আমরা জানি, সার্বিকভাবে আর্থিক খাতে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংকিং খাতের চ্যালেঞ্জ সবচেয়ে বেশি। এটা আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের সব ধরনের কার্যক্রমকে প্রভাবান্বিত করে। চ্যালেঞ্জগুলো সমাধানের জন্য বারবার বলা হচ্ছে। ১৯৭২ সালের পর থেকেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের চ্যালেঞ্জগুলো ছিল। তারপর প্রাইভেট ব্যাংক এসেছে। তাদের অনেক সমস্যা দেখা দিয়েছে। একসময় কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে বিভিন্ন কমিটি এবং বিভিন্ন কমিশনের সুপারিশক্রমে অনেকগুলো ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।
যেমন: পুঁজির পরিমাণ, তফসিলীকরণ, সিঙ্গল এক্সপোজাল লিমিট, ঋণের শ্রেণিকরণ, সাব স্ট্যান্ডার্ড, মন্দ ঋণ, খেলাপি ঋণ ইত্যাদি। ব্যাংকিং সেক্টর কিন্তু এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করে আসছে। একেবারে সম্পূর্ণভাবে না করলেও মোটামুটি সন্তোষজনকভাবে করেছে। কিন্তু এখন আমরা এই পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছি, এই চ্যালেঞ্জগুলো দিন দিন প্রকট হচ্ছে। পুরনো সমস্যাগুলো বড় হচ্ছে, নতুন সমস্যা আসছেÑ এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এখন পর্যন্ত দেখছি, এই যে নতুন সমস্যাগুলো এবং পুরনো যে সমস্যাগুলো চলে আসছে, সেগুলো সমাধান করার জন্য যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর ফল আমরা পাইনি।
এখন খুব দ্রুত চারটি জিনিসের ওপর নজর দেওয়া প্রয়োজন। এক. বিভিন্ন রকম সংস্কার—আইনের সংস্কার এবং ফিন্যানশিয়াল রুলসের সংস্কার দরকার। দুই. সেগুলো বাস্তবায়ন করার জন্য নিয়মিত পদক্ষেপ ও কার্যক্রম নেওয়া। তিন. নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ, বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংক, যথাসময়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া এবং পদক্ষেপগুলো ফলপ্রসূ হয়েছে কি না, সেগুলো নিশ্চিত করা। চার. নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মিত নজরদারি ও পরিবীক্ষণ করা। নজরদারি ও পরিবীক্ষণে কোনো সমস্যার বিষয় পেলে সেগুলোর সমাধান করা। এখানে অবশ্য এটা বলা দরকার, এখানে কিন্তু ব্যাংকগুলোরও দায়িত্ব আছে, শুধু বাংলাদেশ ব্যাংক নজরদারি করবে তা নয়। ব্যাংকগুলোকে যেসব গাইডলাইন দেওয়া হয়, সেগুলো পরিপালন করা। এই চারটি জিনিসের ওপর সব সময় নজর দেওয়া উচিত।
ব্যাংকিং খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা : নতুন কার্যক্রমএই প্রেক্ষাপটে আমরা দেখছি, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, ১৭টি ‘অ্যাকশন প্ল্যান’। সেখানে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে খেলাপি ঋণ কমানোর ক্ষেত্রে। ১৭টি কর্মপরিকল্পনার মধ্যে ১১টি খেলাপি ঋণ সংক্রান্ত আর বাকি ছয়টি হলো সুশাসনের ওপর। মোটামুটি আমরা মনে করি, এটা ভালো একটা উদ্যোগ। এখানে অবশ্য কতগুলো টার্গেটও দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মূল বিষয়টা হলো পরিকল্পনা/কার্যক্রম বাস্তবায়ন। এখানে কতগুলো জিনিস প্রয়োজন। খেলাপি ঋণ ও সুশাসন কিন্তু ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটা থেকে আরেকটা আলাদা করা যাবে না। খেলাপি ঋণ হয় বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে এবং সুশাসনের অভাবের কারণে। আবার খেলাপি ঋণ থাকলে সুশাসন নিশ্চিত করা যায় না। কারণ ব্যাংকগুলোর সদিচ্ছা থাকলেও ঋণখেলাপির কারণে সুশাসন নিশ্চিত করতে পারে না। তাই দুটির ক্ষেত্রে কোনটি প্রাধিকারভুক্ত, কোনটির সঙ্গে কোনটি জড়িত—এটি খেয়াল করে যথেষ্ট যত্নসহকারে পদক্ষেপ নিতে হবে।
দ্বিতীয়ত, এর আগে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আর্থিক খাতের জন্য ভুল যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর জন্য কী করা হবে? যেসব ভুল পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে তাদের কী অ্যাকশনের ব্যবস্থা আছে। আগের পদক্ষেপগুলো কিভাবে নতুনগুলোর সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি করবে। যেমন—ঋণখেলাপি পুনঃ তফসিল করতে প্রথমেই বকেয়ার ১০ শতাংশ দিতে হতো, এখন ২ শতাংশ দিলেই হয়। ব্যাংকিং কম্পানি আইনে পরিবার থেকে আগে পরিচালনা পর্ষদে দুজন ছিলেন, এখন তিনজন করা হয়েছে, যাঁরা ৯ বছর পর্যন্ত থাকতে পারবেন। এই যে কতগুলো ভুল পদক্ষেপ, এগুলো নিয়ে কিন্তু ঝামেলা হচ্ছে। সেগুলো কিভাবে সংশোধন করা হবে?
তৃতীয়ত, ব্যাংক বা ব্যাংক কম্পানির সঙ্গে কিন্তু পুঁজি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তারপর আছে সঞ্চিতি সংরক্ষণÑ এগুলো কিন্তু ব্যাংকগুলোর দরকার। সেই সঙ্গে দরকার লোন কে নিচ্ছে, বড় বড় কম্পানি যে লোনের ওপর নির্ভর করছে বা লোন নিয়ে ফেরত দিচ্ছে না—পৃথিবীর কোনো দেশেই বড় ব্যবসা এবং দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন বাংলাদেশের মতো ব্যাংকনির্ভর নয়। এ যুগে ব্যবসা-শিল্প ইকুইটিনির্ভর, সে জন্য পুঁজিবাজারে যেতে হবে। এই যে বড় একটা গ্যাপÑ সবাই ব্যাংকের দিকে দৌড়াবে, কিন্তু পুঁজিবাজারে যাবে না, এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পুঁজিবাজারে মানুষকে ফেরাতে হবে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি ইএমসিতে দক্ষতা, সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।
চতুর্থত, রোডম্যাপ নিয়েছে ভালো, কিন্তু গন্তব্যস্থলে যেতে হলে কতগুলো মাইলস্টোন থাকবে। মাইলস্টোন মানে ধরা যেতে পারে, ৫০ মাইল দূরে একটা গন্তব্যস্থল রয়েছে। পাঁচ মাইল দূরে গিয়ে আমরা দেখব, ঠিকমতো এসেছি কি না। সফলতা আসছে কি না। আরো এগিয়ে যাব। কোন গতিতে এগিয়ে যাব, কী কী করতে হবে—সেসব ঠিক করতে হবে। মাইলস্টোন না থাকলে গন্তব্যে সঠিকভাবে যাওয়া যায় না। এক গোলপোস্ট থেকে তো আরেক গোলপোস্টে চট করে গোল করা যায় না। এই যে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, এখানে তো অনেক পক্ষ, দল কাজ করবে। সে জন্য উদ্যোগগুলো সমন্বিত হতে হবে।
এখন প্রয়োজনটা কী বা কী করতে হবে? বাংলাদেশ ব্যাংকের অথরিটি বলেছে যে খেলাপি ঋণ কমে আসবে। শৃঙ্খলা চলে আসবে। সুশাসন চলে আসবে। ইনডিপেনডেন্ট ডিরেক্টর নানা রকম সমাধান দেবে। এগুলো ধীরে ধীরে আরো ভালো হবে। ব্যাংকের সংখ্যা ৬১ থেকে ৪৫টায় নিয়ে আসবে। তখন ব্যাংকের সংখ্যা কমে গেলে মনিটরিং ভালো হবে।
প্রথম প্রশ্ন হলো, ব্যাংকের সংখ্যা এত বাড়ানো হলো কেন? প্রথমেই বলা হয়েছিল যে এত বাড়ানোর দরকার নেই, ব্যাংক দেবেন না। সরকার থেকে বলা হয়, ব্যাংক দেওয়াটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নীরব ভূমিকা পালন করা হয়েছে। অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু ক্ষেত্রে আপত্তি তুলেছে, তবে সেটা জোরালো নয়। এখন ভুলগুলো সংশোধনের কথা এসেছে। সেটা ভালো। কতটুকু করতে পারবে, সেটা দেখার বিষয়।
কী কী করা যাবে? এখন চারটি বিষয়ের প্রতি সবচেয়ে বেশি নজর দেওয়া দরকার। প্রথমত, আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা, সক্ষমতা বাড়ানো দরকার। প্রতিষ্ঠান বলতে বাংলাদেশ ব্যাংক, কমার্শিয়াল ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসএসির) কথা বলছিÑ এদের সক্ষমতা কতটুকু? নড়বড়ে প্রতিষ্ঠান দিয়ে তো কাজ হয় না। নড়বড়ে ভিত দিয়ে তো বিল্ডিং বানানো যাবে না। তাই প্রতিষ্ঠান আগে শক্ত করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের দিকে আমরা নজর দিই না। প্রতিষ্ঠান সংস্কার করা, প্রতিষ্ঠানের দক্ষতার দিকে নজর দিতে হবে। শুধু বলে আসছি, এই করতে হবে, সেই করতে হবে; মূলত কিছুই হচ্ছে না।
দ্বিতীয়ত, সুশাসন, জবাবদিহি, স্বচ্ছতা একটা বড় ব্যাপার। ব্যাংকগুলো স্বচ্ছতা কিভাবে নিশ্চিত করবে? কেউ যদি ভুল করে তাকে কি শাস্তি দেওয়া হবে? বর্তমানে আইনে আছে কিছু, কিন্তু সেটা প্রয়োগ করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, আইনের প্রয়োগ হচ্ছে না। এখানে মাইলস্টোন দিয়ে দিলাম, বলে দিলাম, এই করতে হবে, সেই করতে হবে; কিন্তু কিছুই হচ্ছে না।
তৃতীয়ত, রাজনৈতিক সদিচ্ছা কতটুকু এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কতটা বন্ধ হবে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বা রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব ছাড়াও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা রয়েছে। এই যে ফিন্যান্স মিনিস্ট্রি আছে, ফিন্যান্স ডিভিশন আছে এবং সরকারি অন্যান্য ডিভিশন আছে, তাদের যে আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ, সেখান থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলো কিভাবে বেরিয়ে আসবে? বিশেষ করে সরকারি মালিকানাধীন কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলো?
চতুর্থত, সবচেয়ে বড় একটা বিষয় হলো, বাংলাদেশি ব্যাংকের বা বাংলাদেশের ব্যাংক কম্পানি আইনের আর্থিক যে নিয়ম-কানুনগুলো আছে, এগুলো মোটামুটি সন্তোষজনক। সেখানে কিছু দুর্বলতা আছে, সব হয়তো আমরা পরিপালন করছি না, সেই নিয়মগুলো যথেষ্ট ভালোভাবে পরিপালন করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। এবং ব্যাংকগুলো যদি সেই নিয়ম-কানুনগুলো পরিপালন না করে, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক কী পদক্ষেপ নেবে, তা ঠিক করতে হবে। সেসব পদক্ষেপ আমরা দেখি না। বারবার সময় দেওয়া হয়—তিন মাস সময় দেওয়া হলো এক ব্যাংককে, তিন মাস পার হয়ে গেল। আবার বলল, আরো তিন মাস দিচ্ছি, তারপর বলে আরো দেখছি। অ্যাকশনগুলো যুক্তিসংগত হতে হবে, যাতে ব্যাংকগুলো ইমপ্লিমেন্ট করতে পারে। তারপর শাস্তির কথা আসতে পারে। শাস্তি বলতে ব্যাংকের ব্রাঞ্চ না দেওয়া, ব্যাংকের কর্মসূচি সীমিত করা, সেন্ট্রাল ব্যাংক থেকে অন্যান্য সাপোর্ট দেওয়া ইত্যাদি রহিত করতে হবে।
কতগুলো মান ও সূচক রয়েছে, ঋণ শিডিউল করাÑ আরো কতগুলো কথা বলা হয়েছে, সেগুলো যেন আগেকার পদক্ষেপ, আগেকার সংস্কারের মতো ভুল না হয়। যেমন একটা উদাহরণ আমি দিই, রি-শিডিউল করে তো ব্যাংকের লোন শোধ দেওয়ার বারবার সময় দিয়েছে, কিন্তু ঠিক হয়নি। দিনের পর দিন শুধু সময় দিয়ে যাচ্ছে। এবং শোধ দেওয়ার হারটাও কমিয়ে দিয়েছে। ২ শতাংশ ঋণ পরিশোধ করলে এখন খেলাপি থাকবে না। এগুলোর ব্যাপারে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন একটা উদাহরণ, ঋণ অবলোপন করার জন্য তিন বছর সময় দেওয়া উচিত—এটা আগে ছিল। এখন বলা হচ্ছে, দুই বছর হলেই অবলোপন করা হবে। তার মানে ব্যাংকাররা যেটা করবেন, দুই বছর খেলাপি ঋণ হলে চট করে অবলোপন করে দেবেন। অবলোপন করা মানে ব্যালান্স শিটের বাইরে চলে গেল। কিন্তু এটা কি মুখ্য উদ্দেশ্য? যত অবলোপন করা যায়, তাদের জন্য সুবিধা তো। এটাতে যেটা হবে, কাগজে-কলমে খেলাপি ঋণ কমে যাবে। এভাবে অফিশিয়ালি খেলাপি ঋণ কমানোর কোনো অর্থ হয়? এটা তো অনেকটা অঙ্ক দিয়ে লোকজনকে বুঝিয়ে দেওয়ার মতো। এটা ঠিক না।
সব শেষে আমি কয়েকটা জিনিসের ওপর দৃষ্টিপাত করি। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, দুর্বল ব্যাংক অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করবে। সেটার জন্য কিন্তু বড় ব্যাংক, যারা নেবে, তাদের ইন্টারেস্ট থাকতে হবে। আবার ছোট ব্যাংক, যেগুলো একীভূত করা হবে, তাদের দিক থেকেও ইন্টারেস্ট থাকতে হবে। শুধু এখানে বলে দেওয়া হলো, মার্জ করা হবে, এটাতে কোনো লাভ হবে না। দুর্বল ব্যাংক এবং সবল ব্যাংকগুলোকে কিভাবে মোটিভেট করা যায়, সে ব্যাপারে অ্যাকশন নিতে হবে।
আমার মনে আছে, আমার সময়ে মার্জার অ্যাপ্লিকেশনে কতগুলো গাইডলাইন দেওয়া হয়েছিল। আমি জানি না, এটা রিভাইস করা হয়েছে কি না। এই ধরনের মার্জার অ্যাকুইজিশন রুলস পরিমার্জন করে জনসমক্ষে প্রকাশ করা দরকার। দ্বিতীয়ত, সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি করার কথা বলা হয়েছে। সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি বিভিন্ন দেশ করেছে। কোনো দেশ ভালো করেছে, কোনো দেশে একেবারে লাভ হয়নি। সম্পদ ব্যবস্থাপনা কম্পানি করা মানে খেলাপি ঋণ বা মন্দ ঋণগুলো আদায় করা।
কোম্পানি শুধু সরকারি উদ্যোগে হবে, না যৌথভাবে হবে, সেটা ঠিক করতে হবে। কম্পানি হলে উৎসাহ বা প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে হবে। এটা কিন্তু কোরিয়া, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন জায়গায় করেছে। চট করে শুধু কেউ বলল, আইএমএফ বলল, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বলল, আমরা করে ফেললাম, ব্যাপারটা এটা নয়; নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনায় আমরা ভালোভাবে করতে পারব কি না, সেটা দেখা উচিত।
আরো কিছু জিনিস বলা হয়েছে যে যারা খেলাপি ঋণ আদায় করবে, তাদের পুরস্কৃত করবে। সেগুলো আরো অনেক আগেই করা উচিত ছিল। খেলাপি ঋণ বা এই জিনিসগুলো করা সম্ভব যদি সুশাসন হয়। এটা ম্যানেজমেন্টের লোকজন করবে। পরিচালকদের সদিচ্ছা, বিবেচনা এবং দক্ষতাও দরকার। সার্বিকভাবে আমার মনে হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কর্মপরিকল্পনাটা বাস্তবায়ন সবচেয়ে বড় কথা। আমাদের বাজেটে বহু পরিকল্পনা থাকে, বাস্তবায়িত হয় না অনেক কিছু। এ ক্ষেত্রে যেন তা না হয়, অন্তত মূল জিনিসগুলো যেন বাস্তবায়ন করা হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
লেখক : সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক অধ্যাপক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়