লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে সুসম্পর্কের সূত্র ধরে বাসা থেকে চেক চুরির মাধ্যমে একটি দরিদ্র পরিবারকে হয়রানির অভিযোগ ওঠেছে নাছিমা আক্তার নামে এক নারীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ ওঠেছে ওই নারী তার প্রতিবেশী নয়ন আক্তারের বাসা থেকে সাক্ষরিত অলিখিত চেক চুরি করে ছয় লাখ টাকা বসিয়ে আদালতে চেক ডিজঅনারের মামলা করে নয়ন আক্তারকে হয়রানি করছেন।
শুক্রবার সকালে উপজেলার করইতলা বাজারে একটি পত্রিকা অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগী নয়ন আক্তারের পরিবার এসব অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে নয়ন আক্তার ছাড়াও তার মামা মো. ইসমাইল হোসেন ও বড় বোন টুম্পা আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপজেলার চরলরেন্স এলাকার মো. ইব্রাহীমের স্ত্রী নয়ন আক্তার জানান, একে অপরের বাসায় নিয়মিতভাবে আসা-যাওয়ার মাধ্যমে প্রতিবেশী মো. জাহাঙ্গীরের স্ত্রী নাছিমা আক্তারের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণে প্রয়োজন হলে তারা একে অপরের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় টাকা-পয়সা ধারও নিতেন।
নয়ন আক্তার জানান, তার স্বামী মো. ইব্রাহীম এক বছর আগে লক্ষ্মীপুরের একটি শো-রুম থেকে মাসিক কিস্তিতে সিএনজিচালিত একটি অটোরিক্সা কিনেন। নিয়মানুযায়ী জামিনদার হিসেবে তিনি শো-রুম মালিকের নিকট নিজ নামীয় চরলরেন্স সোনালী ব্যংক শাখার (হিসাব নম্বর-৩৯০৪১০০০১৩২৮৭) দু’টি সাক্ষরিত ব্ল্যাংক চেকের পাতা (০০০১৩২৮৭-৩২৭৫৫৯২) ও সাক্ষরিত একটি অলিখিত স্ট্যাম্প জমা দেন। যেখানে তারিখ ও টাকার পরিমাণ উল্লেখ ছিল না। এরই মধ্যে অটোরিক্সার কিস্তি পরিশোধ হয়ে গেলে শো-রুম থেকে ফেরৎ দেওয়া চেকের পাতা ও স্ট্যাম্প এনে তিনি ঘরে রাখেন।
এ সুযোগে তার অজান্তে নাছিমা কোনো এক সময় ঘর থেকে ওই চেকের পাতা দু’টি ও স্ট্যাম্পটি চুরি করে নিয়ে যায়। এরই মধ্যে হঠাৎ করে টাকা ধার নেওয়াকে কেন্দ্র করে তাদের দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই ঝগড়াকে কেন্দ্র করে নাছিমা চুরি করে নেওয়া চেক দু’টির মধ্যে একটিতে ছয় লাখ টাকার অংক বসিয়ে আদালতে চেক ডিজঅনারের ‘মিথ্যা’ মামলা দায়ের করেন। ওই ‘মিথ্যা’ মামলা চালাতে গিয়ে তিনি এখন সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন। তাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও সুবিচারের দাবি তার।
এদিকে এ চেক ডিজঅনার মামলার দুই নম্বর সাক্ষী একই এলাকার মৃত আলী হোসেনের ছেলে মো. হেলাল জানান, মামলায় কীভাবে সাক্ষী হয়েছেন তা তিনি নিজেই জানেন না। মামলা হওয়ার পর তিনি বিষয়টি জানতে পারেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নাছিমা আক্তার জানান, নয়ন আক্তার দু’টি চেক জামানত হিসেবে জমা দিয়ে তার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছেন। ওই টাকা পরিশোধ না করায় একটি চেক দিয়ে তিনি মামলাটি দায়ের করেন। চেক চুরি হয়েছে বলে নয়ন আক্তারের যে অভিযোগ তা ভিত্তিহীন।