সোমবার ২১ জুলাই ২০২৫ ৬ শ্রাবণ ১৪৩২
সোমবার ২১ জুলাই ২০২৫
আবারও উৎপাদনে যাচ্ছে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:২৫ PM

দীর্ঘ এক মাস বন্ধ থাকার পরে আবারও উৎপাদনে যাচ্ছে বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে কেন্দ্রটি উৎপাদনে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। অল্প সময়ের মধ্যেই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। এর আগে কয়লা সংকটের কারণে গেল  ১৪ জানুয়ারি উৎপাদন বন্ধ করেছিল কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।

তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, কয়লা সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ায় কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সন্ধ্যা নাগাত অথবা বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে। ডলার সংকটের কারণে কয়লা আমদানি করতে না পারায় ১৪ জানুয়ারি রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে কয়লা আমদানির চেষ্টা করছিল  বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কম্পানি লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) কর্তৃপক্ষ। বন্ধ হওয়ার ২৬ দিন পরে ইন্দোনেশিয়া থেকে ৩০ হাজার টন কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরে আসে বিদেশী জাহাজ। পরে এই কয়লা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা ইয়ার্ডে আনা হয়। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি ৫০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে আরও একটি জাহাজ মোংলা আসার কথা রয়েছে। কেন্দ্রটিতে কয়লা মজুদের সক্ষমতা রয়েছে তিন মাসের। নিয়ম অনুযায়ী এক মাসের কয়লা মজুদ রাখার বাধ্যবাধকতা থাকলেও ডলার সংকটে এত দিন কেন্দ্রটিতে কয়লার কোনো মজুদ ছিল না বলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে।

অন্যদিকে কয়লা ও ডলার সংকটের মধ্যেও আগামী ৩০ জুনের মধ্যে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলাচ্ছেন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) উপমহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম  বলেন, আমরা বন্ধ হওয়া প্রথম ইউনিট থেকে আবারও উৎপাদনে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। কয়লা আমদানিতে যে জটিলতা ছিল তা এখন কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। আশাকরি এখন থেকে নিয়মিত উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

আনোয়ারুল আজিম বলেন, আমাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট প্রতিদিন চালিয়ে রাখতে ৫ হাজার টন কয়লার প্রয়োজন হয়। সেই অনুযায়ী ৩০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা দিয়ে মাত্র ছয় দিন কেন্দ্রটির একটি ইউনিট চালানো যাবে। পরবর্তীতে ৫০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা  এলে তা দিয়ে কেন্দ্রটি আরো ১০ দিন চালানো যাবে। ইন্দোনেশিয়া থেকে একটি জাহাজ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জেটিতে ভিড়তে ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগে।

উল্লেখ, ২০১০ সালে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের উদ্যোগ নেয়। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসি লিঃ এর মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাঃ) লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) নামে কোম্পানি গঠিত হয়। এই কোম্পানির অধীনে ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল) নামে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান শুরু হয়। রমাপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গর্দ্দাশকাঠি মৌজায় ১ হাজার ৮‘শ ৩৪ একর জমি অধিগ্রহন শেষে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান শুরু হয়। ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরপরই শুরু হয় জমি ভরাট ও সড়ক নির্মাণের কাজ। প্রায় ৯ বছর বিশলা কর্মেযজ্ঞ শেষে বানিজ্যিকভাবে উৎপাদনে গেল প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে এবছরের ১১ জুলাই বয়লার স্টিম ব্লোয়িং স্থাপন করা হয়। এক মাস পরে ১৪ আগস্ট টারবাইন-এ স্টিম ডাম্পিং এবং একদিন পরে ১৫ আগস্ট জাতীয় গ্রীডের সাথে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ (ট্রান্সমিশন) শুরু করা হয়। পরে ১৭ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় গ্রীডে বানিজ্যিকভাবে যুক্ত হয় এখানের বিদ্যুৎ। কিন্তু কয়লা সংকটে ১৪ জানুয়ারি প্রথম ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।

-বাবু/এ.এস

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত