শিগগিরই মস্কো সফরে যাচ্ছেন চীনের শীর্ষ রাষ্ট্রদূত ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। রোববার আসন্ন এই সফর প্রসঙ্গে মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার ভাবে বলতে চাই, রাশিয়াকে কোনো প্রাণঘাতী অস্ত্র বা সামরিক সহায়তা দেওয়া চলবে না। এটা আমাদের রেড লাইন। চীন কিংবা অন্য কোনো রাষ্ট্র যদি রেড লাইন অতিক্রম করে, সেক্ষেত্রে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।’
সোমবার ব্লিনকেনের এই মন্তব্যের জবাব দিয়ে বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওয়াং ই বলেন, ‘চীন কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো পক্ষকেই কোনো প্রকার অস্ত্র বা যুদ্ধ সহায়তা দেয়নি; দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে তারা বিরতিহীনভাবে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়াতা দিয়েছে, এখনও দিয়ে যাচ্ছে।’
‘আন্তর্জাতিক বিশ্বে এখন সবাই জানে, কারা শান্তিপূর্ণভাবে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার সমস্যার সমাধান চাইছে আর কোনপক্ষ অস্ত্র-যুদ্ধ সহায়তা দিয়ে এই যুদ্ধকে জিইয়ে রাখছে।’
‘আমি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাব—নিজেদের কর্মকাণ্ডের দিকে মনযোগ দিন, ভুয়া তথ্য ছড়ানো এবং অন্যকে দোষারোপ করা বন্ধ করুন এবং সংলাপের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়ে কীভাবে এই যুদ্ধের নিষ্পত্তি করা যায়— সেই পথ খুঁজুন।’
শনিবার মিউনিখ সম্মেলনে যোগ দিতে জার্মানি গিয়েছিলেন ব্লিনকেন ও ওয়াং। সেখানে সম্মেলনের ফাঁকে একদফা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করেছেন তারা।
কিন্তু দুই দেশের কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকের মূল ইস্যু ছিল বেলুন এবং সংক্ষিপ্ত সেই বৈঠক ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ ছিল না।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিনের প্রেস সচিব ও মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করত শিগগিরই মস্কো সফরে আসছেন ওয়াং ই । তবে তিনি কবে আসছেন এবং কোন কোন ইস্যুতে সংলাপ হবে— সে সম্পর্কে ভেঙে কিছু বলেননি তিনি।
কূটনৈতিক একটি সূত্র জানিয়েছে, ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর বিশেষ সামরিক অভিযানের অবসান এবং রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার বিভিন্ন সমস্যা রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে চীনের বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েই আলোচনা হবে পুতিন ও ওয়াং ই’র মধ্যে।
ইউক্রেন ইস্যুতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং শুরু থেকেই পুতিনের পাশে আছেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে রাশিয়াকে বিশ্ব রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা।
কিন্তু তা যে পুরোপুরি সফল হয়নি, তার প্রধান কারণ— চীন সবসময় রাশিয়ার পাশে ছিল। গত সপ্তাহে বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওয়াং ই বলেছিলেন, ইউক্রেন ইস্যুতে চীন বরাবরই রাজনৈতিক সমঝোতার ভিত্তিতে যাবতীয় সংকট মোকাবিলার পক্ষপাতী।
বাবু/এসআর
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |