সিলেট বিএনপির একসময়ের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী নেতা ছিলেন এম সাইফুর রহমান ও এম ইলিয়াস আলী। দুজনই নেতৃত্ব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় পর্যায়ে। সাইফুর রহমান ছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। দায়িত্ব পালন করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে। ছিলেন একাধিকবারের অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী।
আর ‘নিখোঁজে’র আগে ইলিয়াস আলী ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা সভাপতি। একসময় দুই নেতায় বিভক্ত ছিল সিলেট বিএনপি। দুজনের হাত ধরে তৈরি হয়েছে অনেক নেতা-কর্মী। সিলেটে দলীয় কোনো অনুষ্ঠান হলে পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার, ফেস্টুন সবকিছুতেই ব্যবহার করা হতো এ দুই নেতার ছবি। কিন্তু ১৯ নভেম্বর বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণে সিলেট নগরী সাজানো হলেও কোথাও নেই এ দুই নেতার ছবি। জ্যেষ্ঠ নেতারা মনে করেন বর্তমান প্রজন্মের নেতা-কর্মীরা দলে সাইফুর ও ইলিয়াসের অবদানের কথা জানেন না বলেই এ অবমূল্যায়ন।
বিভাগীয় গণসমাবেশ কেন্দ্র করে সমাবেশস্থল সরকারি আলিয়া মাদরাসা মাঠ এবং আশপাশের রাস্তাঘাটে এখন শোভা পাচ্ছে নানা রঙের বিশাল বিশাল ব্যানার, বিলবোর্ড ও ফেস্টুন। প্রচারমাধ্যমগুলোয় দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবির সঙ্গে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন নেতার ছবি শোভা পাচ্ছে। কেউ নিজে আবার কেউ নিজের পছন্দের নেতার পক্ষে এ বিলবোর্ড ও ব্যানার লাগিয়েছেন। শত শত নেতার ভিড়ে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি বিএনপি স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান এবং সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা সভাপতি এম ইলিয়াস আলীর ছবি।
সাইফুর রহমানের জীবদ্দশায় তাঁকে পুঁজি করে দলীয় পদপদবি ও নানা সুযোগ-সুবিধা যারা বাগিয়ে নিয়েছেন তাদের ব্যানার ও বিলবোর্ডেও দেখা যায়নি সাইফুরের ছবি। একইভাবে ইলিয়াস আলীকে যারা রাজনীতির ধ্যানজ্ঞান ভাবতেন তাদের কাছেও উপেক্ষিত দীর্ঘদিন ধরে ‘নিখোঁজ’ এই নেতা। সিলেট যেখানে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে সেখানে কোথাও নেই একসময়ের দাপুটে এই নেতা। সবাই যেন ভুলতে বসেছেন তাদের। এর মধ্যে কেবল ব্যতিক্রম হিসেবে দেখা গেছে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির নির্বাহী সদস্য আরিফুল হক চৌধুরীকে। সমাবেশস্থল সরকারি আলিয়া মাদরাসা মাঠ, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, রিকাবিবাজার, উপশহরসহ বিভিন্ন স্থানে লাগানো তাঁর ব্যানারে সাইফুর রহমান ও ইলিয়াস আলীর ছবি শোভা পাচ্ছে।
বাবু/জেএম