রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বলেছেন, দুর্নীতির কারণে টেকসই উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। তাই মাঠ প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা গড়ে তুলতে হবে। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ২০৩০-এর মধ্যেই বাংলাদেশ এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হবে। পাশাপাশি ২০৪১ সালের মধ্যে আধুনিক ও স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে।
ডিসিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা বিভিন্ন জেলায় সরকারের বহুমুখী কার্যক্রমের সমন্বয় ও তত্ত্বাবধানকারী হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্বপালনকালে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ যাতে না হয় তা নিশ্চিত করা অতীব জরুরি। আশা করি আপনারা কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব ও ক্ষমতার পার্থক্য সচেতনভাবে বজায় রাখবেন। আপনাদের পদবী জেলা প্রশাসক হলেও সেবক হিসেবে জনগণের দোরগোঁড়ায় সরকারি সেবা পৌঁছে দেবেন। জেলা প্রশাসনের কর্ণধার হিসেবে আপনাদের ওপর অর্পিত এ গুরুদায়িত্ব আরও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবেন—এ প্রত্যাশা করছি।
তিনি আরও বলেন, জনগণের সেবা দেওয়া আপনাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। এটাকে দয়া বা অনুগ্রহ মনে করার কিছু নেই। আপনারা সরকারি কর্মচারী হিসেবে যেমন ক্যারিয়ার প্লানিং করে থাকেন তেমনি কর্মক্ষেত্রে গিয়েও একটি প্লানিং করবেন। আর এই প্লানিংটা হবে আপনার দায়িত্ব পালনকালে জনকল্যাণে কী কী করতে পারেন তা ঠিক করা। অনেকেই চাকরি করেন কিন্তু আগের কর্মস্থল কয়জনকে মনে রাখে ভেবে দেখবেন। নিজে দুর্নীতিমুক্ত থাকবেন এবং অন্যরাও যাতে দুর্নীতির সুযোগ না পায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
আবদুল হামিদ বলেন, পরিবেশবান্ধব গ্রামোন্নয়নে আবাসন, শিক্ষা, কৃষি নির্ভর শিল্পের প্রসার, চিকিৎসা সেবা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানীয় জল ও পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থার মাধ্যমে উপজেলা সদরে এবং বর্ধিষ্ণু শিল্পকেন্দ্রগুলোকে আধুনিক শহর-উপশহর হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারি উদ্যোগের সঙ্গে বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয় ঘটাতে হবে।
আব্দুল হামিদ বলেন, আপনাদের মেধা ও দক্ষতা জনকল্যাণে ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে ব্যবহার করবেন। আমার বিশ্বাস, আপনারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে দেশাত্মবোধ একাগ্রতার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে যাবেন। উদ্ভাবনী চর্চা ও সেবামূলক কর্মপ্রয়াসের দ্বারা আপনারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথ পরিক্রমায় একটি উন্নত, আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবেন—এটাই প্রত্যাশা।
বাবু/এসআর