বাগমারার তাহেরপুরে ৯ বছরের এক বাকপ্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল গভীর রাতে শিশুটিকে গুরুতর অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।
স্বজনরা বলছেন, শিশুটিকে নেশাদ্রব্য খাইয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার শিশুটি এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
হাসপাতালের মুখপাত্র চিকিৎসক শঙ্কর কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘শিশুটিকে ওসিসিতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার শারীরিক অবস্থা খুবই নাজুক। আমরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি।’
হাসপাতালের ওসিসির সামনে শিশুটির চাচা জানান, শিশুটির বাবা তার বড় ভাই। পাঁচ বছর আগে দাম্পত্য কলহের জেরে তার ভাইয়ের সংসার ভেঙে যায়। এরপর ভাই আরেকটি বিয়ে করেন। বিয়ের পর ভাই তাহেরপুর ছেড়ে পার্শ্ববর্তী পুঠিয়া উপজেলায় বসবাস শুরু করেন। ফলে শিশুটি একা হয়ে পড়ে। চার বছর বয়স থেকে ভাতিজি তাহেরপুরে থেকে যায়। এরপর থেকে শিশুটিকে তারা বাড়িতে রাখার চেষ্টা করতেন। কিন্তু সে কোনোভাবেই বাড়িতে থাকতো না। তাহেরপুর বাজারে ঘুরে বেড়াতো। শিশুটি প্রতিদিন বিকালে ফুল সংগ্রহ করে বাজারে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতো। কোনও কোনও সময় মানুষের বারান্দায় বা সিএনজি স্ট্যান্ডে ঘুমিয়ে পড়তো।
তিনি আরও জানান, সোমবার দুপুরে শিশুটি বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর রাত ১০টা হয়ে গেলেও ফেরেনি। ফিরে না আসায় তিনি খোঁজ শুরু করেন। একপর্যায়ে তাহেরপুর বাজারের স্থানীয়রা শিশুটিকে কলেজ গেটের পাশে বাগানের মধ্যে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখেন। এ সময় তার রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। অচেতন অবস্থায় ছিল। তার মুখ দিয়ে মদজাতীয় নেশাদ্রব্যের দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। এরপর তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক তাকে রামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুটিকে বাগমারা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে রামেক হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠানো হয়েছে। শিশুটি বর্তমানে ভালো আছে। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। রক্তমাখা পোশাকসহ আলামত সংগ্রহ করেছি। শিশুটি তাহেরপুর বাজারে ঘুরে বেড়াতো। এ সুযোগে বখাটে কোনও যুবক ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণের আগে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অজ্ঞান করা হয়।’