জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষকদের মধ্য থেকেই উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এছাড়াও বাইরে থেকে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক দিয়ে প্রবেশ করতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ভাস্কর্য চত্বরের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে ভাস্কর্য চত্বরেই সমাবেশ করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এসময় শাকিল আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন,‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বাইরে থেকে ভিসি হয়ে যারা এসেছে তারা শুধু ভিসি ভবন আর অডিটোরিয়ামে আসা-যাওয়া করছেন, তারা আশপাশে তাকায়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কখনো চায় না ঢাকার মধ্যে আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় মাথাচাড়া দিয়ে উঠুক, তাই তারা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে কেরানীগঞ্জে পাঠাতে চায়, তাই তারা বলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস কিন্তু আমরা বলতে চাই কেরানীগঞ্জে জগন্নাথের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস।’
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, ‘১৭৫৭ সাল থেকে ব্রিটিশরা যেভাবে ভারতবর্ষকে শোষণ করে গেছে, ১৯৪৭ সাল থেকে পশ্চিম পাকিস্তান যেমন পূর্ব পাকিস্তানকে শোষণ করে গেছে তেমনিভাবে ২০০৫ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে শোষণ করে গেছে।
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো দীর্ঘদিন কর্মরত কোনো শিক্ষককে ভিসি হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেনি। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে থেকে ভিসি চাই।’
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, ‘এটি আমাদের দাবি নয়, অধিকার। ২০ বছর ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বানিয়ে রাখা হয়েছে। এখন থেকে যদি জবি থেকে ভিসি নিয়োগ দেওয়া না হয় তাহলে এই ক্যাম্পাসের গেট বন্ধ থাকবে৷ ভিসিকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।’
ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন বলেন, ‘জবি থেকে উপাচার্য নিয়োগ হলে তিনি সামগ্রিক বিষয়টি বুঝবেন। কিন্তু বাইরে থেকে আসলে তিন মাস লাগে শুধু পরিবেশ বুঝতে বুঝতে। আর তার মধ্যেই তিনি একটা বলয়ের মধ্যে ঢুকে যান। তাই আমরা জবি থেকেই ভিসি চাই, তাহলে তিনি সামগ্রিক বিষয় বুঝবেন, আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পালস বুঝবেন।’
সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, ‘জবি থেকে ভিসি হলে তাকে দায়িত্ব পালন শেষে বিভাগের ক্লাস রুমে ফিরতেই হবে। তাই তিনি এমন কিছুই করবেন না যাতে তাকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়।’