রাজধানীজুড়ে ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনে ধারাবাহিক অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আতঙ্কে জনজীবন প্রায় থমকে গেছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল ও যানবাহনের সংখ্যা স্বাভাবিক দিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর একাধিক এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে। রাতজুড়ে বিভিন্ন স্থানে সন্দেহভাজনদের তল্লাশি ও নজরদারি কার্যক্রমও চালানো হয়েছে।
সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: বিক্ষিপ্তভাবে সংঘটিত ককটেল বিস্ফোরণ ও আগুনের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্তে অভিযান অব্যাহত আছে এবং রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখ ও স্থাপনায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তিন দিনে পুড়েছে চারটি বাস ও একটি প্রাইভেটকার: সোমবার গভীর রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেট, উত্তরা ও মিরপুরের বিভিন্ন স্থানে চারটি বাস এবং একটি প্রাইভেটকারে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ এসব ঘটনার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার দুপুরে মিরপুর ১ নম্বর সনি সিনেমা হলের সামনে ‘শতাব্দী’ পরিবহনের একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
এর আগের রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকায় রাজধানী পরিবহনের একটি বাসে এবং রাত ২টা ৮ মিনিটে একই এলাকার ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে রাইদা পরিবহনের আরেকটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
রাত ২টা ৩৫ মিনিটে বসুন্ধরা গেট সংলগ্ন ১০০ ফুট রোডে একটি প্রাইভেটকারে আগুন লাগে এবং সর্বশেষ ভোর ৪টার দিকে উত্তরার সোনারগাঁও জনপদ এলাকায় রাইদা পরিবহনের আরেকটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
ককটেল বিস্ফোরণে ভীত নগরবাসী: রাজধানীর ধানমন্ডি ১১/এ এলাকায় মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
এছাড়া সোমবার ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, আগারগাঁও, মিরপুর ও বাংলামোটর এলাকাতেও একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে।
যদিও এসব ঘটনায় কোনো প্রাণহানি ঘটেনি, তবুও নগরবাসীর মধ্যে ভয় ও অনিশ্চয়তা বাড়ছে।
সাধারণ মানুষ অপ্রয়োজনে বাইরে বের হতে বিরত থাকছেন, আর গণপরিবহনেও যাত্রী সংখ্যা ছিল উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীতে নাশকতা প্রতিরোধে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সন্দেহজনক গতিবিধি দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে নিকটস্থ থানায় জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।