রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সব মহানগরের থানায় থানায় আজ শনিবার বিএনপির বিক্ষোভ পদযাত্রা। ঢাকার ৫০টি থানাতেই এ পদযাত্রার কর্মসূচি রাখা হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে ঘোষিত এ কর্মসূচিতে ঢাকায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারাও অংশ নেবেন।
এদিন আওয়ামী লীগও পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে। তারা আজ ঢাকার প্রতিটি থানায় বিক্ষোভ মিছিল এবং ছয়টি স্থানে ‘শান্তি সমাবেশ’ করবে। মূলত ১০ ডিসেম্বর থেকে বিএনপির প্রায় প্রতিটি কর্মসূচির দিন আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশের নামে এ পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে আসছে। যদিও দলটির নেতারা এটাকে পাল্টা কর্মসূচি বলতে চান না।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ জানিয়েছে, ঢাকায় আজ ১০টি জায়গায় সমাবেশ করবে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। চারটি হবে উত্তরে। আর দক্ষিণে ছয়টি স্থানে নির্বাচনী আসন ধরে সমাবেশ হবে। সব থানা থেকে নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে এই ছয় সমাবেশে যোগ দেবেন। বেলা তিনটায় এসব সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আবার বিএনপির পদযাত্রা হবে বেলা দুইটায়। প্রায় কাছাকাছি সময়ে দুই দলের মিছিল ও পদযাত্রাকে ঘিরে দুই পক্ষের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তবে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান বলেন, তাঁদের কর্মসূচির নাম শান্তি সমাবেশ। তাঁদের দিক থেকে কোনো অশান্তি সৃষ্টি হবে না। তবে বিএনপি আঘাত করলে আত্মরক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন।
মহানগর উত্তরে চারটি সমাবেশ হবে মিরপুর ১ নম্বর গোলচত্বর, মোহাম্মদপুর টাউন হল, মধ্য বাড্ডা ও উত্তরার আমির কমপ্লেক্সের সামনে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এ সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সমাবেশগুলো হবে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে, শ্যামপুর রেলগেট, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা, ঢাকেশ্বরী বালুর মাঠ, মুগদা স্টেডিয়াম ও ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে। ধানমন্ডির সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী প্রধান অতিথি থাকবেন। বাকি সমাবেশগুলোতেও কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
বিএনপির সূত্র জানায়, আজ ঢাকা মহানগরের ৫০টি থানায় বিক্ষোভ পদযাত্রা করবে। এর মধ্যে মহানগর উত্তর বিএনপি ২৬ থানায় ও দক্ষিণ বিএনপি ২৪ থানায় পদযাত্রা করবে। উত্তরা–পূর্ব থানার কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অন্যান্য থানার পদযাত্রা কর্মসূচিতেও বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা অংশ নেবেন।
বিদ্যুৎ-গ্যাস, চাল-ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানো, শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের নৈরাজ্য বন্ধ, বিরোধী দলের ওপর দমন-নিপীড়ন বন্ধ করা, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দী নেতা-কর্মীদের মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিলসহ ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা’ দাবিতে আজ মহানগরের থানায় থানায় এ পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হবে।
এর আগে বিএনপি ইউনিয়ন, জেলা, মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে পদযাত্রা করেছিল। সর্বশেষ ২৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশের সব জেলায় একযোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। ১১ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা করে বিএনপি। এতে অন্তত ৪০টি জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কর্মসূচিতে হামলার শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছে বিএনপি। আজ সাংগঠনিক ১০টি মহানগরের প্রতিটি থানায় পদযাত্রা কর্মসূচির পাল্টা আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ ঘিরে সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম গতকাল রাতে বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি ঝামেলা এড়িয়ে চলার। কিন্তু ওরা ইচ্ছাকৃত পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চাচ্ছে। মনে হচ্ছে, তারা দেশকে একটি অস্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে যেতে চাইছে।
বাবু/এ আর