এনসিপির নওগাঁ জেলা সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির ২৩নং সদস্য করা হয়েছে গণঅধিকার পরিষদের বহিষ্কৃত নেতা গোলাম রাব্বানী নামে এক ব্যক্তিকে। এরপর শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
গত বৃহস্পতিবার রাতে এনসিপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৩৫ সদস্যের তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটিতে প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মনিরা শারমিনকে।
সদ্যঘোষিত কমিটিতে জায়গা পাওয়া গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে গণঅধিকার পরিষদ থেকে বহিষ্কারের অভিযোগ উঠেছে। আর এই কারণে সদ্য ঘোষিত এনসিপির কমিটিতে স্থান পাকাপোক্ত করতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিতর্ক ওঠা গোলাম রাব্বানী এমন অভিযোগ গণঅধিকার পরিষদের একাধিক নেতার।
তবে গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় নওগাঁ শহরের একটি রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে বহিষ্কারের বিষয়টি অস্বীকার করে নিজে থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে দাবি করেন গোলাম রাব্বানী।
তিনি বলেন, ‘আমি ২০২১ সাল থেকে গণ অধিকার পরিষদের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এটাই আমার প্রথম রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম। কিন্তু দলটির অভ্যন্তরীণ অগণতান্ত্রিক আচরণ, চাপ প্রয়োগ এবং নেতিবাচক রাজনীতির কারণে আমি গণঅধিকার পরিষদ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে দাঁড়িয়েছি।’
গোলাম রাব্বানী দাবি করেন, যেহেতু আমি একজন ব্যবসায়ী, বিভিন্ন সময় আমাকে চাপে ফেলে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং অনুদান দিতে বাধ্য করা হতো। তবে আমি কখনোই আওয়ামী লীগের সদস্য বা দায়িত্বশীল পদে ছিলাম না।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা খন্দকার তারিকুল ইসলাম দীপুর মাধ্যমে পরিচিত হয় জেলা সংগঠক দেওয়ান মাহবুব আল হাসান সোহাগ ভাইয়ের সঙ্গে। তার নেতৃত্ব এবং তরুণদের নিয়ে নতুন রাজনৈতিক ভাবনার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে আমি, সুজন মণ্ডল ও জিয়াউর রহমান মিলে এনসিপিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।
এর আগে, গত ৫ জুন তাকে গণঅধিকার পরিষদের নওগাঁ জেলা শাখার আহ্বায়ক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। গণঅধিকার পরিষদের দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামানের স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার কারণে গণঅধিকার পরিষদের নওগাঁ জেলার আহ্বায়ক মো. গোলাম রাব্বানীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
জানা গেছে, গোলাম রাব্বানী নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার আবাদপুকুর এলাকার মৃত আজিজার রহমানের ছেলে। ২০২৪ সালে মে মাসে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপের চেয়ারম্যান নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রতীকে নির্বাচন করেন গোলাম রাব্বানী। সেই নির্বাচনে দুই হাজার ৭২৪ ভোট পেয়ে জামানত হারান তিনি। নির্বাচনের সময় একাধিক পত্রিকায় গোলাম রাব্বানীর পক্ষে ভোট চেয়ে নিউজ প্রকাশ করা হয়েছিল। সেখানে তুলে ধরা হয়েছিল গোলাম রাব্বানীর পরিচয় ও পারিবারিক ইতিহাস। কখনো তাকে রাণীনগর উপজেলা শাখা আওয়ামী লীগের সদস্য আবার কখনও সমর্থক পরিচয় দিয়ে নিউজ প্রকাশ করা হয়। এছাড়া তুলে ধরা হয় তার পরিবারের আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কের ফিরিস্তি।