কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বানভাসিদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জ্ঞানের আলো পাঠাগার।
গত শুক্রবার সকাল থেকে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জ্ঞানের আলো পাঠাগারের ৮ সদস্যের একটি টিম মনোহরগঞ্জ উপজেলার মৈশাতুয়া ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর, গজরাপাড়া, মৈশাতুয়া, হাজিপুরা ও শ্রীপুর গ্রামের ৩ শতাধিক পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী, পোষাক ও ওষুধ বিরতণ করে।
এছাড়াও সংগঠনটির পক্ষ থেকে মনোহরগঞ্জ উপজেলার মৈশাতুয়া নিলকান্ত সরকারি ডিগ্রী কলেজ আশ্রায়ণ কেন্দ্রের ৭ শতাধিক মানুষের মাঝে ২ দিন ধরে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মনিরুজ্জামান জুয়েল।
তিনি বলেন, কুমিল্লায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি দেখে জ্ঞানের আলো পাঠাগারের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানানো হয়। এ আহবানে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন শ্রেনিপেশার মানুষ নগদ অর্থ, পোষাক সামগ্রী ও ওষুধ দিয়ে সহায়তা করেন।
এরপর আমরা সংগঠনটির সুশান্ত বর্ণিক, আব্দুর রহমান, সোহান শেখ, জিয়াদুল ইসলাম লিমন, আব্দুল্লাহ, রিয়ান মোল্লা, শরিফ শেখকে নিয়ে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে বানভাসিদের কাছে ছুটে যাই। সেখানে প্রত্যন্ত অঞ্চলে পানিবন্দি ৩ শতাধিক পরিবারের মাঝে চাল, ডাল, তেল, লবন, আলু, পিয়াজসহ বিভিন্ন প্রকার খাদ্য সামগ্রী এবং মোমবাতি, মশার কয়েল ও ওষুধ বিতরণ করি।
নিলকান্ত সরকারি ডিগ্রি কলেজ আশ্রায়ন কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবক সমন্বয়ক আব্দুল কাদের সোহাগ বলেন, এই আশ্রায়ণ কেন্দ্রে ৬৯৫ জন বন্যা দূর্গত ব্যক্তিরা রয়েছেন। জ্ঞানের আলো পাঠাগার টিম দুইদিন এঁদের মাঝে রান্না করা খাবার দিয়েছেন। অত্যন্ত সু-শৃঙ্খলভাবে জ্ঞানের আলো পাঠাগারের সদস্যেরা মনোহরগঞ্জে বন্যার্তদের সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। তাদের এই কার্যক্রম এলাকায় ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।
গজরাপাড়া গ্রামের সুব্রত শীল বলেন, ১০ দিন ধরে আমরা পানিবন্দি ছিলাম। এসময়ে আমাদের ব্যাপকভাবে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছিল। আমাদের জন্য জ্ঞানের আলো পাঠাগার ছাড়া কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান খাদ্য ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে আসেনি। জ্ঞানের আলো পাঠাগার আমাদের খাদ্যসামগ্রী, পোষাক ও ওষুধ দিয়ে সহযোগিতা করেছে।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজালা রানী চাকমা বলেন, ‘মৈশাতুয়া নিলকান্ত ডিগ্রী কলেজ পরিদর্শনে গিয়ে জ্ঞানের আলো পাঠাগার টিমের সাথে দেখা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের সদস্যেরা টানা কয়েকদিন মনোহরগঞ্জে থেকে বন্যার্ত মানুষের জন্য যে কাজ করেছেন সেটি প্রশংসনীয়। জ্ঞানের আলো পাঠাগারের মতো অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো যেন বানভাসি মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে।