শনিবার ১৪ জুন ২০২৫ ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
শনিবার ১৪ জুন ২০২৫
এলডিসি-উত্তর সময়ের জন্য ডেনিম শিল্পের প্রস্তুতির ওপর গুরুত্বারোপ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ৭:৪৩ PM আপডেট: ১২.০৫.২০২৫ ৯:৪৫ PM
বিশ্বজুড়ে শুল্ক অস্থিরতা ও বাণিজ্যিক উত্তেজনার মাঝেও বাংলাদেশ তার তৈরি পোশাক রপ্তানিতে দৃঢ় অবস্থান বজায় রেখেছে। এই প্রতিকূল সময়ে শিল্পের টেকসই উন্নয়ন ও উদ্ভাবনকে ভবিষ্যতের প্রধান ভিত্তি হিসেবে দেখছেন শিল্প উদ্যোক্তা ও বিশেষজ্ঞরা।

রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় আজ (সোমবার) থেকে শুরু হওয়া  দুইদিনব্যাপী বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোতে অংশগ্রহণকারী শিল্প বিশেষজ্ঞ ও উদ্যোক্তারা এমন অভিমত ব্যক্ত করেন। দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনে বিশ্বের ১৩টি দেশের ৫৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে - বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, চীন, তুরস্ক, স্পেন, ইতালি, ভিয়েতনাম, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো ১৮তম সমাবেশ।

বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন,“২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে ২৬.৬৪% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বেশি। একই সময়ে ভারতের প্রবৃদ্ধি ২৪.০৪ শতাংশ, পাকিস্তানের ১৭.৪৯ শতাংশ , ভিয়েতনামের ১৩.৯৬ শতাংশ এবং চীনের ৪.১৮ শতাংশ। আমাদের এ প্রবৃদ্ধি এমন এক সময় যখন ট্রাম্প প্রশাসন বৈশ্বিকভাবে উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে। অর্থাৎ অস্থির আন্তর্জাতিক বাজার ও শুল্ক নীতির মাঝেও বাংলাদেশ তার প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। আমার মতে, বাণিজ্য আলোচনার টেবিলে আমাদের শক্তি হবে আমাদের শিল্পের দক্ষতা উন্নয়ন, স্থায়িত্ব ও উদ্ভাবনে অগ্রগতি। কারণ আমাদের যেমন বাণিজ্য অংশীদারদের প্রয়োজন, তেমনি তাদের ভোক্তারাদেরও আমাদেরকে প্রয়োজন।

তিনি আরও রলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় বাজারে ডেনিম রপ্তানিতে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। এলডিসি ভুক্ত হওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নে ‘এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ)’ এবং ‘জেনারেলাইজড স্কিম অব প্রেফারেন্স (জিএসপি) এর আওতায় শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার থাকলেও, ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাওয়ার পর তা অব্যাহত থাকবে না। যদি বাংলাদেশ জিএসপি প্লাস সুবিধা অর্জনে ব্যর্থ হয়, তবে ২০২৯ সাল থেকে ইউরোপে শুল্কমুক্ত রপ্তানির সুবিধা হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে—যেখানে বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানির ৫০.১৫% যায়।

মোস্তাফিজ উদ্দিন আরও বলেন, “গত ডেনিম এক্সপোতে এলডিসি উত্তরণ নিয়ে প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের এক্সপোতে সকল আলোচনা দক্ষতা, উদ্ভাবন ও প্রস্তুতির বিষয়টি মাথায় রেখে আয়োজন করা হয়েছে। এবারের আয়োজনের মূল বার্তা হলো— পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়নের দিকে অগ্রসর হওয়া, যার মাধ্যমে ২০২৯ এবং পরবর্তী সময়ের জন্য শিল্পকে প্রস্তুত করা হবে।”

দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনে অনুষ্ঠিত দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। “ওয়াশিং প্রক্রিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের ডেনিম শিল্পের অগ্রগতি” শীর্ষক আলোচনা প্রথম দিন অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া, স্কয়ার ডেনিমস লিমিটেড-এর গার্মেন্ট ইউনিটের অপারেশন প্রধান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ডেনিমের উপর একটি লেখা উপস্থাপন করেন।

দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশি ডেনিম ট্রেসেবিলিটির উপর একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণকারী বিশিষ্ট বক্তাদের মধ্যে থাকবেন: আব্দুস সামাদ, পরিচালক, ওয়েল অফ ওয়াশিং, আরিফ লাভু, সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর, রুহরোজ আরবিটি লিমিটেড, জুলি ডেভিস, জিএমু প্রসেসিং ইনোভেশন ও এডুকেশন এক্সটেনশন, দ্য উলমার্ক কোম্পানি, কামাল উদ্দিন মিয়া, সিওও (ওয়াশিং), বিটপী গ্রুপ; মারবো ভলপি, ইউরোপ ও আফ্রিকার বিক্রয় প্রধান, ব্লুসাইন টেকনোলজিস এজি, মো. ফরহাদ হোসেন, স্বত্বাধিকারী, পিওর কেমিক্যালস, রাকিব ইমতিয়াজ, বিজনেস ম্যানেজার, এলসি ওয়াইকিকি; রেজা-ই-রাব্বি, প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা, ভার্টেক্স ওয়্যার লিমিটেড, এবং সোহেল রানা, সিইও, ডিজাইনার ফ্যাশন লিমিটেড ও ডিজাইনার ওয়াশ লিমিটেড।

এক্সপোর আকর্ষণীয় অংশ হিসেবে রয়েছে একটি ‘ফ্যাশন ট্রেন্ড জোন’ যেখানে বাংলাদেশে উদ্ভাবিত উন্নতমানের ডেনিম ও বিশেষ কাপড় প্রদর্শন করা হচ্ছে, যা দেশের প্রযুক্তিগত সক্ষমতার একটি উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত