আর দুই মাস পরেই কাতারের বুকে শুরু হবে ফুটবলের মহাযজ্ঞ। মধ্যপ্রাচ্যে অনুষ্ঠেয় প্রথম বিশ্বকাপের আগে একটা পোশাকি মহড়ার আয়োজন করা হয়েছিল সম্প্রতি। তবে সেখানে দেখা দিল তীব্র বিশৃঙ্খলা, পানির সঙ্কটও। যার ফলে বিশ্বকাপেও এমন পরিস্থিতির শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বকাপের ঠিক আগে আয়োজকরা যেন একটা হুঁশিয়ারিই পেয়ে গেলেন। এর আগে বিশ্বকাপ আয়োজনের অভিজ্ঞতা নেই দেশটির। সে কারণেই বিশ্বকাপ শুরুর আগে মহড়া দেয় কাতার।
গত শুক্রবার লুসাইল সুপার কাপের ম্যাচে লুসাইল স্টেডিয়ামের দরজা প্রথমবারের মতো খোলা হয়। ৮০ হাজার দর্শক আসনের এই স্টেডিয়াম তৈরি হয়েছে বিশ্বকাপের জন্যই। তীব্র গরম ঠেকাতে সেখানে লাগানো হয়েছে এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমও। সেই স্টেডিয়ামে যখন প্রথমবারের মতো মাঠে গড়াল খেলা, তখন ভিড় সামলানোর অভিজ্ঞতাটা ভালো হলো না আয়োজকদের।
ধারণক্ষমতার চেয়ে তিন হাজার দর্শক কম এসেছিল খেলা দেখতে। তাতেই সেখানে তৈরি হয় নারকীয় এক পরিস্থিতির। স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা বিশাল হলেও দেশটির যাতায়াত ব্যবস্থা মানুষের চাপ সামলানোর জন্য প্রস্তুত নয়। ফলে মেট্রোতে স্টেডিয়ামে গমনেচ্ছু দর্শকরা বেশ গাদাগাদির সম্মুখীনই হন। এখানেই শেষ নয়, স্টেডিয়ামের গেটে দেখা যায় আড়াই কিলোমিটারের লম্বা লাইন। তপ্ত রোদে অনেক দর্শকই অসুস্থ হয়ে পড়েন। মহড়ায় দেখা যায়, স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা বিশাল হলেও এয়ার কন্ডিশন ব্যবস্থা এখনো ঠিকঠাক প্রস্তুত নয়। ৭৭ হাজার মানুষের চাপ সামলাতে পারেনি সেখানকার এয়ার কন্ডিশন ব্যবস্থা। তৈরি হয়েছিল মারাত্মক গরম ও আর্দ্র পরিস্থিতি।
পানির অভাবও প্রকট হয়ে ওঠে সেখানে। প্রথমার্ধের বিরতির পর থেকে দেখা যায় ৭৭ হাজার দর্শককে দেওয়ার মতো পানির ভাণ্ডারও শেষ হয়ে গেছে আয়োজকদের। ফলে পানির অভাবে চিৎকারও করতে দেখা যায় অনেক দর্শককে। সেই ম্যাচে স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও পড়েছে হুমকির মুখে। স্টেডিয়াম গেটে ভিড়ের ধাক্কা সামলাতে দর্শকরা মারামারিতেও লিপ্ত হয়ে পড়েন। এমনকি স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা রক্ষীদের মেরে ব্যারিকেড ভেঙেও এগোতে দেখা যায় দর্শকদের ঝাঁককে।
তবে আয়োজকদের জন্য বিষয়টা অবশ্য শাপে বরও হয়ে যেতে পারে। দুদিন পরই বিশ্বকাপ। তার আগে নিজেদের ব্যবস্থার ফাঁকফোকর দেখে ফেলায় এখন সেগুলো বন্ধ করার উপায়ও খুঁজে নেওয়ার সুযোগ থাকছে তাদের। যা হলে বিশ্বকাপও আয়োজন করা সহজ হবে তাদের। অন্যথায় এমন দৃশ্য বিশ্বকাপে নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়ালেও দাঁড়াতে পারে।
বাবু/জাহিদ