আমরা নিরুপায়, বাধ্য হয়ে বেশি দামেই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে হয়
জাহিদ হাসান মাহা
প্রকাশ: সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৩, ২:০০ PM
বাজারে নানা অজুহাতে বিক্রেতারা সবজির দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় বেশ অস্বস্তিতে রয়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। রমজানে খুব অস্বস্তি দিচ্ছে সবজির দাম। কোনোভাবেই যেন কমছে না, মিলছে না ক্রেতা-বিক্রেতা কারও হিসাব নিকাশ।
আজ রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, বরবটি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, পটল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৭০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ৪০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৫০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৫০ টাকা, লাল আলু প্রতি কেজি ৪০ টাকা, সিম প্রতি কেজি ৬০ টাকা, মিস্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ১২০ টাকা এবং সঁজনে প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
সবজি
সবজি
সবজি বিক্রেতারা বলেন, স্বাভাবিক সময়ে সবজির এতো দাম কখনো দেখিনি। রমজান হিসেবে দাম কম হওয়ার কথা। কারণ রমজানের শেষের দিকে সবজির চাহিদা কমে যায়। তারপরও এতো দাম কেন বুঝতে পারছি না। তিনি বলেন, আলু আর পেঁপে ছাড়া কোনো সবজি ৬০ টাকার নিচে নেই। বেশিরভাগ সবজির কেজি ৮০ টাকার ওপরে।
তারা আরও বলেন, বাজারে সরবরাহ কম থাকায় তাজা সবজির দাম বেড়েছে। রোজায় সবজি কম খাওয়া হলেও ক্রেতারা তাজা সবজি চায়। যদিও এমন অজুহাত মানতে নারাজ সাধারণ ক্রেতারা। সপ্তাহের বাজার করতে আসা এক ক্রেতা বলেন, 'যার যখন মন চায়, তখন সে দাম বাড়ায়! আমরা নিরুপায়। বাধ্য হয়ে বেশি দামেই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে হয়।'
লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকা ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে মাছের বাজারে। মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাঙাস প্রতি কেজি ২২০-২৩০ টাকা, ছোট ট্যাংরা প্রতি কেজি ৫০০-৫৫০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৬০০-৭০০ টাকা, গলদা প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, মলা প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, রুই ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, পাবদা প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা, চাষের কই প্রতি কেজি ৩০০, শিং মাছ প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, তেঁলাপিয়া প্রতি কেজি ২০০-২২০ টাকা, কাতল মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, শোল মাছ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছ
মাছের বাজারেই আজ ক্রেতাদের বেশি ভিড় দেখা যায়। কয়েকজন মাছ বিক্রেতা বলেন, দাম কম হওয়ায় পাঙাশ-তেলাপিয়াই বেশি বিক্রি হচ্ছে। মাছবাজারে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবীর সঙ্গে। তিনি বলেন, বাজার ঘুরে তাঁর কাছে মনে হয়েছে, মাছের দাম কিছুটা কমেছে।
আজ সোমবার (১০ এপ্রিল) ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর তথ্য অনুযায়ী বাজারে আজ সরু চাল (নাজির/ মিনিকেট) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা করে। মাঝারি চাল (পাইজাম/ লতা) বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫৬ টাকা দরে। মোটা চাল (স্বর্ণা/ চায়না/ ইরি) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৬ থেকে ৫০ টাকায়। আজ খোলা চিনি প্রতি কেজি ১১২ থেকে ১১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খোলা আটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৫৮ টাকায়। প্যাকেট আটার কেজি ৬৪-৬৫ টাকা। দুই কেজির প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। এছাড়া দেশি মসুর ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫ টাকা দরে। ইন্ডিয়ান মসুরের ডালের কেজি ১২০-১২৫ টাকা। বাজারে সয়াবিন তেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ টাকা দরে। এসব বাজারে লবণের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪০ টাকা দরে। শুকনা মরিচ ৪০০-৪৪০ টাকা। মুগ ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৩৫ টাকা।
মুদি
আজ বাজারে আদা (দেশি) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৪০ টাকা। হলুদ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯০-২৯০ টাকা। জিরা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৬০ টাকা। দারুচিনি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪২০-৫২০। এলাচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০০-২৫০০ টাকা। ধনে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৬০। তেজপাতা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-২০০ টাকা।
মশলা
এদিন মুরগির বাজার ঘুরে দেখা যায় গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিলো ২২০ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা। যা গত সপ্তাহে কেজি ছিলো ৩২০-৩৩০ টাকা। আর লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির মতো দাম কমেছে ফার্মের মুরগির ডিমের। আজ প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে ফার্মের মুরগির ডজন ছিলো ১৪০ টাকা। তবে, হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা আর দেশি মুরগির ডিমের ডজন ২১০-২২০ টাকা। অপরদিকে আজ বাজারে গরুর মাংস আগের দামেই কেনাবেচা হচ্ছে। প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১১০০ টাকা দরে।
মুরগি
বাজারে আসা এক ক্রেতা বলেন, ‘সপ্তাহে একটি মুরগি কিনে খেতে পারতাম। মাঝখানে মুরগির দাম বেশি হওয়ায় কেনা অসম্ভব ছিল। এখন দাম কমে আসায় অনেকটা সুবিধা হয়েছে।