পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় সহকারী কমিশনার (ভূমি)`র সরকারী বাসভবন থাকলেও বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় তিনি থাকেন ভাড়া বাসায়। বাসভবনটি অবৈধ দখলবাজদের দখলে তাস, জুয়া, মলমূত্র ত্যাগসহ নেশাগ্রস্তদের নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে।
বাসভবনটি সংষ্কার বা নতুন ভবন নির্মাণ কাজেও রয়েছে নানা জটিলতা। সরকারি বাসভবনে যাতায়াতের পথ রুদ্ধকরে তৈরি করা হয়েছে দোকাপাট। ফলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জীবনের ঝুকি নিয়ে মঠবাড়িয়া শহর থেকে কিছুটা দুরে ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি)`র বাসভবনের জন্য নির্ধারিত ১ নং খাস খতিয়ান ভূক্ত ১৬৫১, ১৬৫২, ১৬৫৩, ১৬৫৪, ১৬৫৫, ১৬৫৬, ১৬৫৭, ১৬৫৮, ১৬৬০, নং দাগের ১`৯৪৯৯ একর জমির মধ্যে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ২০১২ সালে তৎকালীন সাংসদ ডাঃ আনোয়ার হোসেন ও প্রশাসনের যোগসাজসে অবৈধ দখলবাজরা বাসভবনের সামনে "মুক্তিযোদ্ধা সুপার মার্কেট" নামে সারিবদ্ধ দোকান ও ভিতরে অবৈধ ভিটি, দোকান, ঝুপরি ঘড়সহ নানা স্হাপনা নির্মান করে। ইতিমধ্যে কেউ কেউ মোটা অর্থের বিনিময় দোকানের মালিকানা বিক্রি করেছে।
এদিকে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ূম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি ) সৈকত রায়হান জিরো টলারেন্স ভূমিকায় রয়েছেন।ইতোমধ্যে মঠবাড়িয়া শহরে অসংখ্য খাস জমি, খাল, পুকুর, ইটভাটা ধ্বংস, ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাসহ বড় বড় রাঘব বোয়ালের দখলে থাকা সরকারী জমি উদ্ধার শুরু করেছে প্রশাসন।
গুঞ্জন রয়েছে অচীরেই সহকারী কমিশনার (ভূমি )`র বাসভবনের জমি দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করা হবে। ফলে আতঙ্কে রয়েছেন অবৈধ জমিতে ব্যবসারত দোকান মালিকরা। উপজেলা প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযানে ঘুম উড়েগেছে অনেক নেতাকর্মীদের। যারফলে কেউ কেউ হেভিওয়েট নেতাকর্মীদের অবৈধ্য অর্থের মিনিময়ে ইউএনও ও এসিল্যান্ডকে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে সূত্র জানায়।
এদিকে পিরোজপুর মঠবাড়িয়া-৩ মঠবাড়িয়া সংসদীয় আসনের নব নির্বাচিত সংসদ সদস্য শামীম শাহনেওয়াজ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ মঠবাড়িয়াকে `নিরাপদ মঠবাড়িয়া` বিনির্মানের ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্বাধীণভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
১২৯ মঠবাড়িয়া সয়সদ সদস্য শামীম শাহনেওয়াজ বলেন, জনকল্যানে সরকারী কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নে আমার পূর্ন সমর্থন রয়েছে। এবিষয়ে মঠবাড়িয়া প্রশাসনকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল কাইয়ূম বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে জনকল্যানে সরকারী নির্দেশনা পালন একটি চলমান প্রক্রিয়া।
কারো প্ররোচনায় কিংবা কোন অবশক্তি আমার দায়িত্বথেকে দূরে সরাতে পারবে না। তিনি আরও বলেন, তিন যুগেরও বেশী সময় ধরে মঠবাড়িয়ায় অসংখ্য সরকারী জমি,খাল, নদী, জলাশয় অবৈধ দখলবাজদের দখলে রয়েছে। যার ফলে জনজীবনে বিরুপ প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার সকল অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে সরকারি জমি, খাল, নদী, জলাশয় অচীরেই সরকারের দখলে ফিরিয়ে আনা হবে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈকত রায়হান বলেন, সরকারী স্বার্থ রক্ষার্থে বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের নির্দেশণা অবৈধ উচ্ছেদ সারাদেশে একটি চলমান প্রক্রিয়া। ভূমি অফিসের বেদখল হওয়া সকল জমি সহ অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ উদ্ধার করা হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি উপজেলা ভূমি অফিস কর্তৃক অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ভূমি অফিসের ০.১০ একর জমির ২৩ টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে খাল, ফুটপাত দখলমুক্ত করা হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকায় সাধারণ মানুষ সন্তোস প্রকাশ করে উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।