে জল্পনাকল্পনা শুরু হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এসব পদ নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক মহলেও আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। 

বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩০ সেপ্টেম্বর। অন্যদিকে ৩০ অক্টোবর শেষ হচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শফিকুর রহমানের চাকরির মেয়াদ। ১২ জানুয়ারি শেষ হবে র‌্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের চাকরির মেয়াদ। পুলিশ প্রশাসনকে এই তিন শীর্ষ পদ নিয়ন্ত্রণ করে এবং নির্বাচনের আগে তিনটি পদই সরকারের জন্য অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই পদগুলোতে কারা আসছে তা নিয়ে বিভিন্ন মহলের আগ্রহ রয়েছে।

আইজিপি
নতুন পুলিশ মহাপরিদর্শক কে হবেন তা নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। চৌকস ও সরকারের আস্থাভাজন হওয়ায় বর্তমান আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদের চাকরির মেয়াদ চুক্তির ভিত্তিতে দুই বছর বাড়ানো হতে পারে। এ নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে। তবে চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধি করার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারে রয়েছে। তবে বর্তমান আইজিপি বেনজীর আহমেদকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া না হলে ৩১তম আইজিপি হিসেবে দেখা যাবে নতুন মুখ। এক্ষেত্রে যারা আলোচনায় রয়েছেন-

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন (র‌্যাবের ডিজি) : বাংলাদেশ পুলিশের ৩১তম আইজিপি হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। অষ্টম বিসিএস ব্যাচের এই কর্মকর্তার আগামী ১১ জানুয়ারি অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে। সৎ পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে বাহিনী ও সরকারের কাছে  সুনাম থাকা এই কর্মকর্তাকে আইজিপি হিসেবে নিয়োগ দিতে পারে সরকার। বাংলাদেশ পুলিশে অসামান্য অবদান ও অনন্য সেবাদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম) ও প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম) পদকে ভূষিত হয়েছেন। গত বছরের ১৮ অক্টোবর চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

এস এম রুহুল আমিন (অতিরিক্ত আইজিপি, এটিইউ প্রধান) : এস এম রুহুল আমিনকে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজমের প্রধান হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। এর আগে তিনি  পুলিশ সদর দপ্তরে অতিরিক্ত আইজিপি (লজিস্টিকস অ্যান্ড অ্যাসেট অ্যাকুইজিশন) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি বর্তমানে পুলিশের জ্যেষ্ঠতম কর্মকর্তা। অত্যন্ত সৎ পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে বাহিনী ও সরকারের কাছে এস এম রুহুল আমিন-এর অনেক সুনাম রয়েছে। তিনি ১২তম বিসিএস ব্যাচের মেধা তালিকায় প্রথম। তাছাড়া কর্মজীবনে কোনো প্রশিক্ষণ বা পরীক্ষায় কখনো দ্বিতীয় হননি।

এস এম রুহুল আমিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে স্নাতকসহ (সম্মান) স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। সারদায় মৌলিক প্রশিক্ষণ কোর্সে ‘সর্ব বিষয়ে সেরা পারফর্মার’ হন তিনি। রুহুল আমিন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ডিসি, সিলেট জেলার এসপি, ঢাকায় সিআইডির এসএস, চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি এবং রেলওয়ে রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) কমিশনার হিসেবে যোগদান করে বরিশালে পুলিশি সেবার নবদিগন্তের সূচনা করেন। পুলিশ বাহিনীতে মেধাবী ও সৎ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত এস এম রুহুল আমিন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আইভরিকোস্ট ও দক্ষিণ সুদানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের হয়ে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।

মোহাম্মদ কামরুল আহসান (অতিরিক্ত আইজিপি, প্রশাসন) : আইজিপি হিসেবে আলোচনায় আছেন অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান। তিনি ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ে (এমবিএ) স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯১ সালে বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারে যোগদান করেন। ডিএমপির এডিসি, ফেনী জেলার অতিরিক্ত এসপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া শরীয়তপুর, চট্টগ্রাম ও যশোর জেলার এসপি, পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি (সংস্থাপন এবং ট্রেনিং), সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি এবং রেলওয়ে রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মো. কামরুল আহসান জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনের ‘পুলিশ অ্যাডভাইজার’ হিসেবে সিয়েরালিওন ও সুদানে দায়িত্ব পালন করেন। সাম্প্রতিক সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে রদবদল করেছে সেই রদবদলে মো. কামরুল হাসানকে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের প্রধান থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শকের (প্রশাসন) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুলিশের আইজিপির পরেই এটি পুলিশের শীর্ষ পদ। সে বিবেচনায় কামরুল আহসান এগিয়ে গেলেন কিনা সেটি নিয়েও কোনো কোনো মহল প্রশ্ন তুলছে। 

র‌্যাব
র‌্যাবের মহাপরিচালকের চাকরির মেয়াদ আগামী ১১ জানুয়ারিতে শেষ হবে। এই পদে কে নিয়োগ পাবেন, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়নি। তবে পুলিশের অন্য শীর্ষ পদের মতোই র‌্যাবের মহাপরিচালক পদে কারা নিয়োগ পাবেন, তা সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে ঠিক হবে। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদের কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের পরিবারের সন্তান ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যান বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তারপর ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে ব্যাচেলর অব ল (এলএলবি) সম্পন্ন করেন। এরপর নরথামব্রিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্স, ল সম্পন্ন করার পর পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্রাটেজিক ইন্টারন্যাশনাল ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। 

১৫তম বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদ ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে যোগ দেন। এরপর তিনি পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মরত ছিলেন। পিরোজপুরের পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর তিনি অতিরিক্ত ডিআইজি (আইসিটি, পুলিশ অধিদপ্তর) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ডিআইজি, লজিস্টিক পুলিশ হেড কোয়াটার্স ঢাকা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে সুনামের সহিত দায়িত্বরত ছিলেন।  

বাংলাদেশ পুলিশে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম) পদকে ভূষিত হয়েছেন। গত বছর তিনি পুলিশ সদর দফতরে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের শুদ্ধাচার পুরস্কার লাভ করেন। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তার সময়ে বাংলাদেশ পুলিশের ডিজিটালাইজেশনের জন্য পুলিশের ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, অনলাইন জিডি, বিডি পুলিশ হেল্প লাইন এবং সিআইএমএসের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ছিলেন ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদ। বিশেষ করে ‘৯৯৯’ এর মাধ্যমে পুলিশের সেবা প্রদান ব্যারিস্টার হারুনের চিন্তার বহিঃপ্রকাশ।

ডিএমপি
বাংলাদেশ পুলিশের সর্ববৃহৎ ইউনিট ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৩০ অক্টোবর। ঢাকা মহানগরের কমিশনার শফিকুল ইসলাম চাকরিতে এক বছরের চুক্তিতে রয়েছেন। তার চাকরির মেয়াদ গত বছর ২৯ অক্টোবর শেষ হয়ে গিয়েছিল। সরকার তাকে এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়। এবার আর তার চুক্তি বাড়ার সম্ভাবনা নেই। এই পদটি পুলিশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই ডিএমপির ৩৬তম কমিশনার হিসেবে নেতৃত্বে কে আসছেন তা নিয়ে চলছে নানান গুঞ্জন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ডিএমপি কমিশনারের পদটি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল পদগুলোর মধ্যে একটি। যাকেই ঢাকা মহানগর পুলিশের পরবর্তী কমিশনার করা হোক না কেন, সবার আগে বিবেচনায় নেওয়া হবে তার সততা, যোগ্যতা ও জবাবদিহিতার বিষয়টি। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশের কোনো কর্মকর্তা এখনই মুখ খুলছেন না। তবে ডিএমপি মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ডিএমপি কমিশনারের পদটি অতিরিক্ত আইজিপি সমমর্যাদার। এটি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল পদ। দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিই এ পদে দায়িত্ব পাবেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, ডিএমপি কমিশনারের পদটিতে কে আসবেন সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারণ করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে অনুমোদন দেন। পুলিশ হিসেবে কর্মজীবনের সফলতা, গ্রহণযোগ্যতা ও আস্থা বিবেচনায় এ পদটিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। সিনিয়র-জুনিয়র নির্বিশেষে যে কেউ এ দায়িত্ব পেতে পারেন। পুলিশের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ডিএমপির পরবর্তী কমিশনার হিসেবে পুলিশের তিনজন কর্মকর্তার নাম সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। তারা হলেন-

মনিরুল ইসলাম : এ পদে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলামকে ভাবা হচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ডিএমপি কমিশনার পদে তিনি সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন। পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলাম ১৫তম বিসিএস কর্মকর্তা। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও জঙ্গি দমনে তিনি অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছেন। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তার বিশেষ গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে। তা ছাড়া তিনি বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) এর প্রধান ছিলেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের সিটিটিসি ইউনিট গঠনেও মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন। অনেকের মতে, মনিরুল ইসলাম ঠাণ্ডা মাথায় যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন। হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর রীতিমতো জঙ্গিবাদ নিয়ে গবেষণা করেন। জঙ্গি নিয়ন্ত্রণ, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে তার ভালো অর্জন রয়েছে। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তার আলাদা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তাই এ পদে তাকে দেখা যেতে পারে।

মো. আতিকুল ইসলাম : বর্তমানে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (ডেভেলপমেন্ট) হিসেবে কর্মরত। নীতিনির্ধারক পর্যায়ে তিনি ডিএমপি কমিশনার হওয়ার আলোচনা রয়েছেন।
তিনি আইপিজিএমআর, (ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ) বর্তমানে বিএসএমএমইউ থেকে ফার্মাকোলজি বিষয়ে স্নাতক এবং অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন।

বিসিএস-১২তম ব্যাচের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে ১৯৯১ সালে পুলিশ ক্যাডারে যোগ দেন আতিকুল ইসলাম। বেসিক ট্রেনিং শেষে শিক্ষানবিশ এএসপি হিসেবে ময়মনসিংহ জেলায় যোগদান করেন। এরপর সহকারী পুলিশ কমিশনার ও উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে ১৯৯৪ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন। আরও গুরুত্বপূর্ণ সব দায়িত্ব পালন শেষে ২০১৬ সালে ডিআইজি (হাইওয়ে) হন। ২০১৯ সাল থেকে তিনি নৌ-পুলিশের ডিআইজি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বাংলাদেশ পুলিশে অসাধারণ ও দৃষ্টান্তমূলক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ছয়বার আইজি ব্যাজ, দুবার বিপিএম সার্ভিস, দুবার পিপিএম (সেবা) (গ্যালান্ট্রি) অর্জন করেন।

মাহবুবুর রহমান : ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ প্রধান (অতিরিক্ত আইজিপি) মাহবুবুর রহমান ১৫তম বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা। তাকেও এ পদের জন্য ভাবা হচ্ছে। মাহবুবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি ১৫তম বিসিএসে সহকারী পুলিশ সুপার পদে যোগ দেন। এএসপি হিসেবে নরসিংদী জেলা পুলিশে, সার্কেল এএসপি হিসেবে কিশোরগঞ্জ জেলার সদর সার্কেল ও বাজিতপুর সার্কেলে এবং এএসপি সদর সার্কেল হিসেবে নেত্রকোনা জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতোয়ালি) হিসেবে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে দায়িত্ব পালন করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও র‌্যাবে কর্মরত ছিলেন। তিনি সিও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মহালছড়ি আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও বগুড়া এপিবিএনে। উপ-পুলিশ কমিশনার (তেজগাঁও) হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে এবং পুলিশ সুপার হিসেবে হাইওয়ে (পূর্ব), বরিশাল ও কুমিল্লা জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ও ঢাকা রেঞ্জে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০০২-০৩ সালে কসোভো ও ২০০৫-০৬ সালে আইভরিকোস্টে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে তিনি লাভ করেন প্রেসিডেন্সিয়াল পুলিশ মেডেল (পিপিএম-সেবা) পদক।

হাবিবুর রহমান : ডিএমপি কমিশনার হিসেবে ঢাকা রেঞ্জের বর্তমান ডিআইজি হাবিবুর রহমানের নাম বেশি শোনা যাচ্ছে। সামাজিক ও অপারেশনাল কাজের মাধ্যমে তিনি অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। ১৭তম বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান গোপালগঞ্জের বাসিন্দা। একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে তার সুনাম রয়েছে এবং তিনি পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে জনপ্রিয় বটে। হাবিবুর রহমানকেও ডিএমপির পরবর্তী কমিশনার ভাবা হচ্ছে। ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান। ১৭তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে তিনি সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কর্মক্ষেত্রে সততা, সাহসিকতা, দক্ষতা আর সময়োপযোগী ও দূরদর্শী নেতৃত্বগুণের কারণে এরই মধ্যে সুখ্যাতি পেয়েছেন তিনি। তিনবার বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) ও দুবার রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) পেয়েছেন। পেশাগত কাজের বাইরে লেখালেখিও করেন। এছাড়া তিনি একজন ক্রীড়া সংগঠকও। কাজ করছেন দেশের কাবাডি নিয়ে। কর্মক্ষেত্রের বাইরে অবসর সময়ে প্রতিনিয়ত বই পড়েন পুলিশের এ কর্মকর্তা। তাছাড়া তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে নিয়ে বই সম্পাদনা করেছেন, যাতে দেখিয়েছেন দূরদর্শিতা। বইটিতে তুলে আনেন মন্ত্রীর বাল্যকাল, পড়াশোনা, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণসহ রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার বিষয়াবলি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত হয় ‘নন্দিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান’ বইটি। বইটি প্রকাশ করে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড।

বাবু/তৌফিক

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত