দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার বলতে কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলের ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে জেলা ও মহানগরী আমির সম্মেলনে নেতারা এ মন্তব্য করেন।
সম্মেলনে সরকারের মামলা-হামলা, জুলুম-নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের অভিযানের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। পরে আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই সরকারের আমলে মানুষের ভোটাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বিরোধীমতের কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দিয়ে একদলীয় ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করা হয়েছে। বিচার ব্যবস্থা ও আইনের শাসনকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে। মানুষের জানমাল, ইজ্জত-আব্রুর আজ কোনো নিরাপত্তা নেই। দেশে প্রতিনিয়ত গুম, খুন, হত্যা, ধর্ষণ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। সর্বত্রই একদলীয় বাকশালী স্বৈরশাসনের কর্তৃত্ব চলছে।
জামায়াতে ইসলামীর ‘জেলা ও মহানগরী আমির সম্মেলন’ মনে করে, বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন দিনের পর দিন বেগবান হচ্ছে। এই আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে মাঠে নেমেছে। কিন্তু আওয়ামী সরকার সংবিধান স্বীকৃত এ গণতান্ত্রিক আন্দোলন স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য সারা দেশে গণতন্ত্রকামী ও শান্তিপ্রিয় মানুষের ওপর মামলা-হামলা, জুলুম-নির্যাতন ও গণগ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে। সরকার শান্তিপ্রিয় মানুষের কণ্ঠরোধ করার জন্য নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। সরকারের কতিপয় অতি উৎসাহী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এসব শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলি ও হামলা চালিয়ে বিরোধীদলের শত শত নেতাকর্মীকে আহত করেছে এবং গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা করছে।
জামায়াতের দাবি, আওয়ামী সরকারের গত ১৪ বছরের শাসনামলে সারা দেশে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। শত শত নেতাকর্মীকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। জেল-জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী। অনেকে গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। ফ্যাসিবাদী এ সরকার মুখে গণতন্ত্র ও নির্বাচনের কথা বলে, প্রকৃতপক্ষে তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। আমরা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিতে চাই, মামলা-হামলা দিয়ে দেশের চলমান রাজনৈতিক কর্মসূচিকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না।
জামায়াতের ‘জেলা ও মহানগরী আমির সম্মেলন’ অবিলম্বে বায়বীয় মামলা-হামলা, জুলুম-নিপীড়ন, গুম, খুন, হত্যা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে এবং দেশবাসীকে সব জুলুমের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানায়।
-বাবু/এ.এস