সার্কভুক্ত দেশগুলোর অংশগ্রহণে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় শুরু হচ্ছে চার দিনব্যাপী ‘সাউথ এশিয়া ট্রেড ফেয়ার-২০২৫’।
আগামী বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় মেলার উদ্বোধন করবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এসসিসিআই) আয়োজিত এ মেলার সহযোগিতায় রয়েছে এফবিসিসিআই, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।
মেলায় টেক্সটাইল ও ফ্যাশন পণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও কৃষিপণ্য, হস্তশিল্প, জেমস ও জুয়েলারি পণ্য, ভোগ্যপণ্য, ইলেকট্রনিক্সসহ বৈচিত্র্যময় পণ্যের সমাহার থাকবে। যা শুধু বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে নয়, অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকেও বিশ্বের সামনে তুলে ধরবে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই ভবনে মেলা উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এফবিসিসিআই মহাসচিব মো. আলমগীর। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বিস্তারিত বর্ণনা করেন এফবিসিসিআই হেড অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স মো. জাফর ইকবাল এনডিসি ও সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এসসিসিআই) মহাসচিব জুলফিকার আলী ভাট।
লিখিত বক্তব্যে এফবিসিসিআই মহাসচিব মো. আলমগীর বলেন, ‘২০২৪ সালে পাকিস্তানের লাহোর এবং শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে এই ফেয়ারের সফল আয়োজন হয়েছিল। কলম্বোতে উদ্বোধন করেছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী দিনেশ গুনাওয়ার্দেনা, এবং উপস্থিত ছিলেন সার্ক মহাসচিব অ্যাক্সেলেন্সি গোলাম সারওয়ার। সেই ধারাবাহিকতায় ঢাকার এই আয়োজন হবে আরও বড়, আরও ফলপ্রসূ এবং আরও ঐতিহাসিক হবে।’
তিনি বলেন, ‘সাউথ এশিয়া ট্রেড ফেয়ার ২০২৫ কেবল একটি প্রদর্শনী নয়, এটি হবে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্মাণের এক মাইলফলক। এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা আমাদের আঞ্চলিক সহযোগিতাকে আরও দৃঢ় করব, নতুন বাণিজ্য সুযোগ তৈরি করব এবং সমৃদ্ধির পথে একসঙ্গে এগিয়ে যাব।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মেলা উপলক্ষ্যে ভারতকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে শেষ মুহূর্তে এসে ভারত জানিয়েছে, তারা এই মেলায় অংশ নেবে না। নেপালেরও অংশ নেওয়ার কথা ছিল, তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশটির কোনো স্টল মেলায় অংশ নিচ্ছে না। তবে মেলায় নেপালের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। আর মালদ্বীপ ও ভুটানের কোনো স্টল মেলায় অংশ না নিলেও তাদের প্রতিনিধিরা মেলায় অংশ নেবেন।’
সার্ক চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির মহাসচিব জুলফিকার আলী ভাট বলেন, মেলায় বিটুবি ম্যাচ-মেকিং সেশন, বিজনেস নেটওয়ার্কিং সেশন প্রভৃতি কর্মসূচি সার্কভুক্ত দেশসমূহের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি এবং ব্যবসা বাণিজ্য সংক্রান্ত জ্ঞান আদান প্রদানের সুযোগও তৈরি করবে। যা আঞ্চলিক বাণিজ্যের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরও বলেন, আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের যথেষ্ট সুযোগ থাকলেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহ এক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। এই মেলার মাধ্যমে দেশসমূহের মধ্যে যোগাযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে, যেটা খুবই জরুরি। এবারের মেলায় বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলংকা ও আফগানিস্তানের শতাধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এফবিসিসিআই'র হেড অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স মো. জাফর ইকবাল (এনডিসি) বলেন ,দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর শতাধিক প্রতিষ্ঠান নিজেদের পণ্য ও সেবা নিয়ে মেলায় অংশগ্রহণ করবে। মেলায় পণ্য প্রদর্শনের পাশাপাশি বিজনেস নেটওয়ার্কিং, বিটুবি সেশনসহ বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন সেশন এবং আলোচনায় যোগদানের সুযোগ পাবেন অংশগ্রহণকারীরা। মেলাটি ২১ সেপ্টেম্বর চলবে । প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।