যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট তাঁর দেশের নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছেন, পরিবারগুলো 'প্রকৃত চ্যালেঞ্জের' সম্মুখীন হবে। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ারও পূর্বাভাস দিয়েছেন তিনি। অফিস ফর বাজেট রেসপনসিবিলিটির বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, আগামী ১৮ মাসে ব্রিটেনে পরিবারের গড় আয় সাত শতাংশ কমে যাবে।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী কর বাড়িয়ে এবং সরকারি ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরে বৃহস্পতিবার নতুন বাজেট পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন জেরেমি হান্ট। তিনি দাবি করেছেন, কর বৃদ্ধি এবং ব্যয় সংকোচনের বিষয়টি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে। তিনি আরো বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের আমলে যুক্তরাজ্যের আর্থিক খাতের ওপর যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে আসতে এটা প্রয়োজন ছিল।
গতকাল বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বাজেট পরিকল্পনা ঘোষণার সময় হান্ট স্বীকার করে নেন, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে এরই মধ্যে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে এবং আগামী বছর অর্থনীতি আরো সংকুচিত হবে বলেও আভাস পাওয়া গেছে। তিনি বলেছেন, যুক্তরাজ্যের আর্থিক বাজারের স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে বেদনাদায়ক এই কর রাজস্ব নীতি এড়িয়ে যাওয়ার কোনো উপায় ছিল না।
তবে তিনি মনে করেন, বিশ্বাসযোগ্যতা নিজে থেকেই ফিরে আসবে, এমনটা আমরা ধরে নিতে পারি না। বুধবার পরিসংখ্যান কার্যালয় থেকে মুদ্রাস্ফীতির যে পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে, আমাদের অবশ্যই সেটিকে নামিয়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে নিরলস কাজ করে যেতে হবে। একই সঙ্গে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থা পুনর্গঠনও একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। ব্রিটেনে আগে ১২ হাজার ৫৭১ পাউন্ড থেকে ৫০ হাজার ২৭০ পাউন্ড পর্যন্ত আয়ের জন্য ২০ শতাংশ কর দিতে হতো। নতুন বাজেট পরিকল্পনায় ২০২৮ সাল পর্যন্ত সেটা স্থির করে দেওয়া হয়েছে।
আর উচ্চ করহারের ক্ষেত্রে আয়ের সর্বোচ্চ সীমা কমিয়ে এক লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড থেকে এক লাখ ২৫ হাজার ১৪০ পাউন্ড করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে আগে বছরে দেড় লাখ পাউন্ড আয়ে ৪০ শতাংশ হারে আয়কর দিলেও হতো। কিন্তু এখন আয় এক লাখ ২৫ হাজার ১৪০ পাউন্ড ছাড়ালেই ৪৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। দেশটিতে আয় যত বাড়বে, করের হারও তত বাড়বে। লভ্যাংশ থেকে আয় ও মুলধনী আয়ের ওপর যে কর রেয়াত ছিল, সেটাও আগামী দুই বছরের জন্য বাতিল করা হয়েছে।
ব্রিটেনে মূল্যস্ফীতির হার এখন ১১ শতাংশের ওপরে। যা দেশটির অর্থনীতির ওপর তীব্র চাপ সৃষ্টি করেছে।
সূত্র : বিবিসি
বাবু/জেএম