রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীর পানি কমে গেলে ভাঙনের মাত্রা বেড়ে যায়। প্রতিদিন ফসলি জমিসহ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
গৃহহীন হয়ে পড়ছে হাজার পরিবার। এত কষ্টের পরও তিস্তা তীরবর্তী মানুষেরা এখন আর ত্রাণ চায় না। তারা চায় তিস্তা নদীকে নিয়ে সরকার যে মহাপরিকল্পনা নিয়েছেন তা দ্রুত বাস্তবায়ন হোক। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে তিস্তা নদীকে ঘিরে সকল সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করছেন তিস্তাপাড়ের লোকজন।
সরজমিনে দেখা গেছে, চলতি তিস্তা নদীর বন্যায় গঙ্গাচড়া উপজেলায় ভাঙনের শিকার হয়ে এক হাজারের বেশি পরিবার। ফসলি জমি , ঘরবাড়ি, রাস্তা-ঘাট, সেতু, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে তিস্তা পাড়ের মানুষ। অনেকেই এক বছরেই দুই-তিন বার তাদের বসতবাড়ি নদী ভাঙনের কারণে সড়িয়ে নিয়ে গেছেন।
ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়ে অতিকষ্টে জীবন যাপন করছেন। অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চলে গিয়ে দিনমজুরির কাজ করছেন। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। গৃহহীন পরিবারগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে ।
তিস্তাপাড়ের ওই এলাকায় লোকজন বলেন,আমরা ওইসব ত্রাণ চাই না। আমরা চাই তিস্তা নদীকে ঘিরে সরকার যে মহাপরিকল্পনা নিয়েছে, তা দ্রুত বাস্তবায়ন হোক। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে আমাদের ভাগ্য আমরাই পরিবর্তন করতে পারবো।
মর্নেয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান বলেন,দুই শতাধিক পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। এতে প্রায় আধা কিলোমিটার ফসলি জমিও নদীগর্ভে চলে গেছে। তিস্তাপাড়ের মানুষ এখন আর ত্রাণ চায় না। তারা চায় তিস্তা নদীকে নিয়ে সরকার যে মহাপরিকল্পনা নিয়েছেন, তা দ্রুত বাস্তবায়ন চায়। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে তিস্তা নদীকে ঘিরে সকল সমস্যার সমাধান হবে- এমনটি মনে করছেন তিস্তাপাড়ের লোকজন।
কোলকোন্দ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বলেন,তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে একদিকে যেমন নদী ভাঙন কমে যাবে, অন্যদিকে হাজার হাজার একর ফসলি জমি বের হবে। এতে ওই এলাকার লোকজনের কৃষিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
উপজেলার লক্ষিটারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী জানান, তার ইউনিয়নের শতাধিক পরিবার তিস্তা নদীর ভাঙনের মুখে। ইতোমধ্যে অসংখ্য বসতবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ছাড়া তিস্তা নদীর ভাঙন রোধ করা সম্ভব নয়।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না বলেন, আমি নদী ভাঙন কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছি। যারা গৃহহীন হয়ে পড়েছে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে।