ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় প্রভাব পড়েছে ধান সংগ্রহে। খোলাবাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা সরকারের কাছে বিক্রি করতে চাইছেন না। লটারির বদলে উন্মুক্তভাবে ধান সংগ্রহের ঘোষণা দিয়েও কৃষকদের কাছ থেকে একেবারে সাড়া নেই বললেই চলে। বিক্রির জন্য অ্যাপসের মাধ্যমে নিবন্ধন করেও ধান দিতে আসছেন না কৃষকরা। এতে করে আমন ধান সংগ্রহের অভিযানে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। ২২১ মে. টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ৪০ দিনে ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৮ মে. টন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিজ খরচে সরকারি গুদামে ধান নিয়ে যাওয়া, ধানের ভালো মন্দ যাচাই বাছাইয়ের ঝামেলা ইত্যাদি কারণে স্থানীয় বাজারেই ধান বিক্রি করেছেন কৃষকরা। স্থানীয় বাজারে ধানের দাম বেশি পাওয়ায় সরকারি গুদামে ধান বিক্রিতে অনাগ্রহী কৃষকরা।
খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবছর আখাউড়ায় ২২১ মে. টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৮ টাকা কেজি ধরে প্রতি মণ ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১১২০ টাকা। একজন কৃষক সর্বোচ্চ ৩ মে. টন ধান বিক্রি করতে পারবেন। গত ২২ ডিসেম্বর ধান সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা। ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধান সংগ্রহ অভিযান চলবে।
কৃষি অফিস জানায়, আখাউড়ায় ৭ হাজার কৃষক রয়েছে এরমধ্যে ১ হাজার ১৪০ জন বড় কৃষক যারা রোপা আমন ধান চাষ করে তাদের তালিকা করা হয়। কিন্তু কৃষকরা বাইরে দাম বেশি পাওয়ায় সরকারি গুদাম ধান বিক্রি করতে আগ্রহী হয় না। কাজী মাঈনুদ্দিন বলেন, সরকারি খাদ্যগুদামে পরিষ্কার, ঝরঝরে ও শুকনা ধান দিতে হয়। এ জন্য ধান বেশি শুকাতে হয়। কিন্তু বাইরে কম শুকানো ধান বেশি দামে বিক্রি করা গেছে।
আরেক কৃষক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে গেলে পরিশ্রম বেশি। বাইরে কম শুকানো ধান সরকারি গুদামের চেয়ে বেশি দাম পাওয়া যায়। তাছাড়া গুদামে মাপ নিয়েও ঝামেলা করে।
উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা কাওছার সজীব বলেন, সরকার যে দর নির্ধারণ করে দিয়েছে তার চেয়ে বাইরে বেশি দামে ধান বিক্রি করতে পারছে কৃষকরা। এতে আমাদের ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। তবে সরকারের উদ্দেশ্যে কৃষকরা যাতে লাভবান হয়। সরকারি গুদামে ধান ক্রয় কম হলেও কৃষকরা লাভবান হচ্ছে এটাই বড় কথা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, রোপা আমন মৌসুমে ৫টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভা হতে ১ হাজার ১৪০ জন বড় কৃষকের তালিকা করা হয়। কিন্তু কৃষকরা বাজারে ভাল মূল্য পাওয়ায় ধান এবং চাল বিক্রি করেছে। বিশেষ করে আবহাওয়া ভালো থাকায় কৃষকরা অধিক লাভের আশায় ধান শুকিয়ে চাল করে চাল বিক্রি করেছে। যে কারণে তালিকাভূক্ত হয়ে তারা খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করেনি। কৃষকরা বাইরে ভালো দাম পাওয়ায় সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে আসছে না। তবে আমরা ধান সংগ্রহের চেষ্টা করছি।
বাবু/জেএম