চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, খেজুরসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সকল চেম্বার এবং অ্যাসোসিয়েশনকে দায়িত্বশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এর প্রশাসক মোঃ আবদুর রহিম খান।
বুধবার এফবিসিসিআই -এর মতিঝিল কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সাথে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই -এর সাবেক পরিচালকবৃন্দ, বিভিন্ন চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন বাজার সমিতির নেতৃবৃন্দ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, টিসিবি, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মোঃ আবদুর রহিম খান বলেন, সরকারের একার পক্ষে নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সরকার, বেসরকারি খাত এবং গণমাধ্যমকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
সভার শুরুতে নিত্যপণ্যের বাজার সম্পর্কে একটি তথ্যবহুল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন এফবিসিসিআই’র মহাসচিব মোঃ আলমগীর। প্রতিবেদনে বিভিন্ন সময় দেশের বাজারে দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণ, নিয়ন্ত্রণের উপায়সহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়।
সভায় উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে চিনি ও ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা জানান, মিল মালিকরা সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পারলে আগামী রমজানে এসব পণ্যের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।
মিল মালিকদের প্রতিনিধিরা জানান, এ বছর চিনির বাজার অন্যান্য বছরের তুলনায় ভালো। চিনির দাম কম আন্তর্জাতিক বাজারেও। তবে প্রতিবছর শীতকালে কারখানায় গ্যাসের সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। এমন হলে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা জানান তারা।
এদিকে, ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের দাবি, বর্তমানে সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন এবং পামওয়েল। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে আগামী রমজানে তেলের দাম বৃদ্ধির সুযোগ নেই বলে জানান তারা।
অন্যদিকে, বাজার স্বাভাবিক রাখতে কিছু কিছু পণ্যের আমদানি শুল্ক পুনর্বিবেচনার কথাও জানান ব্যবসায়ীরা। এছাড়া, বেসরকারি খাতের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগেও ভোজ্যতেল আমদানির পরামর্শ দেন তারা।
রমজানকে সামনে রেখে প্রতিবছরই নিত্যপণ্যের বাজার তদারকি জোরদার করে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই অভিযানের নামে ব্যবসায়ীদের অযৌক্তিকভাবে হয়রানি করা হয়। এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণে এফবিসিসিআই প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ব্যবসায়ীরা।
এফবিসিসিআই -এর প্রশাসক মোঃ আবদুর রহিম খান জানান, সরকারি সংস্থাসমূহের অভিযানের উদ্দেশ্য হলো ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও সুরক্ষা প্রদান। কাউকে অযথা হয়রানি করা তাদের লক্ষ্য নয়। এ সময় ব্যবসায়ীদেরও সরকারের আইন-কানুন সঠিকভাবে অনুসরণ করে ব্যবসা করার আহ্বান জানান তিনি। সভায় উঠে আসা মূল্যবান পরামর্শ এবং মতামতসমূহ দ্রুত যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করা হবে বলে জানান এফবিসিসিআই‘র প্রশাসক।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই এর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স উইংয়ের প্রধান মোঃ জাফর ইকবাল এনডিসিসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।