বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১ ফাল্গুন ১৪৩১
বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ট্রাম্পের শপথের পর বাংলাদেশে যেসব পরিবর্তন আসতে পারে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫, ২:৩০ PM
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত রাতে (বাংলাদেশ সময়) শপথ গ্রহণ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কর্মকাণ্ড বিশ্বব্যাপী মনোযোগের কারণ- যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো সিদ্ধান্ত সবার ওপরে প্রভাব ফেলে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের মতো দ্বিতীয় মেয়াদেও আশা করা হচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজস্বভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু নীতির পরিবর্তন হতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। 

তাদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন, নাগরিক অধিকার ও উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তিত নীতির প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারণীতেও। এ বিষয়ে সাবেক একজন কূটনীতিক বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন ব্যবসায়ী। স্বভাবতই ব্যবসায়িক মনোভাবের কারণে তিনি কখনই পেশাদার রাজনীতিদের মতো আচরণ করবেন না।

জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য বাঁচা-মরার প্রশ্ন। বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় বাংলাদেশ। বিশ্বের সবচেয়ে বড় শক্তি যদি জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্ব না দেয়, তবে বাংলাদেশসহ অনেক দেশ বড় ধরনের ধাক্কা খেতে পারে বলে তিনি জানান।

নতুন রাষ্ট্রদূত
গত বছরের প্রথম দিকে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ঢাকা ত্যাগ করেন। এরপর মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র তাদের নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে চীনে দায়িত্বরত মিশন উপপ্রধান ডেভিড মিলির নাম ঘোষণা করে। যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে ডেভিড মিলির ঢাকা আসার সিদ্ধান্ত বদল করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের একটি কূটনৈতিক সূত্র জানায় যে ডেভিড মিলির বদলে নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগের বিষয়টি ঢাকাকে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র একজন অভিজ্ঞ কূটনীতিককে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত করে সম্প্রতি ঢাকায় পাঠিয়েছে। উল্লেখ্য, চলতি জানুয়ারিতে মার্কিন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন ঢাকায় দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ
বাংলাদেশে নতুন মার্কিন বিনিয়োগ আসা এবং বাণিজ্য বাড়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। এ বিষয়ে সাবেক একজন কূটনীতিক বলেন, বিনিয়োগের পূর্বশর্ত হচ্ছে স্থিতিশীল পরিবেশ, যেটি বাংলাদেশে এখন সেভাবে বিরাজ করছে না। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগের পরিবেশ কিছুটা হলেও ব্যাহত হচ্ছে।

যারা বিনিয়োগ করেছেন, তারা কম বিনিয়োগ এবং সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, এমনকি নতুন রাজনৈতিক সরকার আসার পরেও সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীরা অন্তত কিছু দিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন।

উন্নয়ন সহযোগিতা
প্রতি বছর বাংলাদেশকে উন্নয়ন সহযোগিতা হিসেবে প্রায় ২০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এই তহবিল বিভিন্ন ধরনের কোমল বিষয়, যেমন- স্বাস্থ্য, সুশাসনসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য ব্যয় করা হয়। নতুন প্রেসিডেন্টের মনোভাব থেকে ধারণা করা যায়, এ ধরনের খরচ কমাতে চাইবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এ বিষয়ে আরেকজন সাবেক কূটনীতিক বলেন, ব্যবসায়িক মনোভাবের কারণে রাষ্ট্রীয় সম্পর্কে লেনদেনভিত্তিক সহযোগিতার প্রতি বেশি মনোযোগী হতে পারেন ট্রাম্প। তবে উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে মার্কিন অর্থ আগামী দিনে কমে যেতে পারে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে অর্থ ব্যয় করে, সেটিও কমে আসতে পারে।

নাগরিক অধিকার
যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্র্যাট সরকারের আমলে নাগরিক অধিকার, যেমন- গণতন্ত্র, সুশাসন, মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ অন্যান্য বিষয় অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিগত ট্রাম্প সরকারের আমলে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা কমে আসে। কারণ তার আমলে মানবাধিকারের বিষয়গুলো তেমন একটা গুরুত্ব পায়নি। সাবেক কূটনীতিক বলেন, নাগরিক অধিকারের বিষয়গুলো রিপাবলিকান দল তুলনামূলক কম গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে এই গুরুত্ব আরও কম।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







সোস্যাল নেটওয়ার্ক

  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত